তথ্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক ।। আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা তত্ত্ব নিয়ে ২০১৩ সালে প্রশ্ন তোলেন ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ (European Centre for Nuclear Research) বা CERN এর একদল গবেষক। আইনস্টাইনের আপেক্ষিক তত্ত্বের মূল ভিত্তি হল ‘আলোর বেগ সর্বাবস্থায় ধ্রুব’, অর্থাৎ জগতের ভরবাহী কোনো বস্তু আলোর গতিবেগ অতিক্রম করতে পারবে না। তবে CERN এর গবেষকেরা জানান, শত বছরের এই ধারণা আসলে ভুল। আলোর গতি সর্বোচ্চ নয়। ফলে নতুন করে দেখা দেয় প্রশ্ন। তারই ধারাবাহিকতায় একুশ শতকের পদার্থ বিজ্ঞান আজ ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে! কেননা আজই পরীক্ষা হতে যাচ্ছে এই তত্ত্ব পুরোপুরি সঠিক ছিল কিনা! হয়তোবা জট খুলতে যাচ্ছে আইনস্টাইনের সেই মহাকর্ষীয় তরঙ্গ রহস্যেরও। হয়তো এরই ফলে এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডকে নতুন করে জানা ও বোঝার পথ খুলে যাবে। গোটা বিশ্বের পদার্থবিদদের চোখ এখন সেদিকেই। ১৪০০ কোটি বছর আগে এই ব্রহ্মাণ্ডের জন্মের সময়ে যে বিস্ফোরণ হয়েছিল, সেখান থেকে উৎপন্ন তরঙ্গকেই মহাকর্ষীয় তরঙ্গ বলা হয়। গত সেপ্টেম্বর থেকে আমেরিকার ওয়াশিংটন স্টেটের হ্যানফোর্ড ও লুইজিয়ানার লিভিংস্টোনে, নির্ভুলভাবে মহাকর্ষীয় এই তরঙ্গের হদিশ পেতে সর্বাধুনিক উপায়ে গবেষণা চলছে। ব্যবহার করা হচ্ছে ‘লেসার ইন্টার ফেরোমিটার গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ অবজারভেটরি’র মতো দু’টি অত্যাধুনিক সন্ধানী যন্ত্র বা ‘অ্যাডভান্সড লাইগোডিটেক্টর’। যা দেখতে ইংরেজির ‘L’ অক্ষরের মতো। গত ক’মাস ধরেই শোনা যাচ্ছিল, এই প্রথম মহাকর্ষীয় তরঙ্গের সন্ধান পেয়েছে সেই অত্যাধুনিক যন্ত্রটি। যদিও, জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা একশো ভাগ নিশ্চিত না হওয়ায় তা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়নি। অবশেষে আজ গুরুত্বপূর্ণ সেই আবিস্কারের ঘোষণা হতে যাচ্ছে। আনুষ্ঠানিকভাবে যা বিশ্বের তিনটি স্থান-ওয়াশিংটন, পুনে আর ইতালি থেকে সরাসরি ঘোষণা করা হবে। তবে কী ঘোষণা হতে যাচ্ছে এ ব্যাপারে মুখ খোলেননি গবেষকেরা। শুধু বলেছেন, গত একশো বছরে এমন মহাকর্ষীয় তরঙ্গের সন্ধান মেলেনি। ১৯১৫ সালে আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতাবাদ প্রকাশ পেলেও এখন পর্যন্ত সরাসরি মহাকর্ষীয় তরঙ্গের হদিশ মেলেনি। ফলে এই ঘোষণাটিকে ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবেই দেখছেন বিজ্ঞানীরা।