গোপাল সিং, খোয়াই, ২৩ মে ।। খোয়াই ব্লক কর্তৃক নব নির্মিত শৌচালয় নিম্নমানের। শুধু নিম্নমানের কাজই নয়, অবৈজ্ঞানিকভাবে নির্মিত এই শৌচালয় নিয়ে ইতিমধ্যে জনমনে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। ত্রিপুরা হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্যের জনবহুল এলাকায় মহিলাদের জন্য শৌচালয় নির্মানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ত্রিপুরা হাইকোর্টের আদেশের সাথে সহমত পোষন করে রাজ্য সরকার মহিলাদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেয়। এই উদ্যোগেরই অঙ্গ হিসাবে খোয়াই শহরের প্রাণকেন্দ্র সুভাষপার্ক এলাকার নৃপেন চক্রবর্তী এভিন্যুর ঠিক পাশে একটি শৌচালয় নির্মানের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ভাগ্যচক্রে চরগণকী গ্রাম পঞ্চায়েতের সিমানায় যে স্থানে গড়ে উঠছে শৌচালয়টি, সেই স্থানটি অস্থায়ী স্ট্যান্ড বলা হয়। খোয়াই মোটর স্ট্যান্ড থেকে এবং কমলপুর, ধর্মনগর, কৈলাসহর, আমবাসা থেকে যাত্রীবাহী গাড়ী এসে ঠিক এখানেই বেশ কিছুক্ষন থেমে থাকে। মুলত যানবাহনগুলিতে পর্যাপ্ত পরিমানে যাত্রী তুলতেই এখানে এসে ভীড় জমায় গাড়ীগুলি। এই স্থানকে রাধানগর স্ট্যান্ডও বলা হয়। কারন যাত্রীবাহী গাড়ীগুলি এই রোড দিয়েই কালাছড়া হয়ে আগরতলায় রাধানগর স্ট্যান্ড কিংবা অন্যান্য স্থানে পৌছায়। যাইহোক এই খোয়াইয়ের এই ব্যস্ততম এলাকাতেই ছিলনা কোন শৌচালয়ের ব্যবস্থা। একখানা প্রস্রাবাগাড় থাকলেও, সেটি মহিলাদের ব্যবহারের উপযুক্ত ছিলনা। তাই খোয়াইবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এই স্থানে একটি শৌচালয় নির্মান করা হউক।
জনসাধারনের দাবি মেনে উক্ত স্থানে একটি শৌচালয় নির্মানের দায়ভার নেয় খোয়াই ব্লক। জনগনের আশা ছিল যেহেতু শহরের প্রাণ কেন্দ্রে খোয়াই ব্লকের তত্ত্বাবধানে শৌচালয়টি নির্মান করা হচ্ছে সুতরাং দেখার মত কাজ হবে। কিন্তু জনগনের আশায় জল ঢেলে যে নিম্নমানের কাজ হচ্ছে তাতে জনসাধারন প্রচন্ড হতাশ। মাটির নীচ থেকে উপর অবধি নিম্নমানের কাজ হচ্ছে বলে জনগন ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। সেই সাথে দাবি করা হচ্ছে এই শৌচালয়ে একটি মাত্র দরজা থাকার ফলে তা মহিলাদের জন্য কোনভাবেই নিরাপদ নয়। যদিও স্টেশন বলে কথা। সব ধরনের লোক সমাগম হবে এখানে। ভাল খারাপ সব ধরনের মানুষই এই শৌচালয় ব্যাবহার করবেন। নারী-পুরুষ সবাই ব্যবহার করবেন। কিন্তু একটি মাত্র দরজা দিয়ে ভেতর-বাহির হতে গিয়ে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে যায়, আশঙ্কা প্রকাশ করছেন জনসাধারন। কারন কোন অঘটন ঘটলে চিৎকার-চেঁচামেচি করলেও রাস্তা থেকে শোনা যাবেনা। একেতো নিম্নমানের কাজ তারপর অবৈজ্ঞানিকভাবে নির্মিত শৌচালয়, যা এলাকার জনমনে ভবিষ্যত চিন্তার বিষয় হয়ে থাকবে। অথচ এলাকার জনসাধারনেরই অভিযোগ প্রথম থেকেই এলাকার গ্রাম প্রধান এবং ব্লক ইঞ্জিনিয়ারকে এই নিম্নমানের কাজের বিষয়ে জানানো হলেও কোন পাত্তা পাওয়া যায়নি। জনগনের দাবি ছিল শৌচালয়ে প্রবেশ ও বাহিরের ক্ষেত্রে পুরুষ ও মহিলার জন্য আলাদা দরজার ব্যবস্থা থাকবে। সম্পূর্ণ আলাদা ব্যবস্থাই মহিলাদের জন্য সুরক্ষিত বলে মনে করছেন জনগন।
অপরদিকে জনগনই অভিযোগ করে বলছেন, পুর এলাকায় সব শৌচালয়গুলোতে মহিলাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয়। বিশেষ করে খোয়াই জেলা হাসপাতালের শৌচালয়ে। প্রতি মহিলা পিছু ৫ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। এমনটাই নাকি পুর পরিষদের নির্দেশ। একদিকে খোয়াই ব্লক কর্তৃক নিম্নমানের শৌচালয় নির্মান করা অন্যদিকে পুর এলাকায় শৌচালয়ে মহিলাদের থেকে টাকা আদায় করার মতো গুরুতর অভিযোগ তোলার পাশাপাশি খোয়াই শহরের আপামর জনসাধারন শহরাঞ্চলে আরও মহিলাদের জন্য সর্বসুবিধা বিশিষ্ট শৌচালয়ের দাবি জানিয়েছেন। বিশেষ করে ব্যস্ততম এলাকাগুলিতে। যেমন টিকেডিকে রোড, অফিসটিলা রোড, সুভাষপার্ক, বনকর, কবিগুরু ও অরবিন্দ পার্ক, মহারাজগঞ্জ বাজার, দূর্গানগর, লালছড়া সহ ব্যস্ততম এলাকার বিচারে মহিলাদের জন্য শৌচালয় নির্মান করার জন্য দাবি জানিয়েছেন খোয়াইবাসী।