খোয়াইয়ের প্রয়াত বিধায়কের অসম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন হচ্ছে, উদ্বোধনের অপেক্ষায় আধুনিক শৌচালয়ের

toiletগোপাল সিং, খোয়াই, ১৩ সেপ্টেম্বর ।। আধুনিক খোয়াই। খোয়াই এখন জেলার নাম। খোয়াই শহর এবং শহরতলী বিভিন্ন জেলা থেকে আগত মানুষজনের অনেকটাই চেনা-জানা। খোয়াই শহরের উপর দিয়ে নিত্যদিনই চলাচল করছেন হাজারো মানুষ। কিন্তু খোয়াই শহরে অধিকাংশ স্থানেই নেই মহিলাদের জন্য কোন শৌচালয়। তাই শহরে এসে অনেক মহিলাকেই বিপাকে পড়ে ক্ষোভ উগড়ে দিতে দেখা যায়। বিষয়টি প্রতিনিধির গোচরে আসতেই বরাবর সাংবাদ মাধ্যমে তুলে ধরা হয়। এরপরই খোয়াইয়ের বিধায়ক সমীর দেবসরকারের উদ্যোগে খোয়াই নৃপেন চক্রবর্তী এভিন্যুতে খোয়াই-রাধানগর সড়কের পাশে একখানা শৌচালয় নির্মান কাজ শুরু হয়। প্রয়াত বিধায়ক সমীর দেবসরকার জ্বলন্ত সমস্যা নিয়ে গঠনমুলক সমালোচনা সংক্রান্ত সংবাদের প্রশংসা করতেন এবং সেই সমস্যা নিরসনে তৎক্ষনাত উদ্যোগ গ্রহন করতেন পাশাপাশি সেই সংবাদগুলো তিনি নোট করে নিতেন। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রকাশিত প্রতিনিধির অধিকাংশ সংবাদের তথ্য নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে হাজির হয়ে কর্মকর্তাদের সামনে তথ্যগুলি তুলে ধরতেন।
খোয়াই-রাধানগর সড়কের পাশে নির্মিত শৌচালয়টিও এসমস্ত সংবাদেরই ফসল। মহিলাদের জন্য শৌচালয় নির্মানের বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করেই বিধায়ক সমীর দেবসরকার তখন তৎপর হন। খোয়াই-রাধানগর সড়কের পাশে এসে দাঁড়ায় কৈলাসহর, ধর্মনগর, কুমারঘাট, আমবাসা, কমলপুর থেকে দূরপাল্লার যাত্রীরা। পুরুষদের বিশেষ অসুবিধা না হলেও মহিলাদের প্রাকৃতিক কাজ করতে ভীষন সমস্যার মুখে পড়তে হতো। এরপরই বিধায়ক সমীর দেবসরকার তৎপরতার সাথে একটি ‘আধুনিক শৌচালয়’ নির্মান করার পরিকল্পনা গ্রহন করার পাশাপাশি দ্রুত গতিতে এই শৌচালয়ের নির্মান কাজ সম্পন্ন করার কথা বলেন। পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য আলাদা-আলাদাভাবে সুন্দর একটি শৌচালয় নির্মানের কাজও যথারীতি শুরু হয়। কিন্তু গত মে মাসে খোয়াই প্রতিনিধির একটি সংবাদে ফের একবার নতুন করে ভাবনা-চিন্তা শুরু করেন বিধায়ক সমীর দেবসরকার। সংবাদে প্রকাশিত হয়েছিল যে নির্মিতব্য শৌচালয়ের প্রবেশ পথে একটি মাত্র দরজা। মহিলা-পুরুষ একই দরজা দিয়ে প্রবেশ করাটা নিরাপদ নয়। জাগরন পত্রিকাটি পড়ার পরই তিনি সেখানে ছুটে যান এবং কাজ দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। সেই সাথে দুটি প্রবেশ পথ করার নির্দেশ দেন। গত ২৮শে সেপ্টেম্বর আধুনিক খোয়াইয়ের রূপকার, বিধায়ক সমীর দেবসরকার প্রয়াত হয়েছেন। তবে বর্তমানে উনার সেই নির্দেশ মেনেই দুটি প্রবেশ পথ নিয়ে উদ্বোধনের জন্য সেজে-গুছে প্রস্তুত উনারই নামাঙ্কিত ‘আধুনিক শৌচালয়’টি। মহিলা-পুরুষদের পাশাপাশি শারীরিক প্রতিবন্ধীরাও যাতে করে শৌচালয়ে প্রবেশ করতে পারে সে ব্যবস্থাও করা হয়েছে। বুধবার এই আধুনিক শৌচালয়ের উদ্বোধন করবেন বিধায়ক পদ্মকুমার দেববর্মা। থাকবেন খোয়াই জিলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি বিদ্যুৎ ভট্টাচার্য্য সহ পুর পরিষদের কর্মকর্তারাও। এখন থেকে আধুনিক শৌচালয়ের সুবিধা পাবেন দূরপাল্লার যাত্রীরা। বিশেষ করে মহিলারা। নির্মান কাজ চলার সময়ই কৈলাসহর, ধর্মনগর, কুমারঘাট, আমবাসা, কমলপুর থেকে দূরপাল্লার যাত্রীরা ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন বিধায়ক সমীর দেবসরকারকে। এটাই সবচাইতে বড় পাওয়া খোয়াইবাসীর। উনার রেখে যাওয়া একটা অসম্পূর্ণ কাজ এবার সম্পন্ন হচ্ছে।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*