নয়াদিল্লি, ৩১ অক্টোবর, (এবিপি নিউজ) ।। শুক্রবার প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর শক্তিস্থলের স্মৃতিসৌধে তাঁর মৃত্য়ুবার্ষিকী পালন অনুষ্ঠানে গরহাজির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।কংগ্রেসের উদ্যোগে আয়োজিত ইন্দিরার প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, উপ রাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি, সনিয়া গাঁধী ও রাহুল গাঁধী সমেত কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব এলেও প্রধানমন্ত্রী আসেননি, তাঁর সরকারের তরফেও কেউ উপস্থিত ছিলেন না।এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে কংগ্রেস।
নরেন্দ্র মোদি আজকের দিনে সর্দার বল্লভভাই পটেলের ১৩৯-তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনে ঐক্যের জন্য দৌড় কর্মসূচির সূচনা করলেও প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীর সৌধে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা না জানানোয় বা সরকারি স্তরেও কেউ ইন্দিরাকে শ্রদ্ধা জানাতে শক্তিস্থলে না আসায় ক্ষুব্ধ কংগ্রেস নেতা মণীশ তেওয়ারি বলেন, ইন্দিরা গাঁধী দেশের জন্য বেঁচেছেন, প্রাণ দিয়েছেন।তাঁর আত্মবলিদানকে সম্মান জানানো সব সরকারের কর্তব্য হওয়া উচিত
প্রসঙ্গত, অতীতে অটলবিহারী বাজপেয়ি প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ইন্দিরার মৃত্যুদিনে শক্তিস্থলে দাঁড়িয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে যেতেন।কিন্তু এবার ব্যতিক্রম ঘটালেন মোদি।যদিও তিনি এদিন সকালে টুইট করেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গাঁধীর পূণ্য তিথিতে দেশবাসীর সঙ্গে তাঁকে আমিও স্মরণ করছি।রাজপথে বল্লভ ভাই পটেলের জন্মবার্ষিকী পালনের অনুষ্ঠানেও তিনি আজকের দিনটি যে ইন্দিরার মৃত্যুদিন, সেকথা উল্লেখ করেন।
তবে মোদি সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ইন্দিরা স্মরণে তেমন উদ্যোগ না নেওয়ায় বিজেপিকে কটাক্ষ করেছে কংগ্রেস।রাজ্যসভার বিরোধী শিবিরের সহকারি নেতা আনন্দ শর্মা বলেন, দেশের জন্য যাঁরা জীবন দিয়েছেন, বিশেষ করে ইন্দিরা গাঁধি, ।যিনি দেশের সংহতির জন্য নিহত হয়েছেন, তাঁদের প্রতি বিজেপি অশ্রদ্ধা দেখাচ্ছে, সংকীর্ণ, পক্ষপাতমূলক
মনোভাবের পরিচয় দিচ্ছে।শর্মা আরও বলেন, পরিহাসের কথা হল, মোদি ঐক্যের জন্য দৌড়-এর সূচনা করলেন, অথচ আমাদের সময়ের সবচেয়ে মহান নেতা-নেত্রীদের একজনের চরম বলিদানের কথা মুখেও আনলেন না! বিজেপিকে কটাক্ষ করে তিনি আরও বলেন, পটেল ছিলেন এমন এক কংগ্রেসি যিনি তত্কালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে শাসক দলের আদর্শগত পরিচালক আরএসএসকে নিষিদ্ধ করেছিলেন।
পাল্টা বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নাইডু বলেন, প্রত্যেক নেতা-নেত্রীর ইতিহাসে বরাদ্দ জায়গা থাকে।এটা অস্বীকার করার কোনও প্রশ্নই নেই।কাউকে ছোট করার বযাপারও নেই।তবে সর্দার পটেল ছিলেন দেশের সর্বোচ্চ নেতাদের একজন যিনি ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী, দেশের সংহতির নেতা, যাঁকে রোল মডেল হিসাবে দেখা উচিত।বিজেপি মুখপাত্র নলিন কোহলি বলেন, মোদি তো প্রয়াত নেত্রীকে টুইটারে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।কংগ্রেস বারবার এসব তুচ্ছ ব্যাপারে রাজনীতি করছে।নিজেদেরই প্রশ্নের মুখে ফেলছে ওরা।তাহলে ওরা কি দেশের ঐক্য, সংহতি বজায় রাখার বিরোধী কংগ্রেস কি নেহরু-গাঁধী পরিবারের চোখ দিয়ে ইতিহাসের প্রতিটি বিষয়কে দেখতে চায়?