আন্তর্জাতিক ডেস্নক ।। ফ্রান্সের প্যারিসে রম্য ম্যাগাজিন শার্লি হেবদোর কার্যালয়ে হামলা ও সুপারশপে বন্দুকধারীর জিম্মির ঘটনার পর দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো শক্তিশালী করার ঘোষণা দিয়েছে ফ্রান্স।
এরই মধ্যে প্যারিসজুড়ে অতিরিক্ত ৫শ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে, সুপার শপে জিম্মিকারী নিহত বন্দুকধারীর সহযোগী নারী হায়াত বৌমেদ্দিনি শুক্রবারের হামলার আগেই ফ্রান্স থেকে সিরিয়ায় পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
শনিবার এলিসি প্যালেসে প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদের আহ্বানে দেশের নিরাপত্তা নিয়ে মন্ত্রী পরিষদের সদস্যদের বৈঠক হয়। বৈঠকে দেশজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করার সিদ্ধান্ত হয়। এদিনই প্যারিসজুড়ে অতিরিক্তি ৫শ সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন ফরাসি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী।
ফ্রান্স এর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বেরনা কেজনোভা জানান, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছি। তাই প্যারিসসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আগামী কয়েক সপ্তাহের জন্য আরও শক্তিশালী করা উচিত। এ কারণে আমরা বিভিন্ন স্থানে সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করছি।’
এদিকে, প্যারিসের সুপার মার্কেটে নিহত জিম্মিকারী বন্দুকধারীর একটি অডিও প্রকাশ করেছে ফরাসি সংবাদমাধ্যমে। ফরাসি এক টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাৎকারের ওই অডিওতে শোনা যায়, শার্লি অবদো’র কার্যালয়ে হামলা চালানো দুই ভাই শেরিফ ও সাইদের সঙ্গে পরিকল্পনা করেই তারা হামলা চালিয়েছেন।
শুক্রবার পুলিশের অভিযানে, শেরিফ, সাইদ ও কুলিবালি নিহত হন। পলাতক থাকা কুলিবালীর নারী সহযোগী হায়াত বৌমেদ্দিনিকে ‘বিপদজনক’ উল্লেখ করে পুলিশ তাকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। তবে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, হামলার আগেই গত সপ্তাহে ওই নারী তুরস্ক হয়ে সিরিয়ায় সিরিয়ায় পালিয়ে গেছে।
এদিকে ফিলিস্তিন, ইরান সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছে, ইসলামের নামে নির্দোষ মানুষদের হত্যার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
শার্লি অবদো’র হামলার ঘটনাকে পশ্চিমা মূল্যবোধ রক্ষার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর। তবে জঙ্গিবাদের সঙ্গে ইসলামকে জড়িয়ে না ফেলার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি।
জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল বলেন, ‘আমাদের এটা মনে রাখতে হবে যে, ইসলাম ও যারা প্যারিসে হামলা চালিয়েছে সেসব ইসলামী চরমপন্থিদের মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। ইসলাম সম্পর্কে যথাযথভাবে অবগত হওয়া খুবই দরকার। উত্তম পন্থা হচ্ছে, মুসলমান জনগণের সঙ্গে কথা বলা।’
এরই মধ্যে রোববার শার্লি অবদোয় ইসলামকে কটাক্ষ করে প্রকাশিত ব্যঙ্গচিত্র পুনর্মুদ্রণকারী জার্মানির একটি পত্রিকা অফিসে দুর্বৃত্তরা আগুন লাগিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে এতে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।