গোপাল সিং, খোয়াই, ০৩ জুলাই ।। খোয়াই জেলা হাসপাতালে গর্ভবর্তী মা ও শিশুদের সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রন্তের অভিযোগ উঠল খুদ হাসপাতাল কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক এবং রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর সচেতনতামুলক প্রচার যেমন, বড় বড় হোডিং, ব্যানার, পোষ্টার বা মাইকযোগে বিভিন্ন নাটকের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা খরচ করছে সেই জায়গায় খোয়াই জেলা হাসপাতালে অন্যান্য রোগীদের পাশে বসিয়ে একই কক্ষে গর্ভবর্তী মা ও শিশুদের টীকা বা ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। একই কক্ষে টিভি বা যক্ষা রোগে আক্রান্ত রোগীদের ওষুধ প্রদান করা হয়। জনগনের অভিযোগ স্বাস্থ্য দপ্তর যেখানে মিডিয়া ওয়ার্কসপ করে বলছে টিভি বা যক্ষা রোগীদের কাছ থেকে কি কি বিষয়ে সাবধান থাকতে হবে। কিন্তু অপরদিকে খোয়াই জেলা হাসপাতালেরই উদাসীনতায় যক্ষা রোগীর সাথে গর্ভবর্তী মা ও শিশু এবং সদ্যোজাত শিশুদের একই বেঞ্চে বসে থাকাটা বিপজ্জনক হবে না তো ! যদিও জনগনের অভিযোগ যক্ষা রোগীদের নিয়ে একদমই নয়। কোন কুসংষ্কারও নয়। যেহেতু স্বাস্থ্য দপ্তর বা চিকিৎসকরা বলছেন যক্ষা রোগে আক্রান্তদের থেকে গর্ভবর্তী মা ও শিশুর সাবধান থাকা উচিত তবে কেন খোয়াই জেলা হাসপাতালে প্রচুর জায়গা থাকা সত্বেও একই কক্ষে যক্ষা রোগী এবং গর্ভবতী মহিলাদের টীকাকরন বা ভ্যাকসিন প্রদানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে? কেন প্রসূতি মায়েদের সাথে গর্ভজাত শিশুদের জন্য সতর্কতা অবলম্বন করছেনা হাসপাতাল কতৃপক্ষ? খোয়াই জেলা হাসপাতালে কোন নেতা-আমলা বা বিত্তশালী পরিবারের লোকজন স্বাস্থ্য পরিষেবা গ্রহন করতে আসেন না বলেই কি এই উদাসীনতা? প্রশ্ন জনমনে। এতক্ষন খোয়াই জেলা হাসপাতালের যে কক্ষটির কথা উল্লেখ করা হয়েছে এতে শুধু গর্ভবর্তী মহিলা ও শিশুদের সাথে যক্ষা বা অন্যান্য রোগীদেরই একসাথে বসানো হচ্ছেনা এর পাশাপাশি গর্ভবর্তী মহিলা ও শিশুদের এই তীব্র গরমের মধ্যেও বৈদ্যুতিক পাখাবিহীন একটি কক্ষে অপেক্ষার জন্য বসিয়ে রাখা হচ্ছে। ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষায় থাকা প্রসূতি মায়েদের সাথে ছোট্ট ছোট্ট শিশুদের এভাবেই কষ্টের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। স্বাস্থ্য পরিষেবা ও চিকিৎসালয়ের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ হলেও খোয়াই জেলা হাসপাতালে এমন ঘটনায় জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে। আলো-বাতাসহীন একটি কক্ষে প্রসূতি মায়েদের সাথে কষ্ট করতে হচ্ছে শিশুদেরও। যদিও হাসপাতালের কর্মীরা বহাল তবিয়তে পাখার নীচে বসেই নানান গল্পে মত্ত হয়ে পড়েন। এদিকে হাসপাতালে কোটি কোটি টাকার বৈদ্যুতিক সামগ্রী এবং এসি কিনে খরচ দেখানো হচ্ছে। হাসপাতালের আমলা-কামলারা এসি লাগানো কক্ষে বসে কেউ কম্পিউটারে তাস খেলছেন আবার কেউ কেউ হাসপাতালের সামনে চায়ের দোকানে আড্ডা জমাচ্ছেন। ভারতবর্ষে আগামী দিনে জন্ম নেওয়ার অপেক্ষায় থাকা শিশুরা কিংবা সদ্যোজাত শিশুদের ভাগ্যে মাত্র ৪-৫ হাজার টাকার একখানা বৈদ্যুতিক পাখা জুটছে না, এমন চিত্র স্বাস্থ্য দপ্তরের জন্য কি লজ্জার নয় ! তাই অতি সত্বর প্রসূতি মা ও তার শিশুর কথা মাথায় রেখে যক্ষা রোগী এবং অন্যান্য রোগীদের আলাদা আলাদা কক্ষের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন জনগন। অপরদিকে যারা চিকিৎসা এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে, চরম গাফিলতি করছে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করলেই রাজ্যে আগামী দিনে এমন নজীরবিহীন ঘটনা ঘটবেনা বলেই আশাবাদী জনসাধারন।