ইতিহাস, ঐতিহ্যের ধারায় আজকের পৌষ সংক্রান্তি

sankrantiদেবজিত চক্রবর্তী, আগরতলা, ১৫ জানুয়ারী ।। প্রায় নিত্যদিনই দর্শন আর রুপ পাল্টে যাচ্ছে এই পৃথিবীর। সামাজিকতায় যে বিষয়গুলো কোনো এই সময় পরিবার পরিজনদের মধ্যে অনাবিল আনন্দের পরশ এনে দিত, সেই আনন্দ ঘন সময়ের ছবি যে ধীরে ধীরে পরিবর্তন হচ্ছে আশা করি শ্রদ্ধেয় পাঠকবর্গ মেনে নেবেন। আত্মকেন্দ্রিকতার বাড়বাড়ন্তে পৌষের পৌষ সংক্রান্তিও হয়তো কোনো একদিন কাহিনী হয়ে বেঁচে থাকবে বইয়ের পাতায়। যে কোনো উৎসবের সঙ্গেই জড়িয়ে থাকে মানুষের মিলনের আনন্দ বার্তা, আত্মীয় পরিজনের আগমনে উৎসব পূর্ণতা লাভ করে।
পৌষের সংক্রান্তির কথা উঠলেই ভেসে উঠে পিঠে, পুলি, পায়েসের রসনার পরিতৃপ্তি আর হাড় হিম হয়ে আসা শীতের মধ্যেই সংক্রান্তিত স্নান শেষে ধানের ক্ষেতে খড়ের বুড়ির মা-র ঘরে আগুন দিয়ে গ্রাম জুড়ে আট আশির শরীর উষ্ণ করার ছবি। এখানেই শেষ নয় সবুজ শ্যামল গাঁয়ের বাড়ীর বিরাট উঠানে জায়, জননীরা নানা রঙ্গে আলপনা এঁকে ধান, দূর্বায় পূজো, ঘরের আসনে তিল্লাই কদমায় ঠাকুর সেবা সহ আরো নানা আয়োজন হয়ে থাকে পৌষ সংক্রান্তিতে।
সংক্রান্তির আগেই গ্রামে গ্রামে ঢেকিতে, গাইলে চাল গুঁড়ো করার ছবি দেখে এই মুহূর্তের কোনো শিশু যখন মা-কে জিজ্ঞেস করবে এ কিসের ছবি ? মা-কে হয়তো ধান ভানতে শিবের গান গাইতে হবে – এ হচ্ছে আধুনিকতার কষাঘাত।
পরিবর্তিত পৃথিবীতে এখনো সুদূর গাঁয়ে পৌষ সংক্রান্তির উৎসব নিয়ে আসে আনন্দ বার্তা, পৌষের সংক্রান্তিতে নতুন করে প্রাণ ফিরে পায় স্নিগ্ধ সবুজ গ্রাম, পাশাপাশি শহরের ব্যস্ত জীবনে দোকানে দোকানে সেজে উঠা তিল্লাই, কদমা, প্যাকেটের চালের গুঁড়োর প্যাকেট – জানান দেয় পৌষ সংক্রান্তির। হালে পিঠে থেকে পায়েস সবই সহজলভ্য নির্দিষ্ট দোকানে। তবে শহরেও বেশ কিছু পরিবার পবিত্রতা আর নানা আয়োজনে পালন করে পৌষ সংক্রান্তির উৎসব।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*