টাইম ম্যানেজমেন্টে আপনি কি খুব খারাপ ? আর সেজন্যই বোধ হয় ঠিকমতো প্ল্যানিং করে না চলার জন্যই দিনের অনেকটা সময় আপনি স্রেফ আর স্রেফ কী করব ভেবে কাটান৷
মানে সময়ের সদ্ব্যবহার করতে পারেন না! হয়তো কী করব আর কী করবেন না ভাবতে ভাবতেই আপনার মূল্যবান একটা দিন চলে যায়।
কিন্তু কয়েকটি টিপস মেনে চললে সমাধান হয়ে যাবে , ফলে অযথা অপচয় হবে না সময়েরও৷ফলে দেখবেন দিনটাকেও অনেক বড় মনে হচ্ছে আর দিনের শেষে অতিরিক্ত ক্লান্তিও আপনাকে গ্রাস করবে না৷
১) সকালে উঠেই ঠিক করে নিন সারাদিনে কী কী কাজ আপনি করবেন৷ ফলে সারাটা দিন আপনার মসৃণভাবে চলবে, আপনার সময়ও বাঁচবে৷ তবে লিস্টটা খুব বড় করবেন না৷ কারণ আপনি তো সুপারম্যান নন যে সব কাজ একদিনেই সেরে ফেলতে পারবেন৷কারণ কাজের তালিকা যতই দীর্ঘ হবে ততই আপনার কাজের গুণগত মান কমতে থাকবে৷
২) জরুরি কাজগুলো প্রথম দিকে সেরে হাল্কা বা কম গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো পরের দিকে রাখুন৷কেননা দিনের শুরুতে আমাদের মধ্যে প্রচুর এনার্জি থাকে, যা ক্রমশ দিন বাড়ার সাথে সাথে কমে যেতে থাকে৷
৩) সারাদিনে শুধু তিনটে গুরুত্বপূর্ণ কাজকে আপনার তালিয়াকয় রাখুন৷ এর মধ্যে একটি কাজ যেন এরকম হয়, যেটা আপনি অনেকদিন ধরেই করব করব বলেও করছিলেন না৷
যেমন ধরুন নতুন কোনো ভাষা শিখছেন আপনি, চেষ্টা করুন প্রতিদিন অন্তত ২০টা করে শব্দ শিখতে৷ সময় রয়েছে বলেই পুরোটা একদিনে করার চেষ্টা করবেন না৷ কারণ এর বেশি করতে গেলেই সমস্যায় পড়বেন৷
৪) লাঞ্চব্রেকে আপনি কী করেন? প্রতিদিন আপনার প্রিয় টেলিভিশন ধারাবাহিকের রিপিট টেলিকাস্ট দেখেন বা অফিসের ব্রেক নিয়ে টুক করে বিল জমা দেওয়া বা ব্যাঙ্কের কাজের মতো ব্যাপারগুলোকে প্রায়োরিটি লিস্টে রেখে সেগুলোকে সেরে রাখেন৷খাওয়ার দিকেও হয়তো বা খুব একটা নজর দেন না৷
নতুন বছর থেকে চেষ্টা করুন রুটিন বদলাতে৷ লাঞ্চের পর মিনিট দশেকের ব্রেক নিয়ে চেষ্টা করুন একটু হাঁটাহাঁটি করতে বা সিঁড়ি ভাঙতে৷ শরীর আর মন দুটোই ফ্রেশ থাকবে৷
৫) যাদের সাথে আপনার মূল্যবান সময়ের অনেকটাই জুড়ে থাকে, মানে যাদের সাথে মেলামেশা করলে আপনি কোনও কাজই ঠিকমতো করতে পারেন না, সেইসব লোকজনের সঙ্গ যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন৷অযথা সোশ্যাল মিডিয়ায় চ্যাট করে বা সহকর্মীদের সঙ্গে গালগল্প করে সময় নষ্ট করবেন না৷
লাঞ্চের আধঘণ্টার অন্তত মিনিট পনেরো নিজের জন্য রাখুন৷বাড়ি থেকে যদি কাজ করেন তাহলে প্রতি আধঘণ্টা অন্তর টিভি দেখার অভ্যেস থাকলে ছাড়ুন৷ সময় বাঁচবে৷
৬) বসে বসে আকাশকুসুম বা বাজে কোনও কিছু ভেবে সময় নষ্ট করবেন না৷ অনেক সময় আমরা তুচ্ছ, সাধারণ জিনিসকে অতিরিক্ত ভেবে অসাধারণ করে তুলতে চাই৷ সেটা হলে সময় আর মস্তিষ্ক দুটোরই অপচয় হবে৷ বাড়িতে কোনও সময় যদি এভাবে কাটান, তাহলে বেকার বসে না থেকে গ্রসারির লিস্টটা করে নিলেন, কিংবা আলমারি গোছালেন, সপ্তাহের প্রয়োজনীয় ফোনকলগুলোর কয়েকটা সেরে ফেলতে পারেন৷ সময়ের পূর্ণ সদ্ব্যবহার হবে৷
৭) বর্তমান সমাজের আর একটা বড় সমস্যা সোশ্যাল মিডিয়া৷ অনেকেই এতে ড্রাগের নেশার মতো আক্রান্ত৷কাজের পাশে পাশে ফেসবুক পেজ না খুলে রাখতে পারলে অনেকেই যেন কাজে উৎসাহ পান না৷ফলে সময় তো নষ্ট হয়, কাজের গতিও বাড়ে না৷
তাই কাজের ফাঁকে ফাঁকে না করে সারাদিনে অন্তত তিনটে সময় ঠিক করুন ফেসবুক করার জন্য৷ সময়ের অপচয় আপনি নিজেই বাঁচাতে পারবেন৷ যেদিন কোনও জরুরি কাজ, ই-কনফারেন্স বা মেলের উত্তর দেওয়ার থাকবে সেদিন না হয় ফেসবুক সারাদিনে একবারই করলেন৷
তাতে কাজটা ঠিকমতো হবে, আর একদিনে আপনি অসামাজিকও হয়ে যাবেন না৷
সূত্র: ওয়েবসাইট