গুজরাট, ২১ ডিসেম্বর ।। ভারতের গুজরাটে ১০০ খ্রিস্টাননকে হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) বিরুদ্ধে। দক্ষিণ গুজরাটের বালসাদের আর্নাই গ্রামে গত শনিবার ওই খ্রীষ্টানদের ধর্মান্তরিত করা হয়। এ খবর দিয়েছে এনডিটিভি।
ভিএইচপি’র পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ওই খ্রীষ্টান উপজাতীরা এর আগে হিন্দু ছিল। তারা ‘ঘর বাপসি’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আবারও হিন্দু ধর্মে ফিরে এলো।
ভিএইচপি’র পক্ষ থেকে গরিবদের প্রলুব্ধ করার মাধ্যমে এ ‘পুনর্ধমান্তর’ প্রক্রিয়া চালানোর দাবি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রমের মাধ্যমে এটা করা হয়, জোরপূর্বক নয়।
ভিএইচপি’র বালসাদ শাখার প্রধান অজিত সোলাঙ্কি বলেন, ‘খাবার বা শিক্ষার প্রলোভনের বিনিময়ে খ্রীষ্টানদের হিন্দুতে ধর্মান্তর করা হয়নি। আমরা সব খ্রীষ্টানকে হিন্দুতে ধর্মান্তর করার আগ পর্যন্ত এ প্রক্রিয়া চালিয়ে যাব।’
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ ধরনের স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রমের ক্ষেত্রে সরকারের কোনো ভূমিকা নেই।
গুজরাট সরকারের মুখপাত্র নীতিন প্যাটেল বলেন, ‘আমরা জোর করে ধর্মান্তরকরণের ব্যাপারে কোনো তথ্য পাইনি। যে কোনো ধর্ম পালনের ব্যাপারে সকলেই স্বাধীন।’
উপজাতীয় খ্রীষ্টানদের ‘পবিত্রকরণে’ ধর্মান্তরকরণের আগে ‘মহাযজ্ঞে’র আয়োজন করা হয়। এরপর সকলকে একটি করে ভগবত গীতা প্রদান করা হয়। এ সময় প্রায় তিন হাজার লোক সেখানে উপস্থিত ছিল বলে দাবি করা হয়েছে।
চলতি মাসের শুরুতে আগ্রার একটি বস্তির ৫৭ পরিবারের প্রায় ২০০ মুসলিমকে হিন্দুতে ধর্মান্তর করে আরএসএস’র (রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ) সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ধর্ম জাগরণ সমিতি ও বাজরাং দল। এ ঘটনায় দেশটির লোকসভা ও রাজ্যসভা উভয় কক্ষে সংসদ সদস্যদের তোপের মুখে পড়ে ক্ষমতাসীন বিজেপি।
সমালোচনার মধ্যে ওই ঘটনার হোতা নন্দকিশোর বাল্মিকীকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এরপর দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার দলের সংসদ সদস্যদের ‘লক্ষ্মণ রেখা’ অতিক্রম না করার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ২৫ ডিসেম্বর আলীগড়ে একই ধরনের কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, হিন্দুত্ববাদী দল হিসেবে পরিচিত বিজেপি’র প্রধান পরিকল্পনা প্রণয়নকারী হিসেবে বিবেচনা করা হয় আরএসএস’কে।