গোপাল সিং, খোয়াই, ১৬ ফেব্রুয়ারী ।। খোয়াই জেলায় উচ্চতর বিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র-ছাত্রীদের আধুনিক প্রযুক্তির সাথে পরিচিত করতে এবং সেই প্রযুক্তি বিদ্যায় পারদর্শী করে তুলতে রাজ্য সরকার-এর লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যায়ে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বরাদ্দ হয় কম্পিউটার। কিন্তু বর্তমানে সেই অগণিত কম্পিউটারগুলি অবহেলায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে থাকতে স্বর্গলোক প্রাপ্তির পথে। কারন কম্পিউটারের একমাত্র এবং ঘাতক শত্রু হচ্ছে ডাষ্ট বা ধুলোবালি। আর উন্মুক্ত এবং পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে থাকতে কম্পিউটারগুলোর হার্ডওয়ার সেক্টর ডেমেজের পথে। তাছাড়া একসময় খোয়াইয়ের বিভিন্ন উচ্চ বিদ্যালয়গুলোতে কম্পিউটার প্রশিক্ষক ছিল। প্রশিক্ষকগন স্কুলগুলোতে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রশিক্ষিত করতে ক্লাশ নিতেন। কিন্তু দীর্ঘদিন যাবত স্কুলগুলোতে কম্পিউটার প্রশিক্ষক না থাকায় যত্নের অভাবে মূল্যবান কম্পিউটারগুলো মিউজিয়ামে রাখার পাত্র হয়ে উঠেছে।
রাজ্য সরকার প্রদত্ত লক্ষ-লক্ষ টাকার কম্পিউটারগুলো এত অবহেলার স্বীকার কেন? প্রশ্ন জনমনে। প্রশিক্ষক নেই বলে কি অযত্নে পড়ে থাকবে মূল্যবান কম্পিউটারগুলো? যত্ন, পরিচর্যা করার জন্য প্রশিক্ষনের প্রয়োজন নেই। শুধু ধূলোবালির হাত থেকে রক্ষা করতে একটু ঢেকে রাখার প্রয়োজন রয়েছে মাত্র, বলছেন ক্ষুব্ধ জনসাধারন।
জনগন অনেকটা ক্ষোভের স্বরেই বলছেন, এটুকু কাজও হচ্ছেনা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দ্বারা। শুধু কি তাই, অকেজো নষ্ট কম্পিউটার কুড়িয়ে এনে ভাল কম্পিউটারের স্থানে রেখে দিনের পর দিন দিব্যি চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। তাহলে ভাল কম্পিউটারগুলো যাচ্ছে কোথায়? শিক্ষক মশাইদের বাড়ী, আর যাবার জায়গা কোথায়! এমনও স্কুল রয়েছে যেখানে কম্পিউটারের জায়গায় শুধুমাত্র খালি বাক্সটাই পড়ে আছে সাক্ষীগোপাল হিসাবে। বাদ বাকি হার্ডওয়ার বা যন্ত্রাংশগুলো গায়েব হয়েছে শিক্ষক মশাইদের হাত ধরেই। এ যেন অ্যাসেম্বল করে করে স্কুলের কম্পিউটার থেকে খুলে নিয়ে সেগুলো সেঁটে দেওয়া হয়েছে শিক্ষক মশাইদের বাড়ীর কম্পিউটারে। সরকারি জিনিষ-পত্র লুটে নেওয়াই ক্রেডিট বলে মনে করেন তারা।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বা বৃহদার্থে শিক্ষকরাই যেমন নিজেদের দায়িত্ব পালনে ব্যার্থ তেমনি একটি সরকারকেও কালিমা লিপ্ত করতে তাদের বিশেষ অবদান রয়েছে। উনারাই বিশেষ উচ্চস্বরে কথা বলেন। হাতেগুনা কয়েকজন ভাল শিক্ষক থাকলেও উচ্চস্বর নিয়ে কথা বলা ঐসব শিক্ষকদের দাপটে সমাজ বা সরকারকে ভাল শ্রম দিতে পারছেন না ভাল মানের এবং সুস্থ্য চিন্তন-মননের অধিকারী অন্যান্য শিক্ষকরা, এমনটাই বলছেন জনসাধারন। অথচ যারা সরকারি জিনিষ-পত্র লুটে নেওয়াই ক্রেডিট বলে মনে করেন, তাদের বাড়ী-ঘরে গিয়ে দেখুন সাধারন জিনিষও পরিস্কার-পরিচ্ছন্নভাবে রাখা আছে। অপরদিকে সাধারন মানুষের ঘরের ছেলে-মেয়েদের জন্য সরকার লক্ষ-লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে বিদ্যালয়ে বিদ্যালয়ে কম্পিউটারগুলো পৌছে দিলেও, অযত্নে সেসব শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চোখের সামনেই সেগুলো বিনষ্ট হচ্ছে। দেখবার কেউই নেই। মাথা ব্যাথা নেই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।
তাই জনগনের দাবী অতিসত্বর বিষয়টি নিয়ে মাঠে নামুক প্রশাসন কিংবা শিক্ষা দপ্তর। এগিয়ে আসুক সমাজ গড়ার কারিগররা। যত্ন সহকারে কম্পিউটারগুলো রাখার ব্যবস্থা করা হউক। সেই সাথে কম্পিউটার প্রশিক্ষক নিয়োগ করে কম্পিউটারগুলোকে স্বর্গপ্রাপ্তি থেকে উদ্ধার করার জন্য জনগন দাবী জানিয়েছেন।