গোপাল সিং, খোয়াই, ২৪ মে ।। বাইজাল বাড়ী, ছনখলা, হেজামারা এলাকাগুলি দীর্ঘদিন শান্ত থাকার পর শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করার প্রয়াস কতিপয় অতি উৎসাহী বাম কর্মী-সমর্থকদের। সরকারী কার্য্যালয়ে ঢুকে বিরোধী নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের উপর হামলা করে শান্তি-শৃঙ্খলার পরিবেশকে উস্কে দেওয়ার অপচেষ্টা করা হল সোমবার দুপুরে। সোমবার দুপুরে দক্ষিন পদ্মবিল এডিসি ভিলেজে সরকারী উন্নয়নমুলক কাজের জন্য জনপ্রতিনিধিদের বৈঠক ডাকেন পঞ্চায়েত সচিব গৌতম দাস। তিনি চিঠি ইস্যু করে সিপিআই(এম) ও আইপিএফটি’র ৪ জনপ্রতিনিধিকে বৈঠকে ডাকেন ভিলেজ কার্য্যালয়ে। কিন্তু উন্নয়নমুলক বৈঠক বাঞ্চাল করতে কতিপয় সিপিআই(এম) কর্মী-সমর্থক আইপিএফটি’র জনপ্রতিনিধিদের উপর হামলে পড়ে। শারীরিকভাবে হেনস্থার পাশাপাশি হুমকি দেওয়া হয় ১ মিনিটের মধ্যে পঞ্চায়েত থেকে বেরিয়ে যেতে। প্রকাশ্য দিবালোকে এধরনের ঘটনা সংগঠিত হবার পর পঞ্চায়েত সেক্রেটারি বাধা দিলে পঞ্চায়েতে সচিব গৌতম দাসকেও মারতে উদ্ধ্যত হয়। পঞ্চায়েত সেক্রেটারি প্রাণ নিয়ে দৌড়ে পালান সেখান থেকে। অতি উৎসাহী বাম কর্মী-সমর্থকদের এহেন ঘটনায় কিছুদিন পরপরই হেজামারা, বাইজালবাড়ী এবং ছনখলার মতো এলাকাগুলিতে রাস্তা অবরোধ সহ বিক্ষুব্ধ জনতার রুষানলে পড়তে হচ্ছে আম নাগরিকদের। বিশেষ করে এই রোডে চলাচল করা নিত্যদিনের যাত্রীদের চরম ভোগান্তির স্বীকার হতে হচ্ছে। কমলপুর, আমবাসা, কৈলাসহর সহ বিভিন্ন জেলার মানুষ প্রয়োজনের তাগিদে এই রাস্তা ধরেই রাজধানীর সাথে যোগাযোগ বজায় রেখে চলছেন। কিন্তু শান্তিপূর্ণ পরিবেশ যখন অশান্ত হয়ে উঠে তখন জনরুষে পড়তে হচ্ছে আম নাগরিকদেরই। এর থেকে অন্তত একটা কথা পরিষ্কার যে, ঐসব অতি উৎসাহী বাম কর্মী-সমর্থেকদের উপর দলের কোন নিয়ণ্ত্রন নেই। যে কারনে অহেতুক শান্তি-সম্প্রীতির পরিবেশকে বিনষ্ট করার চক্রান্তে তারা দিনের পর দিন লিপ্ত হচ্ছে।
এদিকে সোমবারের ঘটনার বিবরন দিতে গিয়ে আইপিএফটি’র নেতৃত্বরা জানালেন, সোমবার বেলা ১১টায় পদ্মবিল আরডি ব্লকের অধীন দক্ষিন পদ্মবিল এডিসি ভিলেজে এক জরুরী সভা আহ্বান করা হয়। ভিলেজ কমিটির সব সদস্য-সদস্যাদের নিয়ে এদিনকার জরুরী বৈঠক। যেখানে সামিল হন আইপিএফটি’র ৪ জন এবং সিপিআই(এম)-এর ৪ জন নির্বাচিত সদস্য-সদস্যা এবং পঞ্চায়েত সদস্য-সদস্যাদের নিয়ে ভিলেজ কমিটির পঞ্চায়েত সেক্রেটারি গৌতম দাস এই বৈঠকের আহ্বান করেন। বৈঠকে মুলত রেগার কাজ, এপিএল-বিপিএল-এর কাজ ওপিডিএফ ফান্ডের অর্থে উন্নয়নমুলক কাজ সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পর্যালোচনা হওয়ার কথা। কিন্তু বৈঠকের শুরুতেই আচমকা কিছু সিপিআই(এম) কর্মী-সমর্থক এসে ভিলেজ কমিটির কার্য্যালয়ে প্রবেশ করে এবং আইপিএফটি’র নির্বাচিত সদস্যা সারথী দেববর্মাকে হেনস্থা করে। সেই সাথে এদিনকার বৈঠক বাঞ্চাল করে দেয় তারা। এমনই গুরুতর অভিযোগ মিডিয়ার সামনে তুলে ধরলেন আইপিএফটির বিভাগীয় সম্পাদক প্রশান্ত দেববর্মা সহ দলীয় কর্র্মী-সমর্থকরা। সোমবার সন্ধ্যায় আইপিএফটি দলের ৪ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি বাইজালবাড়ী ফাঁড়ি থানায় তিন জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। খোয়াইয়ের লঙ্কমুড়ার অনিল দেববর্মা, বিমান দেববর্মা ও সত্যজিৎ দেববর্মার নাম উঠে আসে আইপিএফটি’র এফআইআরে।