গোপাল সিং, খোয়াই, ১৬ জুন ।। খোয়াইতে পুলিশ প্রশাসনের প্রয়াস সভা চলাকালীনই প্রকাশ্যে চলল জুয়া ও নেশার কারবার। একদিকে পুলিশ আধিকারিকের সমাজ পরিবর্তনের ডাক, একই সময়ে শহরের উপরই এক মহিলার গলার হার ছিনতাইয়ের চেষ্টা এক যুবকের। একদিকে স্বপ্রচেষ্টায় নেশা কারবারী কিংবা সমাজদ্রোহীদের পুলিশের হাতে তুলে দেন ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে আম জনতা, পর মুহুর্তেই কলার উঁচু করে ঘুরে বেড়ায় সেই নেশা কারবারী, সমাজদ্রোহীরা। পুলিশের এই অসহযোগিতার মধ্যেই পুলিশ ও জনগনকে বন্ধুত্বমুলক মনোভাব বজায় রাখার আহ্বান এসপি জয়ন্ত চক্রবর্তীর। এই আলোচনা সভা চলাকালীন সময়েই খোয়াই শহরের বিপিসি পাড়া ক্লাব সংলগ্ন এলাকায় এক মহিলার গলার হার ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে এক যু্বক। স্কুটি নিয়ে মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে মহিলার সাথে কথোপকথনের মধ্যেই জাপটে ধরে মহিলাকে। কিন্তু এযাত্রায় হার ছিনতাই করতে পারেনি যুবকটি। মহিলার সাহসিকতার সামনে ব্যর্থ হয়ে স্কুটি নিয়ে চম্পট দেয় যুবকটি। নির্জন অন্ধকারে ঘটনা ঘটার কারনে মহিলা যুবক এবং তার স্কুটির নম্বর দেখতে পারেননি।
এদিকে বুধবার খোয়াই শহরের প্রান কেন্দ্র কোহিনুর কমপ্লেক্সে এলাকার ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীদের নিয়ে খোয়াই পুলিশ প্রশাসন কর্তৃক এক সচেতনতামুলক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। যদিও উপস্থিতি ছিল কম। পুলিশ কর্মী এবং জনগনের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার আহ্বান জানান খোয়াইয়ের এসপি জয়ন্ত চক্রবর্তী। তিনি বলেন, পুলিশ কোন মিরাক্যাল নয়, আপনাদের পরিবারেরই একজন। তাই আপনাদের সহযোগীতায় বিভিন্ন ক্রাইম, যান দূর্ঘটনার প্রবনতাকে রোধ করা সম্ভব। অপরাধমুলক কার্যৃকলাপ প্রতিহত করা সম্ভব। তাই সমস্ত ধরনের অপরাধ প্রবনতাকে রোধ করতে জনগনের সার্বিক সহযোগিতার দাবী রাখেন এসপি জয়ন্ত চক্রবর্তী। সেই সাথে উপস্থিত জনসাধারনকেও মতবিনিময় করার জন্য আহ্বান জানানো হয়। প্রায় সব বক্তারাই সুরে তাল মেলালো। কিন্তু জনৈক এক ব্যবসায়ীর আলোচনায় টনক নড়ে সব পুলিশ কর্তাদের। তিনি বলেন, আমরা ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় জনসাধারন সম্মিলিতভাবে এই সুভাষপার্ক বাজার বা আশপাশ এলাকা থেকে মদ, কোরাক্স সহ অসামাজিক কাজে লিপ্তদের পাকড়াও করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার কিছু সময় পরই কলার উঁচু করে ঐ চোরা কারবারীরা আমাদের সামনে দিয়ে ঘুরে বেড়ায়। আমাদের দিকে লক্ষ্য করে বিদ্রোপের হাসি হাসে। এমনই সব তথ্য তুলে ধরেন জনৈক ব্যবসায়ী।
উল্লেখ্য সুভাষপার্ক বাজারের পাশেই আউটপোষ্ট ফাঁড়ি থাকা অবস্থায়ও সুভাষপার্ক বাজারে একের পর এক চুরিকান্ড ঘটে চলছে। রাত ১২টার পর কোন পুলিশ কর্মীই প্রহড়ায় থাকেনা। এমনকি এদিনকার সভা চলাকালীন সময়েই মাত্র কুড়ি হাত দুরে চলছিল জুয়া ও নেশার কারবার। হেন্ডিং খেলা যেমন চলছিল তেমনি অবাধে চলছিল টেবলেট বিক্রি। সমাজ পরিবর্তনের ডাকে এভাবেই কি সাড়া পরবে? প্রশ্ন জনমনে।
বুধবার সুভাষপার্ক কোহিনুর কমপ্লেক্সে আয়োজিত সভায় জনৈক ব্যবসায়ী জানালেন, আগে একটি মদের দোকান ছিল। বর্তমানে তিনটি হয়েছে। বে-সরকারী আরও রয়েছে। পুলিশ প্রশাসন সমাজ পরিবর্তনের ডাক দিচ্ছেন। কিন্তু এমন অবস্থার মধ্যে পুলিশের অসহযোগীতায় এটা কি করে সম্ভব? যদিও ঐ ব্যবসায়ীর আলোচনার পর উনার বক্তব্যের কোন কাউন্টার দেওয়া হয়নি।
এদিনকার সভা চলাকালীন সময়ে একদিকে যেমন জুয়া ও নেশার কারবার প্রকাশ্যে চলছিল তেমনি অন্যদিকে বুধবার সন্ধ্যায় খোয়াই বিপিসি পাড়া ক্লাব সংলগ্ন এলাকায় এক যুবক স্কুটি নিয়ে এসে একজন মহিলাকে দাঁড় করিয়ে সৌজন্যমুলক কথাবার্তার জাল বুনে মহিলার হাড় ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে। খুব স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতেই মহিলাকে দাঁড় করিয়ে কথোপকথন শুরু করে যুবকটি। হঠাৎই মহিলাকে জাপটে ধরে। কিন্তু মহিলার সাহসিকতার দরুন এ যাত্রায় বেঁচে যান। হার ছিনতাই করতে না পেরে দ্রুত বেড়ে স্কুটি নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় যুবকটি। শহর এবং শহরতলীর নির্জন স্থানে এরকম ঘটনা ঘটেই চলছে খোয়াইতে। প্রতিদিনই বাই সাইকেল চুরি হচ্ছে প্রকাশ্যেই। চোখের পলকেই সাইকেল নিয়ে চম্পট দিচ্ছে চোরের দল। অথচ সাধারন মানুষের যান-মালের সুরক্ষার প্রশ্নে পুলিশ কর্মীদের নেই কোন ভূমিকা। নিত্যদিনই চুরি-ছিনতাই ঘটে চললেও পুলিশ প্রশাসন কিন্তু কোন প্রকার প্রয়াসেই সফল হতে পারছেন না। নীট ফল শূণ্য।