শীতকালে কারই বা ডায়েট করতে মন চায়? এই সময়টা সকলেই প্রাণ ভরে খেয়ে যান নানান সুস্বাদু খাবার৷ তবে শীতে ডায়েটের রেজিলিউশনটা নেওয়ার ভালো সময় জানুয়ারি মাস বা ডিসেম্বরের শেষটা।
কারণ তখনই তো নিউ ইয়ারের যাবতীয় পরিকল্পনা করার একেবারে আদর্শ সময়। আর এবারের শীতে মানে নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই চেষ্টা করুন ভুলভাল ডায়েটকে সরিয়ে রেখে শীতে আপনার জন্য সেরা খাবারটা বেছে নিতে।
১। লো কার্বোহাইড্রেট- অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট মানেই ওজন বাড়ানো৷ তাই চেষ্টা করুন ডায়েট চার্টে কার্বোহাইড্রেট যথাসম্ভব কম রাখতে৷আর এসময় তো খুব বেশি এক্সারসাইজ করা হয় না, ফলে হু হু করে ওজন বাড়ার সমস্যা থাকে৷ কমলালেবু, আপেল, আঙুর, ব্লুবেরির মেতা লো গ্লাইসেমিক ফল অর্থাৎ যাতে শর্করার মাত্রা কম, সেগুলোকেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে প্রতিদিন খান৷প্রোটিনের সঙ্গে শাক সব্জিও বাদ দেবেন না ডায়েট তালিকা থেকে৷
২। কার্বোহাইড্রেট একেবারে বাদ দেবেন না- অনেকেরই শীতকালে একটা প্রবণতা থাকে কম সময়ে বেশি রোগা হওয়া৷ আর তাই খাদ্যতালিকা থেকে তারা কার্বোহাইড্রেট প্রায় ছেঁটেই ফেলেন৷ খান না কোনও সবুজ শাক সব্জিও৷ এমনটা কিন্তু ভুলেও করবেন না৷ মনে রাখবেন ডায়েটিং মানে না খেয়ে থাকা নয়, চারবেলার খাবারের মধ্যে ঠিকঠাক সামঞ্জস্য রাখা৷
৩। লো ক্যালেরি- কম ক্যালোরিযুক্ত খাবার খান৷ তবে খেয়াল রাখবেন ক্যালোরি যাতে বার্ন হয়৷মানে ভাত, পায়েস, চিকেন যাই খান না কেন খাওয়ার পর শুয়ে বসে থাকবেন না৷ হাঁটাহাঁটি, সিঁড়ি ভাঙা বা ব্রিস্ক ওয়াকিং করুন৷ কিন্তু ডায়েট চার্ট থেকে পুরোপুরি যদি ক্যালোরি যুক্ত খাবার বাদ দিয়ে দেন, তাহেল এনার্জি লেভেলও অনেকটাই কমে যাবে৷
৪। ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণ- ঠিকঠাক ডায়েটিং করার এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ শর্ত৷অনেক প্রাপ্তবয়স্ক লোকজনই দৈনন্দিন খাদ্যতালিকা ১০০০ ক্যালোরির নীচে রাখেন৷ তাতে হয়তো সাময়িকভাবে এদের ওজন দ্রুত কমে, কিন্তু একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর এদের ওজন কমা বন্ধ হয়ে যায়৷কারণ তাদের শরীরের মেটাবলিজম সিস্টেম ঠিকঠাক কাজ করে না৷প্রতিদিন অন্তত ১২০০ ক্যালোরির ডায়েট চার্ট মেনে চলা উচিত৷
৫। পছন্দের খাবার- ডায়েটিং করছেন বলেই পছন্দের খাবারকে জীবন থেকে অলবিদা জানালে চলবে না৷পছন্দের খাবার অল্প অল্প করে খান৷ আর রান্নায় তেল বা স্টার্চের বদলে বয়েলড বা গ্রিলড সব্জির ব্যবহার করুন৷
৬। বিকল্প খাবার- হয়েতা আপনি এমন কোনও প্রিপারেশন খেতে ভালোবাসেন যা আপনার শরীরের পক্ষে আদৌ ভালো নয়৷ তাহলে খুঁজে বার করতে হবে তার বিকল্প৷ কীভাবে? চকোলেট ব্রাউনির বদলে খান লো ফ্যাট, লো সুগার ব্রাইনি বা পাইনাপেল পাইয়ের বদলে লো ফ্যাট অ্যাপেল পাই৷অথবা মাখন দিয়ে সুস্বাদু আলু সেদ্ধর বদলে নুন আর গোলমরিচ দিয়ে ফুলকপি সেদ্ধ৷ এতে স্বাদবদলও হবে, আপনার মনও ভরবে৷
৭। স্যুপ ডায়েট- শীতের ডায়েট স্যুপ ছাড়া ভাবাই যায় না৷ স্যুপ একদিকে শরীর যেমন ভালো রাখে, তেমনই পুষ্টিগুণেও সমৃদ্ধ৷ তবে টেস্টি না হলে পুরোটাই মাঠে মারা যাবে৷ তাই সেদ্ধ চিকেন আর গোলমরিচ দিয়ে স্যুপ বানিয়ে খান৷ তবে চেডার চিজ, মাখনের মতো জিনিসগুলো স্যুপ থেকে বাদ দিন৷ ওজন নিয়ন্ত্রমে থাকবে৷খাবারে রুচিও আসবে৷
৮। জুস চললেও সবসময় নয়- জুস খেয়ে দিনকতক আপনি চালাতেই পারেন৷ তবে প্রতিদিন শুধু এটা খেলে কোনও লাভ হবে না৷ কারণ চিনি বা সুগারফ্রি যা দিয়েই জুস বানান না কেন, তাতে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকেই৷ আর দিনের পর দিন শুধু ফলের রস খেলে ফ্যাট আর প্রোটিনের ঘাটতি পড়ে শরীরে৷ তাই সবদিক বজায় রেখে রান্নায় ব্যবহার করুন নারকেল তেল, অ্যাভোকাডো, ওমেগা ত্রি ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত মাছ৷
৯। বেকড ফুড- এটা ঠিক ডায়েট না হলেও শীতে বেকড ফুডের জনপ্রিয়তা থাকে তুঙ্গে৷কিন্তু বেকড কুকিজ, কেক, পাই খেয়ে গেলে শীতে শুধু ওজনই বাড়ে না, তা শরীরে আরও অনেক সমস্যা নিয়ে আসে৷