স্পোর্টস ডেস্ক ।। নেইমার-মেসি-সুয়ারেজ যদি একই টিমে খেলেন তবে সে দলের জয়রথ আর কে ঠেকায়। আসলে মূল লড়াইয়ে হেরে যাওয়ার রোষেই রক্তাক্ত হয়েছেন কোটি ফুটবলপ্রেমীর প্রিয় তারকা সদা হাসির নেইমার। বার্সেলোনাকে হারাতে পারলে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসবে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। বার্সা নেমে যাবে তৃতীয় স্থানে। এমন পরিসংখ্যানকে সামনে রেখে ন্যু ক্যাম্পে রোববার মুখোমুখি হয় অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা।
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে বার্সেলোনার ম্যাচটি বেশ উত্তাপ ছড়ায়। জয়ের জন্য মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে উভয় দল। কিন্তু বার্সেলোনার বিপক্ষে শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেনি সফরকারী অ্যাটলেটিকো। পরে নেইমারদের কারেছ তারা হার মেনেছে ৩-১ গোলে। বার্সার খেলোয়াড়দের আক্রমণের মুখে খেই হারানো অ্যাটলেটিকোর খেলোয়াড়রা শুরু থেকেই মারমুখি হয়ে খেলতে থাকে। পাল্টা জবাবে মোটেও ব্যতিক্রম ছিল না নেইমারের বার্সেলোনা।
ম্যাচের ১২ মিনিটে নেইমার গোলের দেখা পান। এরপরই তিনি অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের খেলোয়াড়দের টার্গেটে পরিণত হন। ম্যাচের ১৬ মিনিটে নেইমার প্রতিপক্ষের ডি বক্সের কোণা থেকে বল মারতে উদ্যত হন। এমন সময় বলের দখল নিতে নেইমারের পায়ের উপর সজোরে আছড়ে পড়ে আঘাত হানেন অ্যাটলেটিকোর হোসে গিমিনেজ। তার বুটটি মারাত্মকভাবে নেইমারের ডান পায়ে আঘাত করে।
পরে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন নেইমার। এর কিছুক্ষণ পর তার পা দিয়ে রক্ত ঝরতে দেখা যায়। পরে মেডিকেল স্টাফরা এসে তাকে মাঠের বাইরে নিয়ে যান। স্ট্রেচারে করে মাঠের বাইরে যাওয়ার সময় রক্তাক্ত মোজা দেখিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। অবশ্য প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে আবার মাঠে ফিরে আসেন তিনি।
নেইমার বিশ্বের উদীয়মান ফুটবলারদের মধ্যে অন্যতম। ২০১০ সালে ৩য় হওয়ার পর নেইমার ১৯ বছর বয়সে ২০১১ এবং ২০১২ সালে দক্ষিণ আমেরিকার বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হন। ২০১১ সালে নেইমার ফিফা ব্যালন ডি’অরের জন্য মনোনয়ন পান, তবে ১০ম স্থানে আসেন। তিনি ফিফা পুস্কাস পুরষ্কারও অর্জন করেন। তিনি সর্বাধিক পরিচিত তার ত্বরণ, গতি, বল কাটানো, সম্পূর্ণতা এবং উভয় পায়ের ক্ষমতার জন্য। তার খেলার ধরন তাকে এনে দিয়েছে সমালোচকদের প্রশংসা, সাথে প্রচুর ভক্ত, মিডিয়া এবং সাবেক ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার পেলের সঙ্গে তুলনা। পেলে নেইমার সম্পর্কে বলেন, “একজন অসাধারন খেলোয়ার।” অন্যদিকে রোনালদিনহো বলেন, “নেইমার হবে বিশ্বসেরা।”
নেইমার সান্তসে (ব্রাজিলিয়ান ক্লাব) যোগ দেন ২০০৩-এ। বিভিন্ন মর্যাদাক্রম অতিক্রম করে তিনি মূলদলে নিজের যায়গা করে নেন। তিনি সান্তসের হয়ে প্রথম আবির্ভাব করেন ২০০৯ সালে। ২০০৯ সালে তিনি কম্পেনাতো পুলিস্তার শ্রেষ্ঠ যুবা খেলোয়ার নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে সান্তসের ২০১০ কম্পেনাতো পুলিস্তা জয়, নেইমারের শ্রেষ্ঠ খেলোয়ার নির্বাচিত হওয়া এবং ২০১০ কোপা দো ব্রাজিলে ১১ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা পুরষ্কার পান। তিনি ২০১০ সাল শেষ করেন ৬০ খেলায় ৪২ গোল করার মাধ্যমে। নেইমার ব্রাজিল অনূর্ধ্ব ১৭, অনূর্ধ্ব ২০ এবং ব্রাজিল মূল দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।