জাতীয় ডেস্ক ।। বিশ্বের সবচেয়ে দামী হীরাখণ্ড কোহিনূর চুরি নয়, ব্রিটেনকে ‘উপহার’ দেওয়া হয়েছিল এমন কথা জানানোর এক দিন পর ভারত সরকার বলেছে, তারা কোহিনূরের অধিকার কখনো ছাড়বে না। কোহিনূর নামের হীরাটি ১৯ শতকের দিকে ভারতের পাঞ্জাব থেকে চুরি করে ব্রিটেনের রানীর জন্য নিয়ে যাওয়া হয় বলে মনে করেন অধিকাংশ ভারতীয়। কিন্তু সোমবার সুপ্রিম কোর্টে এ সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে ভারতের সলিসিটর জেনারেল (অ্যাটর্নি জেনারেল) রণজিৎ কুমার জানান, চুরি নয়, পাঞ্জাবের মহারাজা দুলীপ সিং ব্রিটিশদেরকে ‘উপহার’ দিয়েছিলেন ১০৫ ক্যারেটের এ হীরাটি। ব্রিটেনের রানীর মুকুটে বসানো বিশ্বের সবচেয়ে উজ্জ্বল হীরা কোহিনূর ভারতে ফিরিয়ে আনতে জনস্বার্থে অল ইন্ডিয়া মানবাধিকার কমিশন এবং সোশ্যাল জাস্টিস ফ্রন্ট্রের করা ওই মামলার শুনানি সুপ্রিম কোর্ট চলমান রয়েছে। তবে রণজিৎ কুমারের বক্তব্যে ভিন্নমত পোষণ করে মঙ্গলবার ভারতের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, সরকার পুনর্ব্যক্ত করেছে- বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ বজায় রেখেই কোহিনূর ফিরিয়ে আনতে সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কুমারের বক্তব্যের বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, আদালতের কাছে তিনি যে মতামত দিয়েছেন, সেটা সরকারের নয়। কোহিনূর ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য সরকার এখনো দেয়নি। ঘটনাটির ব্যাখ্যায় দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছিল, ঘটনাচক্রে ১৮৫০ সালে পাঞ্জাবের ব্রিটিশ গভর্নর জেনারেল মার্কুইস অব ডালহৌসি পাঞ্জাবের মহারাজা দুলীপ সিংকে কোহিনূর হীরা রানি ভিক্টোরিয়াকে ‘উপহার’ হিসেবে দিতে বাধ্য করেছিলেন। জগদ্বিখ্যাত এ হীরাটি একসময় ছিল ভারতের গর্ব। তখন ভারত ছিল ভারতবর্ষ। ভারতের বিভিন্ন মহল দীর্ঘ দিন ধরেই কোহিনূর ফেরত দেওয়ার জন্য যুক্তরাজ্যের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে। হীরাটি ফিরিয়ে আনতে চেয়ে একাধিক মামলাও হয়েছে। ভারতীয় ব্যবসায়ী, শিল্পপতি ও বলিউড তারকারা কোহিনূর ফেরত পেতে লন্ডন হাইকোর্টে মামলার উদ্যোগ নেন। মামলা হয় ভারতের সুপ্রিম কোর্টেও। কিন্তু ব্রিটিশ সরকার ২০১৩ সালে সাফ জানিয়ে দেয়, কোহিনূর কখনোই ফেরত দেওয়া হবে না।