আরতির মধ্যদিয়ে মহাবীর জন্মজয়ন্তী অনূষ্ঠানের সূচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী

mahabirআপডেট প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৯ মার্চ ৷৷ জৈন ধর্মের প্রবর্তক ভগবান মহাবীরের ২৬১৭তম জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠান উদযাপনের সূচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। শুক্রবার রাজধানীর প্যালেস কম্পাউন্ডের জৈন মন্দিরে আয়োজিত এই উৎসবে মুখ্যমন্ত্রী মহাবীর’র মূর্তীতে পূজা ও আরতি করেন। এখানে জৈন মন্দিরে প্রতিষ্ঠাতা হীরা লাল জৈন মুখ্যমন্ত্রীকে শাল দিয়ে সংবর্ধনা জানান। মহাবীর জন্মজয়ন্তী অনূষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ভগবান মহাবীরের অহিংসা ও পরিগ্রহকে পাথেয় করে সকলকে মিলিতভাবে এগিয়ে এসে সত্য, অহিংসা ও সকলের জন্য কল্যাণময় ও সমৃদ্ধশালী ত্রিপুরা গড়ার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, মহাবীর হলেন ২৪শ তথা সর্বশেষ জৈন তীর্থঙ্কর (শিক্ষক দেবতা)। তিনি বর্ধমান নামেও পরিচিত। মহাবীরকেই সাধারণত জৈন ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা মনে করা হয়। যদিও ২৩শ জৈন তীর্থঙ্কর পার্শ্বনাথ যে ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন সেই বিষয়ে যথেষ্ট যুক্তিগ্রাহ্য প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। খ্রিস্টপূর্ব ৫৯৯ অব্দে অধুনা ভারতের বিহার রাজ্যের অন্তর্গত একটি প্রাচীন রাজপরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন মহাবীর। ৩০ বছর বয়সে তিনি আধ্যাত্মিক জ্ঞানলাভের উদ্দেশ্যে গৃহত্যাগ করেন এবং বস্ত্রসহ যাবতীয় জাগতিক সম্পত্তি পরিত্যাগ করে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন। পরবর্তী সাড়ে ১২ বছর মহাবীর গভীর ধ্যান অনুশীলন করেন এবং কঠোর তপস্যা করেন। এরপর তিনি ‘কেবলী’ (সর্বজ্ঞ) হন। পরবর্তী ৩০ বছর তিনি জৈন দর্শন শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়া পরিভ্রমণ করেন। মহাবীর জীবনের মান উন্নত করার জন্য ‘অহিংসা’ (প্রত্যেক জীবের প্রতি কায়মনোবাক্যে হিংসা বর্জন), ‘সত্য’ (কার্যে ও বাক্যে সত্যাচরণ), ‘অস্তেয়’ (চুরি না করা), ‘ব্রহ্মচর্য’ (ইন্দ্রিয়-সংযম) ও ‘অপরিগ্রহ’ (সংসারে অনাসক্তি) – এই পাঁচটি ব্রত পালনের প্রয়োজনীয়তার কথা শিক্ষা দেন। মহাবীর’র প্রধান শিষ্য গৌতম স্বামী (ইন্দ্রভূতি গৌতম) তার উপদেশগুলো সংকলিত করেন। এগুলোকে আগম বলা হয়। এই আগম গ্রন্থগুলোর অধিকাংশই আজ আর পাওয়া যায় না। জৈনরা বিশ্বাস করেন, মহাবীর ৭২ বছর বয়সে মোক্ষ (জন্ম ও মৃত্যুর চক্র থেকে মুক্তি) লাভ করেছিলেন।
FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*