
তবে খোয়াইতে দীর্ঘ বছর যাবত সিনেমা হল না থাকায় একসময়কার স্বনামধণ্য ‘সপ্তপ্রদীপ’ সিনেমা হলের অন্যতম কর্ণধার চন্দন বণিক মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। ১৯৮০ থেকে ২০০০ সাল অবধি খোয়াইতে চুটিয়ে ব্যাবসা করা অন্যতম সিনেমা হলটি এরপর একসময় বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তী সময় সিনেমা হলের জায়গাও বিক্রি হয়ে যায়। তখন থেকেই চন্দন বণিক বিভিন্ন সময় একটি সিনেমা হল চালু করার বিষয়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন। এমনকি মুখ্যমন্ত্রীরও দ্বারস্থ হয়েছেন। খোয়াইতে উপ-নির্বাচন উপলক্ষ্যে প্রকাশ্য জনসভা শেষে সেদিন মুখ্যমন্ত্রীর সাথে সরাসরি কথা বলেছিলেন খোয়াইতে একটি মাল্টিপ্লেক্স হল চালু করার বিষয়ে। কয়েক মাসের মধ্যেই দীর্ঘ বছরের স্বপ্ন পুরন হতে চলছিল চন্দন বাবুর। খোয়াইয়ের ত্রিতল বিশিষ্ট কোহিনুর কমপ্লেক্সের উপর তলায় শীঘ্রই মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা হলের কাজ শুরু হবার কথা। আজ ছিল চুক্তি স্বাক্ষরের দিন। কিন্তু সাফল্যের চাবিকাঠি নিজ হাতে তুলে নেওয়ার আগেই অত্যন্ত মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন চন্দন বণিক। সেই সাথে শেষ হল দীর্ঘ বছরের দৌড়ঝাঁপ। আর্থিক সংকটের মুখেও ক্ষীন আশা বুকে নিয়ে বয়ে চলা চন্দন বাবুর অন্তিম ইচ্ছা পূরন হবে। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হতে তিনি দেখবেন না।
খোয়াই পুর এলাকার দূর্গানগরের বাসিন্দা তিনি। তার পরিবারে স্ত্রী এবং দুই মেয়ে রয়েছে। বড় মেয়ে বিবাহিতা। ভাই রয়েছে…। আজ সবাই শোকগ্রস্ত। চোখের জলে বুক ভাসাচ্ছে গোটা পরিবার। কিন্তু চন্দন বণিকের মৃত্যুর কারন নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সকলেই। দ্বারস্থ হয়েছেন আইনের। মৃতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত থেকেই নিখোঁজ ছিলেন চন্দন বাবু। দক্ষিন সিঙ্গিছড়া শ্রীনগর পাড়ায় মুল সড়কের পাশে বুধবার সকালে প্রাত:ভ্রমনকারীদের নজরে পড়ে একটি মৃতদেহ। খবর পৌছে খোয়াই থানায়। ছুটে যান পুলিশ কর্তারা। পীচ ঢালাই সড়কের পাশে কাঁচা ড্রেনের মধ্যে পড়েছিল মৃতদেহের উপরের অংশ। পাশেই ছিল একটি সাইকেল। দেখলে মনে হবে সাইকেল থেকে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ড্রেনের মধ্যে পড়েছেন। তাছাড়া তিনি প্রায়শ:ই নেশাগ্রস্থ অবস্থায় থাকতেন। যদিও চন্দন বাবুর পরিবারের অভিযোগ, তাকে খুন করা হয়েছে। এদিকে খোয়াই থানার পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা গ্রহন করে তদন্ত শুরু করেছে। খোয়াই জেলা হাসপাতাল থেকে ময়না তদন্তের পর বুধবার দুপুরেই মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।