পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের চলছে স্নায়ুযুদ্ধ। আর এ যুদ্ধের কারণ পাকিস্তানের পেশোয়ারে সেনাস্কুলে হামলার পর তালেবানদের সঙ্গে ওপরমহলের ফোনালাপ। এ ফোনালাপ ফাঁস হয়ে পড়ায় এ দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে।
জানা গেছে, হামলার পর তালেবানরা মোবাইলে জানতে চায়, অডিটারিয়ামে থাকা সব শিশুকে হত্যা করেছি, এখন আমরা কি করব? তাদের প্রতি নির্দেশ আসে, ‘সেনাবাহিনী আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করো। নিজেকে হত্যা করার আগে তাদেরকেও হত্যা করো।
এক নিরাপত্তা কর্মকর্তার সূত্র অনুসারে এটা ছিল আক্রমণকারীর সাথে তার নির্দেশদাতার শেষ কথোপকথন। বুধবার এ ফোনালাপ ফাঁসকে কেন্দ্র করে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে শুরু হয়েছে স্নায়ুযুদ্ধ।
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল রাহেল শরিফ আফগান কর্তৃপক্ষের কাছে হামলাকারী আবুজারের ও তার কমান্ডার ওমরের সাথে ফোনালাপ বিয়ষটি অবগত করতে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আফগানিস্তানে যাচ্ছেন।
ওমর এবং ওমর খলিফা নামে পরিচিত ওমর আজাদী পেশোয়ারের অঞ্চলের এক জ্যেষ্ঠ জঙ্গি। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে জানায়, এ ফোন কলটি আফগানিস্তানের নানপ্রাহার প্রদেশের নাজিয়ান জেলা থেকে করা হয়েছে। ফলে আফগান কর্তৃপক্ষকেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
তারা আরো জানায়, সাত সদস্যের জঙ্গির একটি দল স্কুলটিতে হামলা করে। এর মধ্যে পাঁচজন প্রশাসনিক ভবনের ভিতরে ছিল আর দুজন ছিল বাইরে। হামলাকারীরা দেয়াল টপকে ভেতওে ঢুকে অডিটারিয়ামে শিশুদের গুলি করে হত্যা করে।
সেখানে সেসময় প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে শিশুদের শিক্ষা দেয়া হচ্ছিল। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, এখন প্রশ্ন হলো হামলাকারীরা কি জানত যে মঙ্গলবার অনেক শিশুরা অডিটারিয়ামে থাকবে? তার মতে, এ নিহতের সংখ্যা আরো বেশি হত যদি হামলকারীরা জুনিয়র সেকশনে আক্রমণ চালাত।
উল্লেখ্য, ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের পেশোয়ারে সেনাবাহিনী পরিচালিত একটি স্কুলে তালেবান জঙ্গিদের হামলায় শিশুসহ ১৪১ জন নিহত হন। আহত হন আরো শতাধিক।
স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টায় জঙ্গিরা পেশোয়ার শহরের আর্মি পাবলিক স্কুলে হামলা চালায়। এ সময় সেখানে ৫শ’র বেশি শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা ছিলেন।
তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। টিটিপির মুখপাত্র মোহাম্মদ খোরাসানি এ হামলাকে সম্প্রতি পেশোয়ারের কাছে উত্তর ওয়াজিরিস্তানে তাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অভিযানের প্রতিশোধ বলে উল্লেখ করেছেন। – ডন.কম