যে কারণে সুজাতার প্রতি নাখোশ মোদি

mdiজাতীয় ডেস্ক ।। ভারতের পররাষ্ট্রসচিব সুজাতা সিংয়ের ওপর গত ছয়মাস ধরেই নাখোশ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বার বার মোদির বিরক্তির কারণ ঘটান সুজাতা সিং। মোদির বৃহত্তর স্বার্থে পদক্ষেপ নেয়ার বেলায় সুজাতার নেতৃত্ব ব্যর্থ হয়েছে। সুজাতার অক্ষমতা বা অনিচ্ছাকে কেন্দ্র করে বিরক্ত মোদি।

শুক্রবার টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক খবরে জানানো হয়, মোদি ও সুজাতার সম্পর্কে ফাটল ধরে মূলত প্রয়োজনীয় কিছু সংশোধনের ক্ষেত্রে। সরকার গঠনের পর নরেন্দ্র মোদি ইসরায়েলের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ককে গুরুত্ব দেন। অংশীদার হিসেবে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দেন তিনি। কিন্তু উন্নয়নশীল ও নব্য শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট ব্রিকসের সম্মেলনে ইসরায়েলকে কেন্দ্র করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রী মোদির টানাপোড়েন দেখা দেয়।

মোদির অনিচ্ছাস্বত্তেও জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে (ইউএনএইচআরসি) ইসরায়েলের বিপক্ষে ভোট দেয় ভারত। এটি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুরনো ধারা। কিন্তু মোদি সরকার ইসরায়েলকে নিয়ে নতুন করে ভাবছিল। এ কারণেই মোদি নিউইয়র্ক সফরে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেন। এখান থেকেই ইসরায়েলকে নিয়ে পররাষ্ট্রসচিব সুজাতার সঙ্গে মোদির দ্বন্দ্ব বাড়ে।

জাপানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। জাপানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের পরিকল্পনা ছিল মোদির। গত সেপ্টেম্বরে মোদি জাপান সফর করেন। কিন্তু পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের অনাগ্রহের কারণে সেই সফরে সাফল্য আসেনি।

ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রীকে গুজরাট সফরে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মোদি। কিন্তু ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সাফ জানিয়ে দেয়, ১৯৯৫ সালে পুরুলিয়ার অস্ত্র সংক্রান্ত ঘটনার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ডেনমার্কের সঙ্গে সম্পর্কের অগ্রগতি তারা চায় না। মোদির আগ্রহ সত্ত্বেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আপত্তির কারণে ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী সফরে আসেনি ভারত। ফলে ভারত ও ডেনমার্কের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে ভাটা পড়ে।

প্রজাতন্ত্র দিবসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ভারত সফরকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার হওয়ার পথ প্রশস্ত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত জয়শঙ্কর এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। এ সময়েই পররাষ্ট্রসচিব সুজাতা সিংকে জানিয়ে দেয়া হয়, জয়শঙ্করকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে।

পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নে জয়শঙ্করকেই যোগ্য মনে করছে মোদির সরকার। পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে জয়শঙ্কর পররাষ্ট্র্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে প্রথম সফর করবেন চীনে। এ সপ্তাহের শেষের দিকে তাদের সফরের কথা রয়েছে। চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক জোরদার করতেই এই সফর।

কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর পছন্দেই মনমোহন সরকারের পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে নিয়োগ পান সুজাতা সিং। সুজাতার মেয়াদ শেষ হতো এ বছরের আগস্টে। সাত মাস আগেই অপসারিত হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। পদত্যাগপত্রে তিনি লেখেন, প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা অনুযায়ী ইস্তফা দিচ্ছেন এবং চাকরি থেকেও অবসর নিচ্ছেন তিনি।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*