দেবজিত চক্রবর্তী, আগরতলা, ২১ ডিসেম্বর ।। বিশ্ব কবির স্বপ্নের ‘রাঙ্গা মাটির পথে যেদিন থেকে পীচ ঢালা শুরু হয়েছে সেই দিন থেকেই বদলে যেতে শুরু করেছে সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা গ্রাম গুলো’। তবে এখানে ইট, কাঠ, পাথরের শহরে যখন জীবন যন্ত্রনা তীব্র হয়ে উঠে তখন অনেকেই ছুটে যান আত্মীয় স্বজনের গ্রামের বাড়ীতে – প্রকৃতির অকৃপণ হাতে সাজানো গ্রামে পদার্পণ করে স্নিগ্ধ দীর্ঘশ্বাস – এতেই শহুরে জীবন যন্ত্রনার মুহূর্তেই উপশম। কালের দাপটে ছায়া সুনিবিড়, শান্তির নীড় গ্রাম অনেকটাই পাল্টে গেছে তবুও গ্রামেই আছে প্রান। শীতের মরশুমে গ্রাম শহরের প্রতিচ্ছবি একেবারেই ভিন্ন। শীত যখন শহুরে মানুষদের হাতে – পাতে মশলাদার খাবার গ্রামে গ্রামে গৃহস্থের ঘরে খেজুরের রসের তৈরী রস্না তৃপ্তির সুস্বাদু সমাহার তৈরীর ব্যস্ততা। কুঁয়াশার চাদরে গ্রামে এখনো দেখা যায় খেজুর গাছে ঝুলছে রসের হাঁড়ি। গ্রাম জুড়ে কোথাও রস নিয়ে কড়াকড়ি কোথাও বাতাসে ভেসে আসছে উনুনে বসানো রসের গন্ধ। হাই প্রোফাইল আর হাইটেকের যুগে খেজুরের রসকে কেউ কেউ প্রেষ্টিজ হ্যাম্পারের উপাদান বলতেই পারেন, রস নিয়ে রসালো গল্প কোনো লেখক লিখবেন না কারন পাঠককূল আদৌ পছন্দ করবেন কিনা সন্দেহ রয়েছে। তবে এখনো সূদুর গ্রামে রস আর রসের গল্প বেঁচে আছে স্ব-মহিমায়। খেজুর গাছে রসের হাঁড়ি এদেশের চিরিন্তন ঐতিহ্যের প্রতীক। আগ্রাসী আধুনিকতা হয়ত থাবা বসাবে কোনো একদিন রসের হাঁড়িতেও।