প্রজাতন্ত্র দিবস কী, জানেই না অনেক ভারতীয়

praজাতীয় ডেস্ক ।। ‘ইটস কাইন্ড অফ ফ্রিডম… স্বাধীনতা দিবসই বোধ হয়!’ কোন প্রশ্নের উত্তর এটা? প্রশ্নটা ছিল, ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস কী এবং কেন৷ উপরের উত্তরটা যিনি দিলেন, তিনি কিন্ত্ত একরত্তি স্কুলপড়ুয়া নন, আইআইটি পশ্চিমবঙ্গের খড়গপুরের ছাত্রী! খবর ইন্ডিয়া টাইমস।

কলকাতার সাউথ সিটি মলে বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে আসা ওই ছাত্রী মৌমিতা গায়েনের সঙ্গে কথা হচ্ছিল রবিবার দুপুরে, দক্ষিণ কলকাতার একটি শপিং মলে৷ তার মতো জেন-ওয়াই-এর আরও অনেকের কাছেই দেশের ৬৬তম সাধারণতন্ত্র দিবসের আগে রাখা হয়েছিল প্রশ্নটা৷ কিন্ত্ত যে ধরনের প্রতিক্রিয়া উঠে এল, তা শুধু অবাক করার মতোই নয়, প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে খানিকটা লজ্জারও৷

যা দেখে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, তবে কি ক্রমেই দেশের ইতিহাসের সঙ্গে যোগাযোগ কমছে নবীনদের? নাকি, আর একটা আলসে ছুটির দিন হিসেবেই শুধু থেকে যাচ্ছে ইতিহাসের সোনাঝরা দিনগুলি?

কী বলছে নবীন প্রজন্মের শহরবাসী? অ্যাকাডেমি চত্বরে বন্ধুদের নিয়ে ছুটির আড্ডায় মশগুল ছিলেন বেসরকারি সংস্থার কর্মী ব্রতীঞ্জয় সহায়৷ প্রশ্নটা ধেয়ে যেতেই ব্রতীন আকাশের দিকে চেয়ে উত্তর দিলেন, ‘স্বাধীন হওয়ার আগে এই দিনে ব্রিটিশদের সঙ্গে কোনও চুক্তি-টুক্তি… না মানে… কাট দ্য ক্র্যাপ৷’

কততম প্রজাতন্ত্র দিবস? ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকলেন ব্রতীঞ্জয়৷ পরে অবশ্য ডেকে ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করতে ভুললেন না, ‘দাদা, আমার ছবি-টবি আবার বেরিয়ে যাবে না তো?’

ব্রতীনদের থেকে খানিক দূরে রবীন্দ্রসদনের টিকিট কাউন্টারের সামনে বসে গিটার বাজিয়ে গান করছিলেন সায়ন্তন মান্না৷ যেমন-তেমন গান নয়, গিটারের স্ট্রিংয়ে সুরেলা গলায় চলছিল ‘বন্দেমাতরম…’৷ গান থামতেই প্রশ্ন৷ সায়ন্তন গা এলিয়ে প্রশ্নটা সোজা ভিড়িয়ে দিলেন বন্ধুদের কোর্টে৷

আর বন্ধুরা? কেউ বললেন, ‘ওই তো… গান্ধী.. গান্ধীর কিছু একটা৷’ কেউ আবার ঠোঁট উল্টে জবাব দিলেন, ‘মনে হয়, ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলনটাই এ দিনে শুরু হয়েছিল৷’ উত্তর মনঃপূত হচ্ছে না দেখে মুখ খুলতে বাধ্য হলেন সায়ন্তন, ‘প্রজাদের জন্য কিছু একটা হয়েছিল, বুঝলেন!’ বন্দেমাতরম গাইছেন আর ২৬ জানুয়ারি জানেন না? সায়ন্তনের স্মার্ট জবাব, ‘আরে, এটা তো ২৩ জানুয়ারির জন্য গাইছিলাম৷’ ২৩ জানুয়ারি কী ছিল? সেটাও কিন্ত্ত বলতে পারলেন না সায়ন্তন!

পেশায় স্কুলশিক্ষিকা তৃষ্ণা বান্ধবীদের সঙ্গে এসেছিলেন নন্দনে সিনেমা দেখবেন বলে৷ তার উত্তর ছিল, ‘আমরা স্বাধীন দেশের নাগরিক৷ স্বাধীন ভাবে কথা বলার জন্য এই দিনটা হয়েছে৷’ সাউথ সিটি মলে নেতাজিনগর কলেজের ছাত্র সৈকত চট্টোপাধ্যায় আবার প্রশ্নটা শুনে রোয়াবি দেখালেন, ‘দাদা ব্যস্ত আছি৷’

কততম প্রজাতন্ত্র দিবস, সেটা জানেন কি? সৈকতের বান্ধবী বিরক্ত হয়ে বলে উঠলেন, ‘আমাদের একলা থাকতে দিন না প্লিজ৷ এটা তো জিকে-র ক্লাস নয়৷’ ওই মলেই বেড়াতে আসা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ঋতমা খাস্তগিরের উত্তর ছিল সবচেয়ে সোজাসাপ্টা৷ প্রশ্নটা নিয়ে অনেক ক্ষণ ভাবলেন৷ তার পর বললেন, ‘এটা তো একটা দিবস৷ সেটার আবার অর্থ কী?’

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*