গোপাল সিং, খোয়াই, ০৭ আগষ্ট ।। খোয়াই ক্যাবল নেটওয়ার্ক এর ব্যবসায়ীদের মধ্যে ঝামেলা। ক্যাবল মালিক এবং সাব-মালিকদের নিজস্ব ব্যবসায়ী সমস্যার কারনে দেড় লক্ষাধিক জনগন ভোগান্তির স্বীকার। প্রায় তিন-চার দিন যাবত গ্রামীন এলাকায় এবং গত তিন দিন যাবত খোয়াই পুর এলাকা সহ বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ক্যাবল পরিষেবা থেকে বঞ্চিত জনসাধারন। বলতে গেলে ত্রিপুরা রাজ্যের সাথে একপ্রকার বিচ্ছিন্ন খোয়াইয়ের জনগন এ রাজ্যের কোন প্রকার সংবাদ দেখতে পারছেন না। পাশাপাশি বিনোদনের মাধ্যমটাই স্তব্ধ হয়ে পড়ায় জনমনে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। পুরো ঘটনায় কেউ মুখ খোলে কিছু না বললেও, ভেতরের খবর হচ্ছে ক্যাবল মালিক পক্ষ সাব-এজেন্টের কিছু লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ক্যাবল মালিক পক্ষের বক্তব্য যান্ত্রিক গোলোযোগ মানতে নারাজ সাব-মালিকরা। বাধ্য হয়ে গতকাল শহরের বেশ কিছু লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয় সাব-মালিকরা। এমন দূর্বিসহ পরিস্থিতির মধ্যে শনিবার রাত ৮টা নাগাদ ক্যাবল মালিক ও সাব-মালিকদের মধ্যে বৈঠক সংগঠিত হয়। বৈঠক চলে গভীর রাত অবধি। শেষে মিমাংসা হয় বলেও জানা যায়। অথচ প্রতিটি মাসেই বিভিন্ন জনপ্রিয় চ্যানেল দেখতে গিয়ে টিভির পর্দায় বকেয়া বিলের বিজ্ঞাপনই দেখতে হচ্ছে খোয়াইবাসীকে। তারপরও পরিষেবার নামে মিলছে হয়রানী। এর পেছনে ক্যাবল মালিক পক্ষের মধ্যে চরম মতানৈক্য রয়েছে বলেই গুঞ্জন রয়েছে। যদিও সরকারকে ট্যাক্স দিতে হয় না, বিদ্যুৎ বিল দিতে হয়না তারপরও মনোরঞ্জনের বিভিন্ন চ্যানেল যেমন দেখানো হয়না, তেমনি রাজ্যের কোন বৈদ্যুতিন নিউজ চ্যানেলই সম্প্রচার করেনা খোয়াই ক্যাবল নেটওয়ার্ক। তবে জনসাধারনকে রক্তচক্ষু দেখিয়ে প্রতি মাসে টাকা আদায় করা হচ্ছে ঠিকই। ট্যাক্স ফাঁকি, বিদ্যুৎ বিল ফাঁকি দিয়ে জনগনকে পরিষেবা প্রদান না করার পেছনে কোন অশুভ শক্তি কাজ করছে নাতো? প্রশ্ন জনমনে। যদি এমনটা না হয় তবে কেন দেড় লক্ষাধিক জনগনের সাথে এবং সরকারের সাথে এভাবে প্রতারনা করা হচ্ছে তাই বোঝে উঠতে পারছেন না জনসাধারন। সেই একই দশা রামচন্দ্রঘাট, আশারামবাড়ী এলাকাতেও। খোয়াই ক্যাবল নেটওয়ার্কের পরিষেবা তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। অথচ খোয়াই ক্যাবল নেটওয়ার্ক কল্যানপুর, তেলিয়ামুড়া, কমলপুরের কিছু কিছু এলাকায় পরিষেবা দিচ্ছিল। কিন্তু পরিষেবা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে খোয়াই ক্যাবল নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে। মর্জিমাফিক কাজ হচ্ছে বলেও অভিযোগ তুলছেন জনসাধারন। কিন্তু ক্যাবল নেটওয়ার্ক নিয়ে কোন প্রশ্নের উত্তর জানতে বারবার ক্যাবল অপারেটরদের কাছে ফোন করেও তাদের টিক্কির নাগাল পাচ্ছেনা জনসাধারন। প্রতি মাসে সঠিক সময়ে টাকা মিটিয়ে দিয়েও পরিষেবা থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত খোয়াইবাসী। প্রতিটি মাসেই বিভিন্ন জনপ্রিয় চ্যানেল দেখতে গিয়ে টিভির পর্দায় বকেয়া বিলের বিজ্ঞাপনই দেখতে হচ্ছে খোয়াইবাসীকে। বিশ্বস্ত সূত্রের খবর গত তিন বছর যাবত সরকারকে কোন প্রকার ট্যাক্স দেওয়া হচ্ছেনা। বিদ্যুৎ বিল তথৈবচ অবস্থায়। এবিষয়ে গত জুলাই মাসে এক সভায় সূদীপ রায় বর্মন সুভাষপার্ক বাজারে দাঁড়িয়ে চেঁচিয়ে বলে গেছেন, আগরতলার বিভিন্ন নিউজ চ্যানেল থেকে টাকা এনেও খোয়াইতে সম্প্রচার করা হয়না কেন তার কৈফিয়েত চাইতে হবে জনগনকেই। প্রশাসন কেন ধৃতরাষ্ট্রের ভূমিকায় সে বিষয়েও প্রশ্ন তুলেন তিনি। জনগন থেকে টাকা তুলে, তাদের রক্ত চক্ষু দেখিয়ে দিনের পর দিন কোন পরিষেবা দিচ্ছেনা খোয়াই ক্যাবল নেটওয়ার্ক। তারপরও প্রশাসন কেন মুখ বুজে আছে? প্রশ্ন জনগনেরও।