গোপাল সিং, খোয়াই, ০৪ নভেম্বর ।। খোয়াইতে প্রশাসনিক কাজকর্ম যেমন বর্তমানে লাটে উঠেছে, ঠিক তেমনিভাবে চিকিৎসা পরিষেবার নামে বিশেষ করে গরীব, শ্রমিক, মেহনতি মানুষের উপর অতিরিক্ত জুলুম চালাচ্ছে একশ্রেনীর অসাধু ব্যবসায়ীরা। উনারা কিছু হাতেগুনা কয়েকজন কিন্তু অতিরিক্ত আয়ে এবং কিছু লোক ম্যানেজ করে যেভাবে খুশি চালাচ্ছে চিকিৎসা ব্যবসা। ২রা নভেম্বরের রাতে খোয়াই গণকী এলাকার নিখিল দেবনাথের ১৩ বছর বয়সী মেয়ে মনতমা দেবনাথ জ্বরে আক্রান্ত হয়। প্রচন্ড জ্বরে শিশু কন্যাটি বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছিল। ৩রা নভেম্বরের সকাল ৮টা নাগাদ তাকে খোয়াই জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সকাল পর নাইট-ডিউটি শেষে নতুন ডাক্তার বাবুরা আসেন। তাই প্রাইভেট প্র্যাক্টিসে যাবার তাড়ায় কোনরকমভাবে দায়সারা ভাবে রোগী দেখে ছেড়ে দেন। একইভাবে প্রচন্ড জ্বরে আক্রান্ত ১৩ বছর বয়সী মনতমা’কেও দায়সারাভাবে চিকিৎসা করে বাড়ীতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বাড়ী যাবার পর পুনরায় শিশু কন্যাটির জ্বর বাড়তে থাকে এবং সে আবার অজ্ঞান হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে আবার গাড়ী করে জ্বরে আক্রান্ত শিশুটিকে টি.কে.ডি.কে. রোডে একটি প্রতিষ্ঠানে প্রাইভেট দেখানোর জন্য নিয়ে আসেন যেখানে মেডিসিন ডাক্তার বাবু বসেন। যেহেতু রোগীর পরিবার আগে টিকিট কাটেনি তাই ডাক্তার বাবুর সাথে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। মনতমা’র দাদু একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। তিনি হাতজোড় করে অনুরোধ করে বলেন একটু আমার নাতনিকে দেখাতে দিন। তিনি এমনও বলেন যারা লাইনে দাঁড়িয়ে আছে প্রয়োজনে সবার পায়ে ধরেই অনুরোধ করবেন যাতে উনার নাতনিকে ইমার্জেন্সি দেখানোর সুযোগ দেওয়া হয়। ঘটনার সবটাই ডাক্তার বাবু চেম্বারে বসে বসে শুনলেন কিন্তু এগিয়ে আসেননি। উক্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের এমন দূর্ব্যবহারে নিরাশ হয়ে যান ভদ্রলোক এবং বলতে থাকেন তবে হয়তো আমার নাতনিকে আর বাঁচানোই যাবে না। সেই মুহুর্তে একজন সহৃদয় ব্যাক্তি এগিয়ে এসে বলেন, হাসপাতালের সামনে একজন ডাক্তার বসে আছেন, আপনি তাড়াতাড়ি সেখানে যান। সঙ্গে সঙ্গে ভদ্রলোক উনার নাতনিকে নিয়ে সেখানে চলে যান এবং ডাক্তার বাবুর প্রচেষ্টায় বর্তমানে ১৩ বছরের অসুস্থ্য শিশুটি ভালই আছে। অথচ সবসময় টি.কে.ডি.কে. রোডে ঐ প্রতিষ্ঠানের প্রতি নানান অভিযোগ উঠছে। গরীব মানুষদের বিভিন্ন কায়দায় বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা, বেশী ওষুধ দিয়ে জনগনকে সর্বশান্ত করে দিচ্ছে। বর্তমান খোয়াই জেলা হাসপাতাল এবং বিভিন্ন ফার্মেসিতে জেলা হাসপাতালের ডাক্তার এবং রাজ্যের ও বহি:রাজ্যের ডাক্তার এনে বিভিন্ন কায়দায় জনগনকে সর্বশান্ত করা হচ্ছে, নাজেহাল করা হচ্ছে। অথচ জেলা হাসপাতালে যেসব ডাক্তার বাবুরা আছেন যদি একটু মনযোগ দিয়ে হাসপাতালে শ্রম দিতেন তবে গরীব, শ্রমিক, মেহনতি মানুষরা ঠিকই বেঁচে যেত। একটু মানবিক দিক চিন্তা করে অপ-কর্মসংষ্কৃতি থেকে বাঁচাতে প্রশাসন তৎপর হওক, এমনটাই দাবি জনগনের। একশ্রেনীর জনগন জেলা হাসপাতাল বা প্রাইভেট না দেখালেও বাদ বাকি বিশাল সংখ্যায় জনসাধারন রয়েছেন যারা জেলা হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল তাদের কথা চিন্তা-ভাবনায় রেখে হাসপাতালে সুষ্ঠু পরিষেবা চালু করার দাবি জানিয়েছেন খোয়াইয়ের আপামর জনসাধারন।