উপনির্বাচনের ভোট প্রচারে খোয়াইয়ে মূখ্যমন্ত্রী

cpim cpim-jpg1গোপাল সিং, খোয়াই, ১২ নভেম্বর ।। খোয়াই বিধানসভা উপনির্বাচনের আর মাত্র হাতেগুনা পাঁচদিন বাকি। উক্ত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শান্তি-সম্প্রীতি ও উন্নয়নের স্বার্থে বামফ্রন্ট মনোনিত সিপিআই(এম) প্রার্থী বিশ্বজিৎ দত্তকে বিপুল ভোটে জয়ী করার লক্ষ্যে শনিবার দুপুরে খোয়াই সরকারী দ্বাদশ শ্রেনী বিদ্যালয়ের মাঠে হল বিশাল নির্বাচনী জনসভা। ড. রঞ্জিত দেববর্মাকে সভাপতি করে শুরু হয় জনসভা। উক্ত জনসভার প্রধান বক্তা সিপিআই(এম) পলিটব্যুরো সদস্য তথা মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। সমাবেশের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গৌতম দাস, রাজ্য কমিটির সদস্য রঞ্জিত দেববর্মা, পদ্মকুমার দেববর্মা, সিপিআই(এম) তেলিয়ামুড়া মহকুমা সম্পাদক সুধীর সরকার এবং ২৫-খোয়াই বিধানসভা কেন্দ্রের সিপিআই(এম) প্রার্থী তথা সিপিআই(এম) খোয়াই জেলা সম্পাদক বিশ্বজিৎ দত্ত।
উদ্বোধনী ভাষন রাখেন এডিসি চেয়ারম্যান তথা সিপিআই(এম) রাজ্য কমিটির সদস্য রঞ্জিত দেববর্মা। ত্রিপুরা বিধানসভার প্রাক্তন মুখ্য সচেতক তথা ২৫-খোয়াই বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক সমীর দেবসরকারের অকাল প্রয়াণে এই কেন্দ্রে উপ-নির্বাচন হতে যাচ্ছে। তাই উনার অসম্পূর্ণ কাজকে সমাপ্ত করতে সিপিআই(এম) প্রার্থীকে বিপুল ভোটে জয়ী করার আহ্বান জানান তিনি। অপরদিকে বিধায়ক পদ্মকুমার দেববর্মাও বাম বিরোধী দলগুলিকে ভোট না দিয়ে সিপিআই(এম) প্রার্থীকে বিপুল ভোটে জয়ী করার আহ্বান জানান।
খোয়াই কেন্দ্রের বাম প্রার্থী বিশ্বজিৎ দত্ত বলেন, প্রগতির লড়াইকে আরও শক্তিশালী করার জন্য প্রয়াত বিধায়ক তথা বন্ধু সমীর দেবসরকার এবং তিনি একসাথে অন্যান্য বাম নেতৃত্বদের নিয়ে যে লড়াই শুরু করেছিলেন, সেই লড়াইকে অব্যহত রাখতে জনগনের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন প্রয়াত বিধায়ক সমীর দেবসরকার নিজের চিন্তা চেতনা এবং নিজের বুদ্ধিমত্তা দিয়ে বামফ্রন্ট সরকারের উন্নয়নমুলক কর্মসূচীকে খোয়াইয়ের বিভিন্ন স্থানে রূপায়িত করে নয়া ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। আগামী দিনে এই উন্নয়নমুলক কাজ যা খোয়াইবাসীর গর্ব সেটা যেন ম্লান হয়ে না যায় সেদিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিলেন বামফ্রন্ট মনোনিত সিপিআই(এম) প্রার্থী বিশ্বজিৎ দত্ত।
এদিকে সমাবেশের প্রধান বক্তা, সিপিআই(এম) পলিটব্যুরো সদস্য তথা মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার উনার ভাষনে বলেন, এই উপনির্বাচনের ফলাফল সরকারের উপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাব বিস্তার করবে এমনটা মনে করার কোন কারন নেই। কিন্তু তারপরও এই নির্বাচনকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শ্রমিক-কৃষক-ক্ষেতমজুর-দিনমজুর তাদের মুখে হাসি ফুটাবার জন্য সামর্থের সীমাবদ্ধতার মধ্যে দাঁড়িয়ে যেকাজ এই সরকার করছে এবং যে কাজের মধ্য দিয়ে আগের ইউপিএ সরকার ও বর্তমান বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার তাদের একটা বিকল্প শুধু ত্রিপুরার জন্য নয় সারা দেশের সামনে উপস্থিত করছে, দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করবার চেষ্টা করছে, বর্তমান সরকারের যে জনবিরোধী নীতি তার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে তার পরিবর্তনের জন্য যেমন বলছে এবং পরিবর্তনটা কি রকম তার বিকল্প ত্রিপুরা সরকারের জনমুখী যে কার্যকলাপ সেটাকে উপস্থিত করে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষন করার চেষ্টা করছে, এ সম্পর্কিত বিষয়ে খোয়াই মানুষ কি ভাবেন? কি তাদের বিশ্লেষন? এটা কিন্তু এই উপনির্বাচনের মধ্য দিয়ে, ভোট দানের মধ্য দিয়ে বুঝতে, উপলব্ধি করতে সুবিধা হবে। সেদিক থেকে এই উপনির্বাচন তাৎপর্যমন্ডিত, গুরুত্বপূর্ণ।
মুখ্যমন্ত্রী উনার ভাষনে মুলত রাজ্যের বামফ্রন্ট সরকারের উন্নয়নমুলক দিকগুলি তুলে ধরেন। সেই সাথে রেগা, শিক্ষা সহ বিভিন্ন বিষয়ে উন্নয়ন কাজে কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া পুরস্কারের কথাও বলেন। উনার সমগ্র ভাষনে বিজেপির প্রতি তীব্র আক্রমন করেন এবং তৃণমুল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সুর চড়া করেন। পশ্চিম বাংলায় পরিবর্তনের নামে অন্যায়, অত্যাচারের ব্যাক্ষা দেন। পাশাপাশি দলীয় কর্মীদের আত্মতুষ্টিতে না থাকার জন্য বারবার জানান। সেইসাথে বিজেপি’র দাদন বিলির প্রসঙ্গ টেনে জনগনকে চোখ-কান খোলা রেখে প্রহরীর মত কাজ করার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী। সবশেষে এই কেন্দ্রের সিপিআই(এম) প্রার্থী বিশ্বজিৎ দত্তকে বিপুল ভোটে জয়ী করার আহ্বান জানান। এদিনকার নির্বাচনী সমাবেশে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কাতারে কাতারে মানুষ মিছিল করে সমাবেশ স্থলে মিলিত হন। মহিলাদের উপস্থিতি ছিল লক্ষনীয়।
FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*