গোপাল সিং, খোয়াই, ১৮ মে ।। বুধবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগদ প্রবল বর্ষন চলাকালীন সময়েই আচমকা বজ্রপাতে খোয়াই বেহলাবাড়ী কৃষ্ণপাড়ায় একসাথে ভূপতিত হন ২৫ জন রেগা শ্রমিক। রেগার মাটি কাটার কাজ করার পর সকলে একত্রে বিশ্রাম করছিলেন তখন। আচমকা বাজ পড়ায় সকলেই ভূপতিত হন এবং মূর্ছিয়ে পড়েন। বাজ পড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে স্কুল পড়ুয়া দিপুল দেববর্মা, বয়স ১৪ এবং বাসনা দেববর্মা, বয়স ৪০। গুরুতর আহত হন মোট ৫ জন। এদের সকলকেই প্রথমে বেহলাবাড়ী প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। আহতরা হলেন শিলারানী দেববর্মা, বয়স ৬৫, সুজাতা দেববর্মা, বয়স ৩৫, শালকা দেববর্মা, বয়স ১৪, প্রীতিরানী দেববর্মা, বয়স ৩৬, নিরুবালা দেববর্মা, বয়স ৪৫। বাকি রেগা শ্রমিকরা অল্পবিস্তর আহত হওয়ায় তাদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে সুজাতা দেববর্মা, নিরুবালা দেববর্মার চিকিৎসা চলছে খোয়াই জেলা হাসপাতালে। তবে গুরুতর আহতদের মধ্য থেকে পরবর্তী সময় শিলারানী দেববর্মা, শালকা দেববর্মা এবং প্রীতিরানী দেববর্মাকে আগরতলা জিবি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
ঘটনার বিবরন দিতে গিয়ে অল্পেতে রক্ষা পাওয়া অন্যান্য রেগা শ্রমিকরা জানালেন কি বিভৎস ছিল ঐ কতটুকু সময়। খোয়াই মহকুমার রতনপুর, মনাইছড়ার পর এবার বেহলাবাড়ীতে বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা মানুষের মনে ভীতির সঞ্চার করছে। বুধবারের ঘটনায় চোখের পলকেই একে একে দু’জন সঙ্গীকে হারালেন রেগা শ্রমিকরা। কিছুক্ষন সময় সম্পূর্ণ অচৈতন্য ছিলেন সকলেই। মুহুর্তেই কত বড় বিপদ মাথার উপর দিয়ে চলে গেল। এখনও কেউ কেউ ভীত, কেউ কেউ স্তম্ভিত, কেউ কেউ বাকরুদ্ধ। এর মধ্যেই প্রতিনিধির সামনে তুলে ধরলেন আতঙ্কে ভরা মুহুর্তের কথা। পাশেই আহতদের আত্মীয়-স্বজনরা তাদের আপনজনের কাছে, তাদের প্রাণ বাঁচাতে মরিয়া প্রয়াস চালাচ্ছেন। কেউ কেউ মৃতদেহকে আগলে পড়ে আছেন। অত্যন্ত রোমহর্ষক
এদিকে ঘটনার খবর পেয়েই চাম্পাহাওড় থানার পুলিশ সহ খোয়াই জেলা শাসক অপূর্ব রায়, খোয়াই মহকুমা শাসক ড. সমিত রায় চৌধূরী সহ জেলা ও মহকুমা প্রশাসনের কর্মকর্তারা সেখানে ছুটে যান। মহকুমা শাসকের তত্ত্বাবধানে আহতদের সঠিক সময়ে চিকিৎসার সুবন্দোব্যস্ত করা হয়। সেই সাথে সরকারীভাবে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন মহকুমা শাসক ড. সমিত রায় চৌধূরী। মর্মান্তিক এই ঘটনায় বেহলাবাড়ীতে শোকের ছায়া নেমে আসে।