জাতীয় ডেস্ক ।। ফের জঙ্গি-নিশানায় দেশের উত্তর-পূর্ব। বড়ো-হানায় শুক্রবার অসমের কোকরাঝাড়ে আচমকা অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম বহু। পাল্টা গুলিতে খতম এক জঙ্গি। ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর, সেনার পোশাক পরে সন্দেহভাজন এনডিএফবি(এস) জঙ্গিরা বালাজান তিনালি বাজার অঞ্চলে এলোপাথারি গুলিবর্ষণ শুরু করে। গুলিতে প্রাণ হারান ১২ জন নিরীহ নাগরিক। জঙ্গি হামলায় আহত হয়েছেন আরও ২০ জন। অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, আততায়ীরা সংখ্যা ৮-৫ জন ছিল। সংবাদসংস্থা সূত্রের খবর, জঙ্গিরা একটি গাড়ি করে এসে গুলি চালাতে শুরু করে। আওয়াজ শুনে নিকটবর্তী এলাকা থেকে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সশস্ত্র বাহিনী। প্রায় ২০ মিনিট ধরে গুলি-বিনিময় চলার পর নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে খতম হয় হামলাকারী। ঘটনাস্থল থেকে একটি স্বয়ংক্রিয় একে-৪৭ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। খবর পেয়েই অতিরিক্ত বাহিনী পাঠানো হয়েছে ওই এলাকায়। সূত্রের খবর, ওই অঞ্চলে আরও জঙ্গি আত্মগোপন করে রয়েছে বলে অনুমান। গোটা এলাকায় চিরুনি-তল্লাশি শুরু হয়েছে। এদিনের হামলার নেপথ্যে বড়ো জঙ্গিদের দিকেই সন্দেহের আঙুল উঠেছে। অসম পুলিশের ডিজি মুকেশ সহায় জানান, হামলাকারী ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট অফ বড়োল্যান্ড (সংবিজিত) গোষ্ঠীর সদস্য। সূত্রের খবর, বড়ো জঙ্গি সংগঠনের এক কম্যান্ডারের বিরুদ্ধে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) চার্জশিট জমা দেওয়ায় প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দেয় জঙ্গিরা। সেকারণেই হামলা বলে অনুমান। হামলার পরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। ঘটনায় হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন। পাশাপাশি, দুঃখপ্রাকশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ট্যুইটারে নিহত ও আহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, অসম সরকারের সঙ্গে তারা ঘটনার ওপর নজর রেখেছে কেন্দ্র।এভাবে প্রকাশ্য দিবালোকে জনবহুল জায়গায় হামলা রাজ্যের নিরাপত্তাকে বড়সড় প্রশ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। এমনিতেই স্বাধীনতা দিবসের জন্য অসম-জুড়ে নিরাপত্তাকে আঁটোসাঁটো করা হয়েছে। কিন্তু, এদিনের হামলা বুঝিয়ে দিল, আসলে সবই বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো। এদিকে, সেনা মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস নিউটন জানান, অন্তত তিনজন জঙ্গি এই হামলায় জড়িত ছিল। সম্প্রতি, এনআইএ-কে হুমকিও দিয়েছিল এনডিএফবি(এস)। ফলে, কোকরাঝাড়ের ওপর হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা ছিলই। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তিনি এক হামলাকারীকে রেনকোটের মতো পোশাক পরে দেখেছেন। তাঁর দাবি, আরও ২ জন অটোতে বসেছিল। তবে, ওই প্রত্যক্ষদর্শীর মতে, ওই জঙ্গি এলোপাথারি গুলি চালায়নি। বরং, এক-একজনকে টার্গেট করছিল। হামলার ঘটনা খতিয়ে দেখছে কেন্দ্র। এদিন নয়াদিল্লিতে হামলার নিন্দা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে ঘটনার প্রাথমিক রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে কথা হয়েছে। হামলায় নিহতদের নিকটাত্মীয়কে ৫ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ১ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে অসম সরকার।