জাতীয় ডেস্ক ৷৷ পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে মোর্চার বিক্ষোভে পাহাড় অশান্ত। এবার সেই দাবিকে সমর্থন জানিয়েই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে চিঠি দিলেন সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিং! যা পাহাড়ের অশান্তিতে উস্কানি বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকদের একাংশ। বুধবার রাজনাথ সিংহকে পাঠানো চিঠিতে পবন চামলিং লিখেছেন, গোর্খাদের দেশভক্তির ইতিহাস অত্যন্ত গৌরবোজ্জ্বল। দার্জিলিংয়ের বাসিন্দাদের দাবি পূরণ হলে তাদের সেই দেশভক্তির দীর্ঘ প্রত্যাশিত প্রতিদান দেওয়া সম্ভব হবে। পৃথক গোর্খাল্যান্ড তৈরি হলেই স্থায়ীভাবে শান্তি ও সমৃদ্ধি আনা সম্ভব হবে। আর পাহাড়ে অশান্তি কমলে তাতে সিকিমেরও লাভ হবে। স্বাভাবিকভাবেই পাশের রাজ্য সিকিমের মুখ্যমন্ত্রীর এই চিঠি মোর্চাকে অক্সিজেন জুগিয়েছে। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সহ সম্পাদক বিনয় তামাঙ্গ বলেন, চামলিঙের মন্তব্য প্রশংসনীয়। বিভিন্ন রাজ্যে আন্দোলন চলছে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে। কিন্তু, এক রাজ্যের বিষয়ে কোন এক্তিয়ারে পাশের রাজ্য হস্তক্ষেপ করতে পারে? পশ্চিমবঙ্গ সরকার যেখানে আন্দোলনের কড়া সমালোচনা করছে, সেখানে গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সমর্থন করে সিকিমের মুখ্যমন্ত্রীর এক্কেবারে কেন্দ্রকে চিঠি দেওয়া কি অশান্তিতে উস্কানি নয়? চামলিঙের এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘আমরা সহিষ্ণুতার পরিচয় দিতে চাই’। দার্জিলিং নিয়ে অন্য রাজ্য দায়িত্ববোধের পরিচয় দেবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। সিকিমের এই হঠাৎ করে গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সমর্থনের বিষয়টি বাঁকা চোখে দেখছেন অনেকেই! কারণ, যে কারণে কাশ্মীরে অশান্তি নয়াদিল্লির কাছে অত্যন্ত উদ্বেগের, সেই একই কারণে জ্বলন্ত দার্জিলিংও কেন্দ্রের মাথাব্যাথার কারণ হতে পারে! তার কারণ, ভৌগোলিক অবস্থান। সিকিমের সঙ্গে চিনের সীমান্ত রয়েছে। আবার দার্জিলিংয়ের সঙ্গে নেপালের সীমান্ত রয়েছে। দার্জিলিংয়ের ক্ষেত্রে নেপালের ভূমিকা বরাবরই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, পশ্চিমবঙ্গের মোট জনসংখ্যার মাত্র ১.২ শতাংশ মানুষ নেপালিভাষী হলেও দার্জিলিঙে সংখ্যার হিসাবে নেপালিরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। দার্জিলিং নিয়ে নেপালের আগ্রহও দীর্ঘদিনের। বর্তমানে নেপালের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক খুব একটা ভাল নয়। কিন্তু, চিনের সঙ্গে এখন নেপালের বেশ দহরমমহরম! তাই দার্জিলিং বেশিদিন অস্থির থাকলে, নেপালের হাত ধরে চিন যে তাতে উস্কানি যোগাবে না, এমন নিশ্চয়তাই বা কে দিতে পারে?