অবৈজ্ঞানিক ট্রাফিক ব্যবস্থায় নাজেহাল খোয়াইবাসী

khগোপাল সিং, খোয়াই, ০২ মার্চ ।। ইদানিংকালে খোয়াইয়ে পথের বলি হয়েছে বেশ কিছু নিষ্পাপ প্রাণ। খোয়াই শহরে ট্রাফিক ব্যবস্থা দেখে মনে হয় যেন ছেলেখেলা চলছে। খোয়াই শহর আর আগের মত নেই। শহরের বুক চিরে বর্তমানে কমলপুর, আমবাসা, ধর্মনগর, কৈলাসহর সহ নানান স্থানে যাতায়াত করছেন জনসাধারন। কিন্তু কিছু সংখ্যক জনগন ট্রাফিকি ব্যবস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখাতে ব্যস্ত। ট্রাফিক নিয়ম-নীতিকে তোয়াক্কা না করাই যেন বীর পুরুষের কাজ বলে মনে করছেন উনারা। ক্ষমতা প্রদর্শনের মঞ্চ হিসাবে ব্যস্ততম সড়ককেই বেছে নিচ্ছে তারা।
যেমন দেখা যাচ্ছে অনেক বাইক এর নাম্বার প্লেইট নেই। বৈধ কাগজ-পত্র নেই। অটো বা ছোট-বড় অনেক গাড়ীর ফিটনেস বা প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজপত্রও নেই। সবচাইতে বড় সমস্যা হচ্ছে, নিজেদের মর্জিমাফিক ছোট-বড় কিংবা টু-হুইলার বা ফোর হুইলার বাইক বা গাড়ী ইত্যাদি যানবাহন পার্কিং করার প্রবণতা। রাস্তার যেকোন স্থানে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে পড়া। কেউ কিছু বললে ঐ যে ক্ষমতার প্রদর্শন করা, বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হওয়া ইত্যাদি তো চলছেই। বিশেষ করে জনবহুল স্থানগুলোতে বাইক বা গাড়ীগুলি এমনভাবে পার্কিং করা হচ্ছে যার ফলে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। অথচ যাদের হাতে ক্ষমতা মানে ট্রাফিক পুলিশকে ঐসব ক্ষমতাবান, গুনধর সচেতন মানুষগুলোর রক্তচক্ষুর কাছে মাথা নত করতে হচ্ছে।
অথচ এই ট্রাফিক ব্যবস্থা হচ্ছে জনসাধারনের জন্যই। প্রতিদিন কত মায়ের বুক খালি হচ্ছে। কত পরিবার তাদের একমাত্র অবলম্বনকে হারিয়ে বসছে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তি চাকার নীচে পিষে যাচ্ছে। কেউ কেউ আবার সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে পড়ছেন। এর জন্য দায়ী কারা? যখনই প্রশ্নটা উঠে তখনই বিতর্কের ঢেউ আছড়ে পড়ে। কারন সবাই নিজেদের দায়-দায়িত্বটা আড়াল করে অন্যের উপর দায় চাপাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। অন্তত খোয়াই শহরের কথা যদি ধরা যায়, দিনের পর দিন যান দূর্ঘটনা বৃদ্ধি এবং যানজটের সৃষ্টির পেছনে ঐসব ব্যতিক্রমী কিছু অসচেতন মানুষ যতটা দায়ী, খোয়াই পূর্ত্ত দপ্তর কিন্তু ততটাই দায়ী। খোয়াই শহরের রাস্তায় নেই ফুটপাত। যাও কিছু আছে তা জবরদখলে চলে গেছে। পুর্ত্ত দপ্তর এবং পুর পরিষদ যদি স্বউদ্যোগে এগিয়ে আসে এবং ফুটপাত দখলমুক্ত করে তবে কিছুটা সুরাহা সম্ভব বলেই মনে করছেন খোয়াইবাসী।
তবে বর্তমান সময়ে ট্রাফিক দপ্তর কিছুটা উদ্যোগী হয়েছে। কিন্তু ট্রাফিক দপ্তরের এই উদ্যোগকে অবৈজ্ঞানিক বলছেন জনসাধারন। কিছু ‘নো-পার্কিং জোন’ লেখা সাইন-বোর্ড রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। ট্রাফিক আইন না মানা বেশ কিছু উদ্ভট লোক তাও মানতে নারাজ। বরং এই বোর্ডগুলিকে গাড়ী বা বাইক দিয়ে ঢেকে রেখে দিচ্ছে। যা দেখে পথচলতি মানুষ হাসাহাসি করেন। এভাবে দিনের পর দিন কিছু অসচেতন মানুষ ট্রাফিক আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখাবে অথচ পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কিছুই ব্যবস্থা গ্রহন করবেনা, এমনটা আর কতদিন চলবে? ট্রাফিক ব্যবস্থা জনগনের জন্য। সুতরাং হাতেগুনা কয়েকজনের জন্য খোয়াইবাসীর প্রাণ সংকটে রাখাটা যুক্তিযুক্ত কিনা, প্রশ্ন জনগনের।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*