গোপাল সিং, খোয়াই, ২৫ জানুয়ারী ৷৷ এই ছবিটি ভারতবন্ধের বা ত্রিপুরা বন্ধের নয়। এই ছবিতে ফুটে উঠছে ২০০৬-২০১৭ পর্যন্ত তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকা শেডঘরগুলিতে বেকারদের আশা-ভরসা। অথচ রাজ্যের বেকার সমস্যা দূরীকরনের লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন মার্কেট স্টল খোলে দিচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকারের ভাবনা হল সবাইকে চাকুরী প্রদান করা সম্ভব নয়, তবে যেন বেকাররা ব্যবসায় মনোনিবেশ করতে পারে। এজন্যই বিভিন্ন পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এই ভাবনায় জল ঢেলে প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত খোয়াই কোহিনুর কমপ্লেক্সের প্রায় ৭০ শতাংশ দোকানঘর খালি পড়ে রয়েছে বছরের পর বছর ধরে। অথচ ২০০৬ সালে যখন কোহিনুর কমপ্লেক্সটির উদ্বোধন হয়েছিল তখন উদ্বোধক তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রি বলেছিলেন, বেকারদের মধ্যে যেন দোকান ঘরগুলি বন্টন করা হয় এবং পুরনো ব্যবসায়ী এবং বেকারদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু খোয়াই সুভাষপার্ক স্থিত ত্রিতল বিশিষ্ট কোহিনুর কমপ্লেক্স এই বন্ধ দোকানঘরগুলির কারনে জনশূন্যতার আড়ালে ব্লক এলাকার নেশা কারবারী, হেন্ডিং, কোরাক্স বিক্রেতা সহ বিভিন্ন সমাজদ্রোহীদের আস্তানায় পরিনত হয়েছে। এই অত্যাধুনিক কমপ্লেক্সের নীচ তলায় দোকান ঘর খালি নেই। সেখানেও এক মালিক ২ খানা দোকানঘর পেয়েছে। সৌভাগ্যক্রমে সেখানেও কিছু দোকান বন্ধ থাকে এবং ২০ ভাগ অব্যবসায়ীদের দখলে। যারা প্রকৃত ব্যবসায়ী তারা পাননি দোকানঘর। বর্তমানে যেখানে কোহিনুরের মতো ত্রিতল কমপ্লেক্স গড়ে উঠেছে সেই জায়গাটিও প্রয়াত নৃপেন চক্রবর্তী মাত্র ৪৫ হাজার টাকায় ক্রয় করেছিলেন। যে জায়গার দাম সে সময়ে কয়েক লক্ষ টাকা ছিল এবং বর্তমানে কয়েক কোটি টাকা। তখনকার সময়ে এই জায়গার মালিক নলীনি মোহন বিশ্বাস ছিলেন খুবই সরল প্রকৃতির মানুষ। প্রয়াত নৃপেন চক্রবর্তী এবং সুভাষপার্ক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা মিলে নলীনি মোহন বিশ্বাসকে অনেক বোঝান। সরকার বেশী দামে জায়গা কিনতে পারবেন না এবং আপনি যদি প্রায় দান হিসাবেই সামান্য কিছু টাকার বিনিময়ে জমি দেন তবে কয়েকশত দোকান হবে এবং এতে গরীব পরিবার সংসার চালাতে পারবে। আপনার জমি, আমাদের চেষ্টায় বেঁচে যাবে গরীব মানুষগুলো। যদিও কোহিনুর কমপ্লেক্সের নিচের তলায় গরীব দোকানী জায়গা পায়নি। সুবিধা ভোগীরাই দখল নেয়। যারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী উনারা অবহেলায় রয়ে গেছেন। বর্তমানে পুর পরিষদ এমনভাবে অগ্রীম এবং চিহ্নিত করে দোকান ভিট দিতে চাইছেন তাতে ১০ বৎসরে কেন আগামী আরও ১০ বৎসরেও খালি দোকানঘরগুলি খোলা যাবে না। কিছু চিটফান্ড কোম্পানীকে দেওয়া হয়েছিল দোকান ঘর, কিন্তু তারাও পলাতক। এভাবে একসময়ে জননেতা প্রয়াত নৃপেন চক্রবর্তী ও নলীনি মোহন বিশ্বাসের মতো সরল মানুষের দেখা স্বপ্ন এবং বর্তমানে রাজ্য সরকারের সুচিন্তাধারায় জল ঢেলে বছরের পর বছর ধরে এভাবেই ত্রিতল বিশিষ্ট খোয়াই কোহিনুর কমপ্লেক্সের দ্বিতল ও ত্রিতলে বহু দোকানঘরগুলি বেকারদের এবং প্রকৃত গরীব ব্যবসায়ীদের আশা পূরনে ব্যর্থতার নজির গড়ছে। জনগন এর পেছনে দূরদর্শিতার অভাবকেই দায়ী করছেন এবং দাবি জানাচ্ছেন যাতে স্টল বন্টন প্রক্রিয়া শিথিল করে প্রকৃত গরীব বেকার এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে এই দোকানঘরগুলি বন্টন করে দেওয়া হয়।