গোপাল সিং, খোয়াই (আগরতলা থেকে ফিরে), ০৭ ডিসেম্বর ৷৷ আগরতলা জিবি হাসপাতালের এক এক করে যদি প্রত্যেক পরিসেবার করুন কাহিনী তুলে ধরা যায় তবে হিন্দু ধর্মের রামায়ন থেকেও বড় কাহিনীর রূপ নেবে। বাংলায় একটি প্রবাদ আছে, যার সর্ব্ব অঙ্গে ঘাঁ, মলম কত ক্ষতস্থানে লাগানো যায় বর্তমানে প্রশাসনের ! সংবাদ মাধ্যমে একের পর এক তথ্যনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করা হলেও উনারা কর্ণপাত করেন না। ধৃতরাষ্ট্রের ভূমিকায় অভিনয় করাই ভাল। অথচ আগেকার সময় তথ্যনিষ্ঠ সংবাদের পেপার কাটিং এর বিশেষ ভূমিকা ছিল। কিন্তু বর্তমানে সরকারকে খুশি রাখতে আমলা-কর্মচারীরা ধৃতরাষ্ট্র হয়ে থাকতেই পছন্দ করেন।
এদিকে ধারাবাহিকভাবে জিবি হাসপাতালে পরিসেবার নামে গরীব-শ্রমিক-কৃষক-মেহনতি মানুষের উপর অবৈজ্ঞানিকভাবে রিগিং করা হচ্ছে, আর সবজেনেও নিশ্চুপ প্রশাসন। শুধু কিছু অর্থ কামাইয়ের জন্য হাজার হাজার গরীব মানুষের উপর চলছে অরাজকতা। এমনই এক অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে জিবি হাসপাতালের তথাকথিত কেন্টিনে। আগরতলা জিবি হাসপাতালের কেন্টিনের পরিসেবা নিয়ে উঠছে প্র্রশ্ন। গরীব মানুষের সাথে প্রতিদিন উচিত টাকা নিয়েও দূর্ব্যবহার করা হচ্ছে। নিম্নমানের খাবার, মান্ধাতা আমলের খাবারের থালা ব্যবহার করা হচ্ছে। ক্যাবিনের দূরাবস্থা তো রয়েছেই। রান্না নিম্নমানের। মহিলা থেকে পুরুষ সবার সাথে বিশ্রি ভাষার কথা বলা হচ্ছে। মনে হয় যেন বিনা পয়সায় জনগনকে সেবা করছেন। সকাল বেলা প্রত্যেক রোগীকে একটু চা, গরম জল সহ খাবার জিনিষ দিতে ক্যান্টিনে গিয়ে লম্বা লাইন ধরে নিতে হয় গরম জল। পানীয় জল নিতে লাগে ১০ টাকা। অথচ জল নিম্নমানের কোম্পানীর। নিম্নমানের খাবার জিনিষ। আপনি লিকার চা চাইলে আপনাকে দুধের চা ধরিয়ে দেওয়া হবে। ‘দাদা দুধের নয়, লিকার চা বলেছিলাম। হবে না, যা দিয়েছি তাই নিতে হবে। লাইন ছুড়ুন।’ এভাবেই হয়রানী করা হয় ক্যান্টিনে। এছাড়া খুচরো পয়সা ফেরত অনেকেই পাননা। তারপর আপনি রোগীকে বেডে একা রেখে লাইন ধরেছেন, দেখা যায় লাইন ছাড়াই গার্ড সহ অন্যরা এসে জিনিষ নিয়ে চলে যাচ্ছে। অথচ সারা রাত না ঘুমিয়ে রোগীর জন্য পাহাড়া দিয়ে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করে নানাভাবে আক্রান্ত রোগী সহ পরিজনরা।
নিম্নমানের খাবার। এত নিম্নমানের যে কোনরকম কিছু গলায় দিয়ে জীবন বাঁচানোর উপক্রম। এছাড়া কোন উপায় নেই। জনগন জানালেন, এর মধ্যেও রহস্য রয়েছে। গ্রামের সহজ-সরল মানুষদের নিম্নমানের খাবার দিয়ে বাকি খাবারগুলো অর্থ্যাৎ প্রত্যেক রোগীর বা পরিজনের অবশিষ্ট খাবারগুলো রাত ১২টার পর গাড়ী করে শুকরের ফার্মে বিক্রি করা হয়। যার ফলে একটি মিল থেকে দুইবারে টাকা আদায় হয়। কি আশ্চর্য্য পরিসেবার নমুনা। জানা যায় আগরতলা জিবি হাসপাতালের কেন্টিনের টেন্ডার পেতে অনেক জল ঘোলা করতে হয় এবং অনেক রাঘব-বোয়াল জড়িত। একটু সদ ইচ্ছা নিয়ে তদন্ত করলে গরীব অংশের মানুষের সব তথ্যমুলক অভিযোগগুলোর সত্যতা প্রকাশ্যে আসবে। তাই শীঘ্রই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন রাজ্যের গরীব-শ্রমিক-কৃষক-মেহনতি মানুষরা।