বীর ভাষা সৈনিকদের প্রতি “নিউজ আপডেট অব ত্রিপুরা”-র বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলী

21th Fabruary.jpg3দেবজিৎ চক্রবর্তী, আগরতলা, ২১ ফেব্রুয়ারী ।। জাত, পাত, ভাষা, ধর্ম, বর্ণ – সব ক্ষেত্রেই রয়েছে পৃথিবীতে অনন্য বৈচিত্র। কিন্তু পৃথিবীতে যেখানেই মাতৃগর্ভ থেকে জন্ম নিচ্ছে কোনো শিশু – তার প্রথম উচ্চারন হচ্ছে ‘মা’ – ভাষা ভিন্ন হলেও অর্থ একই। মায়ের ভাষা মানেই মাতৃভাষা। যে কোনো জাতির কাছে মাতৃভাষা হচ্ছে সন্মান আর গৌরবের প্রতীক। সেই মাতৃভাষাকে পদদলিত করে জোর পূর্বক নৃশংসতার স্ট্রীম রোলার চালিয়ে কেড়ে নিতে চেয়েছিল মুখের ভাষা পাকিস্থানী শাসকেরা – সেখান থেকেই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্থান অধুনা বাংলাদেশে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী ছাই চাপা আগুনের প্রলয়াংকারী অগ্নুৎপাতের বিস্ফোরণ হয়েছিল।
জোর করে উর্দূকে রাষ্ট্রভাষা করার চক্রান্তের বিরুদ্ধে সেই সময়ের পূর্ব পাকিস্থানের আপামোর মানুষ জীবনের শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে মাতৃভাষার সন্মান রক্ষায় আন্দোলন আর মিছিলের প্রকম্পিত পদচারনায় পাকিস্থানী শাসক গোষ্ঠীর যাবতীয় প্ররোচনা, প্রতিরোধ ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়। স্কুল, কলেজ থেকে শুরু করে শ্রমিক, কৃষক, সরকারী কর্মচারী, নারী পুরুষ – গোটা জাতি নেমে আসে রাজপথে। আকাশ বাতাস প্রতিধ্বনিত হয় শ্লোগানের বিদীর্ণ হুঙ্কারে – আমার ভাষা বাংলা ভাষা, রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই।
২১শে ফেব্রুয়ারী ১৯৫২ – ১৪৪ ধারা, তাক করা বন্ধুক, বুলেট উপেক্ষা করে মাতৃভাষার অপমানের বিরুদ্ধে গনপ্লাবন দেখা দেয় ঢাকায়। অপ্রতিরোধ্য মিছিলের গতিরোধ করতে পাকবাহিনীর বুলেটের শব্দের সঙ্গেই বাড়তে থাকে ‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই’ লাখো মানুষের আর্তির শ্লোগান। মায়ের ভাষার সেই আন্দোলনে ২১শে ফেব্রুয়ারী বরকত, সালাম, জব্বর, রফিক আর সফিকের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল ঢাকার রাজপথ। শেষ পর্যন্ত মায়ের ভাষার কাছে পরাজিত হয় বুলেটের শক্তি। জাতি, জাতিসত্ত্বা, আন্দোলন, গনঅভ্যূথান – সর্বক্ষেত্রেই অমোঘ শক্তি হচ্ছে ভাষা। মাতৃভাষার শৃঙ্খল মোচনে, মায়ের ভাষার মুক্তি সংগ্রামে আত্মাহুতি দিয়েছিল বরকত, সালাম, জব্বর, রফিক আর সফিক – বীর ভাষা সৈনিকদের বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলী জানায় “নিউজ আপডেট অব ত্রিপুরা”।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*