গোপাল সিং, খোয়াই, ০৪ জুলাই ।। খোয়াই তৃনমুল কংগ্রেসের একদিনের কর্মী সম্মেলন ও সুভাষপার্ক কোহিনুর কমপ্লেক্সের সামনে পথসভা ও মিছিলকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকদিন যাবত দৌড়ঝাঁপ শুরু হলেও তেমন কোন সাড়া ফেলতে পারেনি ১৪২ পরিবারের কংগ্রেস দলত্যাগ এবং ২৫ পরিবারের সিপিআই(এম) দলত্যাগ। খোয়াই গনকীস্থিত কথাকলি কমিউনিটি হলের মঞ্চ সাড়া জাগাতে ব্যার্থ হল এদিন। সংবাদ মাধ্যমকে কংগ্রেসের ১৪২ পরিবার এবং সিপিআই(এম) এর ২৫ পরিবারের সংখ্যা বলা হলেও উপস্থিতির হার দেখানো হয়নি। যদিও তৃনমুল নেতৃত্ব আশীষ সাহা ভাষনে গোজামিল দিয়ে সংবাদ মাধ্যমকে বোঝানোর চেষ্টা করেন যে, প্রকাশ্যে আসতে চায়না অনেকেই, তাই উপস্থিতি এরকম। বরং নতুন-পুরনো কোন্দলের চেহারা প্রকাশ্যে আসে যা কথাকলি হলে উপস্থিত অনেক কর্মীরা বুঝে যান। কংগ্রেসের দলত্যাগীদের মধ্যে ২-১ জন বাদ দিলে বাকিদের কোন গ্রহনযোগ্যতা নেই। এরকম জনসংযোগহীন নেতা দিয়ে আগামী ২০১৮ মিশন কিভাবে পূর্ণ হবে তাই বলাবলি করছিল উপস্থিত কর্মিরা। যারা দুটি দল ত্যাগ করেছেন উনারা ১৯৯৩ থেকে এখন পর্যন্ত কতবার দলত্যাগ করেছেন এবং সুবিধাভোগ করেছেন তার কোন হিসেব নেই। অপরদিকে পশ্চিমবাংলায় সিপিআই(এম) এর সাথে কংগ্রেসের জোট নিয়ে ক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতৃত্বরা বিকল্প বিরোধী শক্তির খোঁজে তৃনমুলের প্রতি আস্থা দেখাচ্ছেন। কংগ্রেসের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে একের পর এক কং-নেতৃত্ব তৃনমুলে সামিল হচ্ছেন। এই ধারা অব্যহত রেখে খোয়াই ব্লক তৃনমুল কংগ্রেসের এদিনকার কর্মী সম্মেলনে আগরতলা পুর পরিষদের প্রাক্তন চেয়ারপার্সন তথা খোয়াই কেন্দ্রের বিরোধী শিবিরের নেতা দীপক মজুমদার স্বদলবলে যোগ দিলেন তৃনমুলে। যদিও তিনি আগরতলাতে বসেই তৃনমুলে যোগদান করতে পারতেন। কিন্তু খোয়াইবাসীকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে বদ্ধপরিকর প্রাক্তন কংগ্রেস নেতৃত্ব দীপক মজুমদার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তৃনমুল কংগ্রেসে যোগদান করলেন। সুবিশাল মিছিল করে তিনি তৃনমুলের কর্মী সম্মেলনে সামিল হন। এদিনকার কর্মী সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তৃনমুল নেতৃত্ব সুদীপ রায় বর্মন, আশীষ সাহা এবং তৃনমুল খোয়াই জেলা সভাপতি মনোজ দাস সহ অন্যান্য নেতৃত্বরা।
সোমবার সন্ধ্যায় কর্মী সম্মেলন শেষ করে একটি মিছিল সংগঠিত করে সুভাষপার্ক কোহিনুর কমপ্লেক্সের সামনে এক সভায় মিলিত হন তৃনমুল নেতা, কর্মী-সমর্থকরা। সভায় ভাষন রাখতে গিয়ে সুদীপ রায় বর্মন চিটফান্ড ইস্যুতে সরব হন। সেই সাথে উনার ভাষনে উঠে খোয়াই ক্যাবল অপারেটারদের প্রসঙ্গ। খোয়াই ক্যাবল নেটওয়ার্ককে এক হাত নিয়ে বললেন, আগরতলায় কি কি ঘটনা ঘটছে তা খোয়াইবাসী কেউই দেখতে পারেন না। কারন খোয়াই ক্যাবল নেটওয়ার্ক নাকি আগরতলা থেকে সম্প্রচারিত বিভিন্ন নিউজ চ্যানেল সম্প্রসারন করে না। অথচ ক্যাবল অপারেটররা নাকি ঐ সমস্ত চ্যানেল থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে বসে আছে বলে দাবি করেন সুদীপ রায় বর্মন। একই সাথে সুদীপ বাবুর ভাষনে উঠে আসে খোয়াইয়ের চাঞ্চল্যকর নিকুঞ্জ বর্মন হত্যা মামলার বিষয়টিও। তিনি বলেন খোয়াইয়ের মানুষ প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে ফেলেছে।
যদিও বর্তমানে বিরোধী দলের ভূমিকা হচ্ছে একটি গনতান্ত্রিক অধিকার। সংগঠনকে মজবুত করা এবং বর্তমানে ত্রিপুরা রাজ্যে বিভিন্ন ইস্যু রয়েছে। মুলত দ্রব্যমূল্য গ্রাম-পাহাড়ে ভয়ানক পরিস্থিতি। দ্রব্যমূল্য-রাস্তাঘাট, পানীয় জল, চিকিৎসা ব্যবস্থা সহ জনস্বার্থে রয়েছে বিভিন্ন আন্দোলন সূচী। সব বিরোধী দলের চলছে দলত্যাগ করিয়ে আনা কর্মী-সমর্থকদের আলোচনা। সব মিলিয়ে সরব হওয়া দরকার রাজ্যের সব বিরোধী দলের। ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে আজকের কর্মী সম্মেলন এবং পথ সভা শেষ করেন খোয়াই তৃনমুল নেতা মনোজ দাস সবাইকে শুভেচ্ছা জানান।