আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।। ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকবে কিনা এ প্রশ্নে এ বছর জুন মাসের ২৩ তারিখে এক গণভোট অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। গতকাল রাতে ইইউতে ব্রিটেনের অবস্থান নিয়ে ব্রাসেলসে এক সমঝোতার পর আজ মন্ত্রিপরিষদের এক বৈঠক শেষে মিস্টার ক্যামেরন এ ঘোষণা দিলেন। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা যায়। তিনি বলছেন, ইইউতে ব্রিটেনের বিশেষ মর্যাদা নিশ্চিত হবার পর তার মন্ত্রিসভা এখন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অংশ হিসেবে থাকার পক্ষে মত দিয়েছে।
শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও মন্ত্রিপরিষদের জরুরী বৈঠক ডেকে যেভাবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে এই গণভোটের তারিখ ঘোষণা করতে হলো, তা থেকেই এর গুরুত্বটা স্পষ্ট। এর আগে শনিবার মন্ত্রিপরিষদের এরকম জরুরী বৈঠক বসেছিল ১৯৮২ সালে ফকল্যান্ড যুদ্ধের সময়। ব্রাসেলসের বৈঠক থেকে ফিরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যে সমঝোতায় তিনি পৌঁছেছেন, তা মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে ব্যাখ্যা করেছেন ডেভিড ক্যামেরন। আর তারপর দশ নম্বর ডাউনিং স্ট্রীটে সাংবাদিকদের সামনে তিনি গণভোটের তারিখ ঘোষণা করেন।
ডেভিড ক্যামেরন বলেন, তিন বছর আগে তিনি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এই গণভোটের তারিখ ঘোষণা করছেন। তিনি বলেন, ব্রিটেনের জনগণই এখন ইউরোপের প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নেবেন, এবং জনগণ যে সিদ্ধান্তই নিক, তিনি তা বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবেন। তিনি আরো বলেন, যদিও জনগণই সিদ্ধান্ত নেবেন, তারপরও তিনি মনে করেন ব্রিটেন যদি ইউরোপীয় ইউনিয়নেই থাকে, সেটাই ব্রিটেনের জন্য ভালো, এবং জনগণের কাছে তিনি সেই সুপারিশই করছেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে মিস্টার ক্যামেরন যে সমঝোতায় পৌঁছেছেন, তার ফলে ব্রিটেন তার নিজস্ব মূদ্রা পাউন্ডেই থাকতে পারবে, এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভবিষ্যত রাজণৈতিক একত্রীকরণ থেকে আলাদা থাকতে পারবে। এছাড়া ইউরোপের অন্য দেশ থেকে আসা অভিবাসীদের জন্য সরকারী সুযোগ সুবিধা সীমিত করে দিতে পারবে। এখন পর্যন্ত যা খবর, তাতে মন্ত্রিপরিষদের বেশিরভাগ সদস্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে এই সমঝোতা মেনে নিয়েছে। কিন্তু মন্ত্রিপরিষদের অনেক সদস্য এর বিরোধিতাও করছেন। তারা মনে করছেন, মিস্টার ক্যামেরন ইউরোপীয় ইউনিয়ওেনর কাছ থেকে যে ছাড় আদায় করবেন বলে কথা দিয়েছিলেন, তাতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি এই প্রশ্নে এখন স্পষ্টতই বিভক্ত। কিন্তু ডেভিড ক্যামেরনের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এখন ব্রিটেনের সাড়ে চার কোটি ভোটারকে ইউরোপে থাকার পক্ষে ভোট দিতে রাজী করানো।