গোপাল সিং, খোয়াই, ১৬ আগষ্ট ।। সোমবার দিনটিতে বেশ কিছু মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গেল খোয়াইতে। একদিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় বছর তিরিশের পেশায় দিনমজুর এক ব্যাক্তির। অপরদিকে স্কুলে জাতীয় পতাকা নামাতে গিয়ে ৩৩০০ কেভি বিদ্যুৎ পরিবাহী তারের সংস্পর্শে মর্মান্তিক মৃত্যু হয় ৯ম শ্রেনীতে পাঠরত মেধাবী এক ছাত্রের। মোট পাঁচটি মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হল সোমবার দিনটি। সোমবার এসব ঘটনার মধ্যে এক ১৯ বছরের যুবকের খোয়াই জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হবার ঘটনাটিও কম রোমহর্ষক নয়। জানা যায় কুমাঘাট থেকে আগরতলা যাবার পথে বিক্রম হালদার নামে ১৯ বছরের কিশোরটি আগরতলাগামী একটি বাসে চড়ে। কিন্তু সুইখ্যাবাড়ী এলাকায় এসে প্রাকৃতিক কার্য করার জন্য বাস থেকে নেমে পড়ে বিক্রম। কিন্তু বাসের চালক ও কন্ডাক্টর তাকে সুইখ্যাবাড়ীর গভীর জঙ্গলে ফেলে রেখেই সেখান থেকে চম্পট দেয়। জঙ্গলে প্রাকৃতিক কার্য করতে গিয়ে বিক্রম দিশেহারা হয়ে পড়ে। সে পথ হারিয়ে ফেলে। কারন চারদিকে জঙ্গল আর পাহাড়। কিছুক্ষন পর সে পথ খুঁজে পায় এবং বাস তাকে না নিয়েই রওয়না দিচ্ছে দেখে বিক্রমও বাসের পেছন পেছন ছুটতে থাকে। চিৎকার করতে থাকে। কিছুক্ষন বাদে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। কিন্তু বাস চালক সেদিকে কর্ণপাতই করেনি। বিষয়টি নজরে আসে টিএসআর জওয়ানদের। খবর দেওয়া হয় চাম্পাহাওড় থানায়। থানা বাবুরা বিক্রমকে নিয়ে আসে খোয়াই জেলা হাসপাতালে। সেখানেই বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছে কুমারঘাটের ১৯ বছরের কিশোর বিক্রম মালাকার। সে নির্জন এলাকায় গিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ায় বাধে বিপত্তি। তার মধ্যে বাস চালক ও কান্ডাক্টরের বদান্যতায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠে বিক্রমের জন্য। ইতিমধ্যে পুলিশ বিক্রমের পরিবারের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়েছে। সেখানকার গ্রাম প্রধানের সাথেও যোগাযোগ হয়েছে। সে সুস্থ্য হয়ে উঠলেই তাকে তার বাড়ীতে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। TR02-1278 নম্বরের বাসটির খোঁজ চালানো হচ্ছে। যে বাসের চালক ও কন্ডাক্টর এমন অমানবিক কাজ করেছে যার ফলে একটি ১৯ বছরের কিশোর মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এই কিশোরটি মানসিক ভারসাম্য হারিয়েও ফেলতে পারতো। এর জন্য দায়ী কে হতো ? বর্তমানেও যে সে সম্পূর্ন সুস্থ্য হয়ে উঠেছে এমনটাও নয়। যদি এই ঘটনার প্রভাব তার ওপর পড়ে তবে এর দায়ভার কে নেবে? শীঘ্রই বাস চালক ও কান্ডাক্টরকে খোঁজে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন জনগন। যাতে এমন ঘটনা দ্বিতিয়বার ঘটনোর কেউ ধৃষ্টতা না করতে পারে।