ধর্মাচরণ নিয়ে ভারতকে যা বলে গেলেন ওবামা

maজাতীয় ডেস্ক ।। ‘নমস্তে’ দিয়ে শুরু, ‘জয় হিন্দ’-এ শেষ। যে ছকভাঙা ‘দোস্তি’ আর বৈঠকী মেজাজে দু’দিন আগে শুরু হয়েছিল তার ভারত সফর, বিদায়ী বক্তৃতাতেও সেই মেজাজই ধরে রাখলেন বারাক ওবামা। কিন্তু বন্ধুত্বের মোড়কে সুকৌশলে নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় তার গুরুদায়িত্বের কথাও মনে করিয়ে দিলেন তিনি। বললেন, “ভারত তত ক্ষণই সফল, যত ক্ষণ না সে ধর্মের ভিত্তিতে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে।”
তিনি বলেছেন, “দু’দেশেই নানা জাতি-নানা ধর্মের মানুষ বাস করেন। এই বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যই সবচেয়ে বড় শক্তি।” এবং তাতেই না-থেমে পাশাপাশি তুলে ধরেছেন ভারতীয় সংবিধানের ২৫ নম্বর ধারা এবং মার্কিন সংবিধানের প্রথম সংশোধনীটিকে। যে দু’য়েরই বক্তব্য এক ‘ধর্মাচরণের স্বাধীনতা’।

ধর্ম-বর্ণের ঊর্ধ্বে উঠতে পারা যে ভারত ও আমেরিকার ঐতিহ্য, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে আজ ওবামা বলেছেন, “আমরা এমন দেশের বাসিন্দা হতে পেরে গর্বিত, যেখানে রাঁধুনির নাতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হন, দলিতের ছেলে হন ভারতীয় সংবিধানের রূপকার, আর চা-বিক্রেতা হন প্রধানমন্ত্রী।” কথা প্রসঙ্গে নিজের জীবনের গল্প শুনিয়ে বলেছেন, সাদা চামড়া না-হওয়ায় অল্প বয়সে কী ভাবে অপমানিত হতে হয়েছে তাকে। বলেছেন, “আমায় চিনতেন না, এমন অনেকে আমার ধর্মবিশ্বাস নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। যেন অন্য কোনও ধর্মাবলম্বী হওয়াটা অপরাধ।”

শান্তির নোবেলজয়ীর মতে, প্রত্যেক দেশেরই সরকারের দায়িত্ব এটা দেখা, যাতে প্রত্যেকটি নাগরিক স্বাধীন ভাবে নিজের ধর্মাচরণ করতে পারেন। এই সময়েই তিন বছর আগে উইসকনসিনের গুরুদ্বারের হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ তুলেছেন ওবামা। ভারতীয়-মার্কিন মিলিয়ে ছ’জন মারা গিয়েছিলেন ওই হামলায়। ওবামার মতে, ওই ঘটনা ধর্মাচরণের স্বাধীনতা নিয়ে নতুন করে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ করে তুলেছিল দু’দেশকে। এই সময়েই শাহরুখ খান, মেরি কম, মিলখা সিংহ, কৈলাস সত্যার্থীর নাম করে তিনি বলেছেন, এদের প্রত্যেকের জন্যই ভারতবাসীর একই ভাবে গর্বিত হওয়া উচিত। তারা কার উপাসনা করেন, তাদের চামড়ার রং কী, সে সব গৌণ বিষয়।
সিরি ফোর্ট অডিটোরিয়ামে মার্কিন প্রেসিডেন্টের নমস্কার, যেখানে তিনি বক্তৃতা শুরু করেন স্বামী বিবেকানন্দকে স্মরণ করে। ছবি: এপি

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*