মহিলার অস্বাভাবিক মৃত্যু

hghগোপাল সিং, খোয়াই, ০৮ ডিসেম্বর ৷৷ খোয়াই থানাধীন পূর্ব গনকী গ্রাম পঞ্চায়েতে এক মহিলার অস্বাভাবিক মৃত্যু। বৃহস্পতিবার সাত সকালে স্নান করতে গিয়ে ঐ গৃহবধূ দীর্ঘ সময় পরও ফিরে না আসায়, খোঁজ করতে গিয়ে ছড়ার জলে ছটপট করতে দেখা যায় মহিলাকে। মহিলাকে হাসপাতালমুখী করা হলেও কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। তবে মহিলার অস্বাভাকি মৃত্যু নিয়ে চাঞ্চল্য গোটা এলাকায়।
ঘটনার বিবরনে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল আনুমানিক ৯টা নাগাদ পূর্ব গনকী গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা পুষ্পরানী দে (৩৩) স্নান করতে যান। কিন্তু দীর্ঘ সময় পরও তিনি ফিরে না আসায় শুরু হয় খোঁজাখুজি। পরে লালছড়া এলাকায় ছড়ার মধ্যে পড়ে থাকতে দেখা যায় উনাকে। ছড়ার ভেতর পরে ছটপট করছিলেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে অগ্নিনির্বাপক দপ্তরে খবর দেওয়া হয়। দমকল কর্মীরা পৌছে পুষ্পরানী দে’কে খোয়াই জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। কিন্তু হাসপাতালে পৌছার আগেই নাকি মহিলার মৃত্যু হয়েছে বলে জানান কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।
এদিকে মৃতার মায়ের কাছ থেকে জানা যায়, গত এক বছর ধরে স্বামী প্রদীপ দে’র সাথে যোগাযোগ নেই পুষ্পরানীর। উনার দুই ছেলে। বড় ছেলের বয়স ১৫ বছর। সে শারীরিক প্রতিবন্ধী। দ্বিতীয় ছেলের বয়স ৭ বছর। স্বামীর সঙ্গে প্রায়শ:ই নাকি ঝামেলা লেগেই থাকত। স্বামী প্রদীপ দে বিগত এক বছর যাবত কোন আর্থিক সাহায্যই নাকি করেনি। দুই ছেলে নিয়ে প্রায় মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেন পুষ্পরানী।
অন্যদিকে খোয়াই জেলা হাসপাতালের সেবক-সেবিকারা জানালেন, গত ৪-৫ দিন যাবত পুষ্পরানী দে খোয়াই জেলা হাসপাতালে ভর্ত্তি ছিলেন। এই সময়ে উনার বাড়ী থেকে বা এলাকা থেকে কেউই খোঁজখবর করেনি। সেবক-সেবিকারা মিলেই ওষুধপত্র দিয়ে সাহায্য করেছিল পুষ্পারানী দে’কে। গত পরশু দিনই খোয়াই জেলা হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ীতে গিয়েছিলেন তিনি। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় বিকলাঙ্গ ছেলে এবং ছোট্ট শিশুকে নিয়ে বিপাকে পরে মানসিক অবসাদে ভোগছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন এই অবস্থায় কাটিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে ছড়ার জলে স্নান করতে গিয়েছিলেন পুষ্পরানী। স্নান করতে গিয়ে আর বাড়ী ফিরলেন না। এখন কি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা গেলেন নাকি অন্য কোন কারন উনার মৃত্যুর পেছনে দায়ী তা এখনই বলা সম্ভব হচ্ছেনা। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে এলেই খুলবে সব জট। কিন্তু এখন পুষ্পরানীর ১৫ বছর বয়সী বিকলাঙ্গ ছেলে ও ৭ বছরের ছোট্ট শিশুটির ভাগ্যের চাকা কোন দিকে মোড় নেবে? পুষ্পার বাপের বাড়ীতেও দিন আনি দিন খাই অবস্থা। এখন স্থানীয় পঞ্চায়েত যদি উদ্যোগী হয়ে সরকারীভাবে এই দুটি অবোঝ শিশুর মাথার উপরের আকাশটাকে একটু রঙীন করার চেষ্টা করে তবে শুধু জীবন রক্ষাই নয়, দুটি অবোঝ শিশুর ভবিষ্যতটাও সুদৃঢ় হতো বলেই মনে করছেন এলাকাবাসী। তাই এই বিপিএল পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য স্থানীয় পঞ্চায়েত ও রাজ্য সরকারের দৃষ্টি করেছেন এলাকার জনসাধারন।
FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*