কলকাতা, ১১ জানুয়ারী ।। বেশ অভিনব এক প্রস্তাব। মাসে মাত্র চার হাজার টাকা দিলেই মিলবে রান্নাবান্নাসহ ঘরের প্রতিদিনকার কাজের সমাধান। একটু ভেবেচিন্তে পঙ্কজ ভার্গব দেখলেন, এ অফার গ্রহণ করা যেতে পারে। সংসারের এত টুকিটাকি কাজকর্ম, কে আর দেখেশুনে রাখে।
নানাদিক বিবেচনা করে বিজ্ঞাপনের প্রস্তাব গ্রহণ করলেন ভারতের দিল্লির জ্যোতি নগরের পঙ্কজ ভার্গব। কিন্তু শেষ রক্ষা তার হয়নি। বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে দু’ঘণ্টায় তিনি ৩৩ হাজার রুপি আক্কেল সেলামি দিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, ইন্টারনেটে একটি সংস্থা বিজ্ঞাপন দেখে বাড়ির নিত্যদিনের কাজের জন্য একজন লোক ঠিক করার সিদ্ধান্ত নেন পঙ্কজ। বিজ্ঞাপনে দেয়া নম্বরে ফোন করে তিনি নিয়ম-কানুন জানেন।
সংস্থার তরফ থেকে তাকে জানানো হয়, ২৫ হাজার টাকা তাকে আগাম দিতে হবে। সঙ্গে ২ মাসের অগ্রিম বেতন। সব মিলিয়ে ৩৩ হাজার টাকা। যদি কাজ পছন্দ না হয় তবে টাকা ফেরত দেয়া হবে, বা নতুন লোক ঠিক করে দেয়া হবে।
ফোনের ওপার থেকে পঙ্কজকে আরো বলা হয়, যাদের কাজ করার জন্য পাঠানো হয় প্রত্যেকেরই পুলিশ ভেরিফিকেশন করা রয়েছে। দেখেশুনে সব ঠিক মনে হওয়ায় তিনি রাজি হয়ে যান।
পরের দিন কাঞ্চন কুমারী নামে বছর ২৫-এর এক মহিলাকে নিয়ে বাড়িতে আসেন ওই সংস্থার এক পুরুষ কর্মী। কাজ পছন্দ হওয়ায় ওই কর্মীকে কথা মতো ৩৩ হাজার টাকা দেন পঙ্কজ।
তিনি জানান, এক রকম নিশ্চিন্ত হয়েই তিনি পরিবারের সঙ্গে বাড়িতে বসেছিলাম। ঘণ্টা দু’য়েক থাকার পর একটু আসছি বলে মহিলা বাড়ি থেকে ওই যে বের হলেন, সন্ধে গড়িয়ে যাওয়ার পরও তিনি ফিরলেন না।
পঙ্কজ তখন সংস্থার নম্বরে ফোন কওে দেখেন নট রিচেবেল। দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে তিনি পুলিশে খবর দেন। পুলিশও কাজে নেমে পড়ে। চেহারার বর্ণনা দিয়ে খোঁজ-খবর শুরু হয়। দিন কয়েক বাদে ফের একই ধরনের একটি বিজ্ঞাপন ফের দেখতে পান পঙ্কজ।
তবে সংস্থার ঠিকানা থেকে ফোন নম্বর সবই আলাদা ছিল। পুলিশের পরামর্শ মতো সেখানে অন্য পরিচয় দিয়ে ফোন করেন তিনি। কিন্তু ফোনের ওপারে গলাটি শুনে বুঝতে পারেন, আগে যে লোকটির সঙ্গে কথা বলেছিলেন, তার গলার সঙ্গে বেশ মিল রয়েছে।
পুলিশের বলা ঠিকানায় ডাকেন তাদের। সেখানেই বামাল সমেত গ্রেপ্তার হন অভিনব এ পার্টি। জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, মহিলার আসল নাম রেখা। তিনি পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। সঙ্গীটির নাম শ্রবণ কুমার। বাড়ি বিহারে। শুধু দিল্লিতেই নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই একই কায়দায় বহু পরিবারকে ঠকিয়েছেন দুইজনে।