একের পর এক বটবৃক্ষ ধ্বংশ খোয়াইয়ে

treeগোপাল সিং, খোয়াই, ১০ নভেম্বর ।। গাছ লাগান প্রাণ বাঁচান, একটি গাছ একটি প্রাণ। খোয়াই জেলায় প্রায় দুইশত বছর কিংবা একশত বছর পুরনো অনেক গাছ মানুষের উপকারে এসেছে। কিন্তু সেই উপকারের পরিনাম ভাল হয়নি। খোয়াইতে একের পর এক বটবৃক্ষ প্রশাসনের উদ্যোগে ধ্বংশ হয়ে যাচ্ছে। যেমন সুভাষপার্ক বাজার, মহারাজগঞ্জ বাজার, বেহলাবাড়ী বাজার সহ নানান জায়গার বটবৃক্ষগুলি একে একে কেটে সাফ করা হচ্ছে। এই বটবৃক্ষগুলো প্রাচীনকালে লাগানো হয়েছিল যেন দূর-দূরান্ত থেকে গ্রাম-পাহাড়ের জনগন শহরে এসে এই বটবৃক্ষের ছায়াতলে বিশ্রাম নিতে পারেন। অনেক মানুষ মালামাল নিয়ে এই বটবৃক্ষগুলোর নীচে ঘুমিয়েও পড়তেন। শুধু বটবৃক্ষের কথা নয়। শহরে এবং গ্রাম-পাহাড়ে রাস্তার পাশে বা বাজারগুলোতে বিভিন্ন গাছ কারনে অকারনে ধ্বংস করা হচ্ছে।
এমনই এক বটবৃক্ষের কাহিনী এই ছবিতে গেঁথে রইল আজ। এই বটবৃক্ষের সংক্ষিপ্ত জীবন কাহিনীও রয়েছে। এই বটবৃক্ষের ভেতরে রয়েছে একটি ক্ষেজুর গাছের অংশবিশেষ। কারন বটবৃক্ষের আগে এখানে ছিল একখানা খেজুর গাছ। ছোট একখানা বটের চাড়া এতে জন্ম নেয়। ধীরে ধীরে বটবৃক্ষটি বড় হতে থাকে এবং আস্ত খেজুর গাছটাকে গ্রাস করে ফেলে। আজ যখন বটবৃক্ষটি কাটা হয় তার ভেতর সেই ক্ষেজুর গাছটির অংশবিশেষ দেখা যায়। ৭০ বছর পুরনো খেজুর গাছের স্মৃতি নিজের অভ্যন্তরে গ্রাস করে রাখা বটবৃক্ষটি নিজেই আজ অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলল। অথচ একসময় এই বটবৃক্ষের নীচে ত্রিপুরা রাজ্যের নেতা কর্মীরাও বিশ্রাম নিয়েছেন। জ্যোতি বসু, ই-এম-এস নামুদ্রিপাত, নৃপেন চক্রবর্তী, দশরথ দেব, সমীর দেবসরকার সহ বর্তমানে যারা নেতা থেকে বিধায়ক সবাই এই বটবৃক্ষের ছায়াতলে বসেছেন। এলাকাবাসীর সেবাও করে গেছে এই বটবৃক্ষটি। কিন্তু গাছটিকে বাঁচাতে কোন মাষ্টার প্ল্যান বা বাজেট নেই। তবে ধ্বংস করার জন্য পুরসভা এবং পূর্ত্ত দপ্তর টাকা খরচ করতে উঠে পড়ে লেগেছেন। ঠিকেদারকে বরাত দেওয়া হয়েছে।
হয়তো শহরের প্রাচীনতম বটবৃক্ষগুলি আর থাকবে না। বটবৃক্ষগুলিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য কোন পরিকল্পনা হবে না। কিন্তু খোয়াই জেলায় একের পর এক প্রাচীন গাছগুলি ধ্বংসের কারন হয়ে সাক্ষী বহন করবে জনসাধারন। আর সদ ভাবনার অভাবের জন্য দায়ী থাকবে প্রশাসন, এমনটাই অভিমত জনগনের।
FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*