দেবজিত চক্রবর্তী, আগরতলা, ১১ ফেব্রুয়ারী ।। যে শহরের রাস্তায় মানুষের অধিকার নিয়ে সোচ্চার প্রতিবাদে বহুবার পথ হেঁটেছেন, সেই শহরেই জীবনের শেষে মরদেহবাহী শকটে শেষ বারের মতো পরিক্রমা করে গেলেন মানুষের নেতা প্রয়াত অনিল সরকার। শেষ বিদায়ের মিছিলে শ্লোগান ছিল না, তবে মৌন মিছিলের অন্তরালে ছিল শপথ আর প্রতিজ্ঞা পূরনের প্রচ্ছন্ন বার্তা, ছিল প্রয়াতের পদাঙ্ককে পাথেয় করে এগিয়ে চলার অকথিত সংকেত। বিশিষ্ট থেকে সাধারন জন মৌন মিছিলে পথ পাড়ি দিয়েছেন একত্রে এক পথে। নির্দিষ্ট পথ পরিক্রমা করে বটতলা মহাশ্বশানে প্রয়াত অনিল সরকারের মরদেহ পৌঁছুনোর আগেই মানুষের নেতাকে শেষ দেখা আর শ্রদ্ধা জানাতে মানুষে মানুষে একাকার হয়ে যায়।
পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় অন্তিম বিদায়ে গার্ড অব অনার এবং জাতীয় পতাকায় ঢেকে দেয়া হয় প্রয়াত অনিল সরকারের নশ্বর দেহ। বটতলা মহাশ্বশানে রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার সহ বামফ্রন্টের বিশিষ্ট নেতা-নেত্রী, CPI(M) রাজ্য কমিটির পদাধিকারী, দলীয় সভ্য সমর্থক আর মানুষের ভীড়ে বিদায় বেলাতেও জননেতা জানান দিয়ে গিয়েছেন তিনি অমর হয়ে থাকবেন মানুষের অধিকারের আন্দোলন, ভাষার বর্ণমালায়, নিস্পেষিত মানুষের গন আন্দোলনে।
প্রাক্তন মন্ত্রী প্রয়াত অনিল সরকারের অন্তিম বিদায়ের শাস্র মতে কর্ম সম্পাদনে আত্মীয় পরিজনরা অশ্রু সজল চোখ আর ভারাক্রান্ত হৃদয়ে কাজ করেছেন। উপস্থিত ছিলেন প্রয়াতের পুত্র, পুত্রবধূ এবং নাতি। পবিত্র অগ্নিতে পরলোকে পাড়ি দিয়েছেন – অবিসংবাদিত সংগ্রামের মূর্ত প্রতীক অনিল সরকার। মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ে কেউ কোনোদিন জেতেনি তবে অনিল সরকারের মতো মানুষের মৃত্যু নিছক প্রতীকি। পৃথিবী থেকে দূর হয়নি ঝলসানো রুটির যুদ্ধ, দূর হয়নি শোষন, আত্ম নিয়ন্ত্রন আর আত্ম অধিকারের সংগ্রাম চলছে বিশ্বজুড়ে – হকের লড়াইয়ে মানুষের মিছিলে বিদীর্ণ শ্লোগানে বেঁচে থাকবেন চিরকাল প্রয়াত জননেতা অনিল সরকার। আশাহতের আশা প্রতিবাদের ভাষা, মানবতার মৃত্যুতে সঞ্জীবনী মন্ত্রে মানুষকে চিরকাল পথ দেখাবে প্রয়াত অনিল সরকারের অনির্বাপিত বহ্নিশিখা।