জাতীয় ডেস্ক ৷৷ মুম্বইয়ে গভীর রাতে ভয়ঙ্কর অগ্নিকাণ্ডে শ্বাসরোধ হয়ে মারা গেলেন অন্তত ১৪জন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ধোঁয়ায় অন্তত ১২ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, তাঁদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মধ্য মুম্বইয়ের লোয়ার পারেল এলাকার কমার্শিয়াল হাব সেনাপতি বাপট মার্গের এই চত্বরে বহু ঝাঁ চকচকে রেস্তোঁরা রয়েছে, শেষ কয়েক বছরে যেগুলির মধ্যে অনেকগুলিই হয়ে উঠেছে নাইট ক্লাব। এছাড়াও রয়েছে বার, পাব, গেমিং জোন ইত্যাদি, সপ্তাহশেষে এই এলাকায় প্রচণ্ড ভিড় হয়। ওয়ান অ্যাবাভ এমনই একটি রেস্তোঁরা, রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ সেখানে অন্তত ৫০ জন ছিলেন। খুশবু মেহতা নামে এক মহিলার জন্মদিনের পার্টি চলছিল, পার্টির থিম ছিল অল উওম্যান। ফলে সকলেই ছিলেন মহিলা। আগুন লাগতে ওপরের বাঁশ ও কাঠের ছাউনি ভেঙে পড়লে তাঁরা ছুটে গিয়ে টয়লেটে ঢুকে পড়েন, সেখানে জল পাওয়া যাবে ভেবে। তারপর ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। তখনই তাঁদের ধোঁয়ায় শ্বাসরোধ হয়ে যায়। খুশবুও বাঁচেননি। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, আগুন লাগে রেস্তোঁরায় সর্ট সার্কিট হয়ে, তারপর তা দ্রুত ছড়িয়ে যায় মোজোস বিস্ত্রো ও লন্ডন ট্যাক্সি নামে আর দুটি রেস্তোঁরায়। আধঘণ্টারও কম সময়ে গোটা বহুতল গ্রাস করে নেয় আগুনের শিখা। জানা গিয়েছে, এই মোজোস রেস্তোঁরার অন্যতম মালিক গায়ক শঙ্কর মহাদেবনের ছেলে সিদ্ধার্থ। প্রায় ৩ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু ততক্ষণে ধোঁয়ায় দম আটকে মারা গিয়েছেন অন্তত ১৪ জন, তাঁদের মধ্যে ১১ জন মহিলা। এছাড়া অনেকেরই অবস্থা ভাল নয়, তাঁরা মূলত ভুগছেন শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায়। তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে কিং এডওয়ার্ড মেমোরিয়াল হাসপাতালে। দমকল মনে করছে, এখানকার বেশিরভাগ রেস্তোঁরায় অগ্নিনির্বাপণ সংক্রান্ত নিয়মকানুন মানা হয় না, সে কারণেই এত তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে যায় আগুন। সংশ্লিষ্ট রেস্তোঁরায় আগুন নেভানোর কোনও ব্যবস্থাই ছিল না বলে জানা গিয়েছে, তার মালিকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন। এই বহুতলে মিরর নাউ, জুম, টাইমস নাউয়ের মত বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেলের অফিস রয়েছে। আগুনে সেগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে বন্ধ রয়েছে সম্প্রচার। দিনের বেলা এই আগুন লাগলে প্রাণহানি, ক্ষয়ক্ষতি আরও বেশি ঘটত বলে মনে করা হচ্ছে।