ওসিকে জুতাপেটা করলেন এক নারী

jtজাতীয় ডেস্ক ।। কাঁদতে কাঁদতে পুলিশ ফাঁড়ি থেকে বেরিয়ে এলেন এক নারী। অপমানে-লজ্জায় রীতিমতো কাঁপছেন তিনি। গ্রামে ফিরে গ্রামবাসীদের তিনি যা জানালেন তাতে কেউ আর স্থির থাকতে পারল না। গ্রামবাসীরা জানল ওই নারীকে ওই ফাঁড়ির ওসি অনৈতিক প্রস্তাব দেন।
ব্যস, গণরোষ উপচে পড়ে। গ্রামবাসী হামলে পড়ে ফাঁড়িতে। এরপর যা হওয়ার হলো তাই। জুতাপেটার শিকারও হতে হলো ওসিকে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার পশ্চিমবঙ্গের মালদহের ভালুকায়।

জানা গেছে, ভালুকার ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী পুলিশ ফাঁড়িতে চড়াও হয়ে ওসি সনৎ বিশ্বাসকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। নিজের চেয়ারে বসে ওসি তা অস্বীকার করে পাল্টা দাবি করেন, সম্পূর্ণ মিথ্যে কথা বলছেন ওই নারী। এতে আরো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। ক্ষিপ্ত ওই নারী সপাটে চড় কষিয়ে দেন ওসির গালে।
বেগতিক দেখে ফাঁড়ির অন্য পুলিশকর্মীরা সনৎকে অন্য একটি ঘরে ঢুকিয়ে আড়াল করার চেষ্টা করেন। এ সময় ওই নারী নিজের পা থেকে চটি খুলে নিয়ে কয়েক ঘা বসিয়ে দেন ওসির গায়ে।
কী কারণে ওই নারী এমন মারমুখী হয়ে উঠলেন তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু করেছে জেলা পুলিশের কর্তারা। ঊর্ধ্বতন দায়িত্বশীল একজন পুলিশ কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, কোন পরিস্থিতিতে ফাঁড়িতে ঢুকে পুলিশ কর্মীকে মারধর করল জনতা তা খতিয়ে দেখা হবে।

ভালুকা ফাঁড়ির ওসি সনৎ বিশ্বাস অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে গণমাধ্যমকে জানান, আমি কোনো খারপ আচরণ করিনি। আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। ঘটনাটি জানাজানি হতেই স্থানীয় সাংসদ কংগ্রেস নেতা মৌসম বেনজির নূরের প্রশ্ন, পুলিশ-প্রশাসন বলে এরাজ্যে কিছু আছে বলে মনে হয় না।
একজন ব্লক বিধায়ক জানান, জুতাপেটা করাটা নিন্দনীয়। তবে এটাও মনে রাখতে হবে একজন নারী কতটা অপমানিত হলে এমন বেপরোয়া কাজ করতে পারে।
ওই নারীর অভিযোগ, পারিবারিক একটি মামলায় ওসির সঙ্গে দেখা করতে যান তিনি। সঙ্গে তার স্বামী ছিল। কিন্তু ওসি তার স্বামীকে বাইরে বসিয়ে তাকে ঘরে ডেকে নেন। ওসি তাকে বলেন, আমি জানি তুমি স্বামীর সঙ্গে থাক না। অন্য একজনের সঙ্গে তোমার সম্পর্ক আছে। তা আমার সঙ্গে থাকতে আপত্তি আছে?

একথা শোনার পরে অপমানে কাঁপতে থাকেন তিনি। এ সময়ে ওসি তার হাত ধরে কাছে টানার চেষ্টা করলে তিনি কোনো রকমে হাত ছাড়িয়ে বেরিয়ে আসেন।
বছর ত্রিশের ওই নারীর স্বামী কাটিহারে একটি দোকানে কাজ করেন। দিন কয়েক হলো গ্রামে ফিরেছেন। তিনি বলেন, ওসির ঘর থেকে স্ত্রী কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে আসতে দেখে আমি বারবার জিজ্ঞেস করতে থাকি, কী হয়েছে? কিন্তু রাগে-অপমানে ও তখন কাঁপছিল। কথার উত্তর দিতে পারেনি।
পরে গ্রামে ফিরে নারীটি সে কথা জানাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ভালুকা। বিক্ষোভ ভেঙে পড়ে ওই ফাঁড়িতে। আর এরপরই ঘটে ওই ঘটনা। সূত্র : আনন্দবাজার

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*