দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদ বিরোধী অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী শুক্রবার। দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিশ্ববাসী শুক্রবার নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে ম্যান্ডেলাকে স্মরণ করছে। বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে নেলসন ম্যান্ডেলা ফাউন্ডেশন।
স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল ৭টা ৫৬ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টা ৫৬ মিনিট) বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রের ঝংকারে শুরু হয়। ম্যান্ডেলার ৬৭ বছরের মানবসেবাকে স্মরণ করে ৬৭ সেকেন্ডের এ শব্দ আয়োজন করা হয়। এর পর পালন করা হয় ৩ মিনিটের নীরবতা।
এরপর প্রিটোরিয়ায় প্রার্থনা শেষে, ফুলেল শুভেচ্ছায় এই বিশ্বনেতাকে সম্মান জানান বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের বর্ষীয়ান নেতারা। দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় ক্রিকেট দল এবং রাগবি দলের মধ্যে একটি প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচেরও আয়োজন করা হয়েছে।
১৯৯৪ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট ছিলেন ম্যান্ডেলা। ১৯৯৩ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান। ২০০৪ সালে রাজনীতি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবসরে যান তিনি।
পাঁচ বছর প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করার পর তিনি স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ত্যাগ করেন। অবসর জীবনে তিনি মানবতা, শিক্ষা ও শান্তির জন্য নিজেকে নিবেদিত রাখেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী নেতা ও প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট অপরিসীম ত্যাগ ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বিশ্ব-রাজনীতিতে নিজের আসন করে নিয়েছিলেন। ভয়কে জয় করেই তিনি সামনে এগিয়েছিলেন। কালো মানুষের নেতা থেকে তিনি হন বিশ্বনেতা।
নেলসন ম্যান্ডেলা দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার স্বৈরশাসককে শুধু উচ্ছেদই করেননি; গণতন্ত্রকেও সুসংহত করেছিলেন। প্রায় এক শতাব্দীর দীর্ঘ জীবনকালের পুরোটাই কেটেছে মানবতার মুক্তির সংগ্রামে। ১৯৯৪ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অগ্রগতির ধারা সূচনা করে গেছেন।
কালো মানুষের মুক্তির জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে ২৭ বছর কারাবাস করেছেন মাদিবা। ম্যান্ডলোর কারাবাস শুরু হয় রবেন দ্বীপের কারাগারে। এখানে তিনি তার ২৭ বছররে কারাবাসরে প্রথম ১৮ বছর কাটান। জেলে থকার সময় বিশ্বজুড়ে তার খ্যাতি বাড়তে থাকে। দক্ষিণ আফ্রকিার সবচয়ে গুরুত্বর্পূণ কৃষ্ণাঙ্গ নেতা হিসেবে সারা বিশ্বে পরচিতি লাভ করেন।
২০১৩ সালের ৫ ডিসেম্বর ৯৫ বছর বয়সে জোহানেসবার্গের নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন ম্যান্ডেলা। মৃত্যুর মধ্য দিয়ে কঠোর উদ্যোমী এ অবিসংবাদীত নেতার অধ্যায় শেষ হতে পারে না। তাই ম্যান্ডেলাকে হারানোর এই দিনে তাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে বিশ্ববাসী।