স্পোর্টস ডেস্ক ।। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আম্পায়াররা প্রথম দিনেই নতুন বিতর্কের জন্ম দিলেন। এমন একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তারা যাতে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা খোদ আইসিসিরও ভুল স্বীকার করতে হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার অস্ট্রেলিয়া বনাম ইংল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচে।
মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার দেয়া ৩৪২ রানের জবাবে ব্যাট করতে নেমে জেমস টেইলরের ব্যাটে লড়ছিল ইংল্যান্ড। হ্যাজলউডের করা ইনিংসের ৪২তম ওভারের পঞ্চম বলে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েন তিনি। টেইলরকে আউট দেন পাকিস্তানি আম্পায়ার আলিম দার। তখন টেইলর পরে রিভিউ আবেদন করেন। রিভিউতে বেঁচে যান ৯৮ রানে অপরাজিত থাকা ইংলিশ এই ব্যাটসম্যান। কিন্তু সেই বলেই স্ট্রাইকিং প্রান্তে জেমস অ্যান্ডারসন পৌঁছার আগে সরাসরি থ্রোতে স্ট্যাম্প ভেঙে দেন ম্যাক্সওয়েল। তাই এলবিডাব্লিউর আবেদন বৃথা গেলেও অ্যান্ডারসনকে রানআউট দেয়া হয়।
কিন্তু তখনই টেইলর জোর গলায় বলছিলেন, বলটা ডেড ছিল। আউট হবে না। মেলবোর্নের গ্যালারিতে ৯০ হাজার লোকের কোলাহলে তখন হারিয়ে গিয়েছিল জেমস টেইলরের এই আবেদন শুনে। টিভিতে পরিষ্কার দেখা গেছে, ইংল্যান্ডের ডানহাতি ব্যাটসম্যান বলছিলেন, বলটা ডেড। কিন্তু তা খোদ দুই আম্পায়ার আলিম দার ও কুমার ধর্মসেনা কানে তোলেননি।
ম্যাচের পর আইসিসি ভুল স্বীকার করে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে। ম্যাচটা যে ভুল সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে তা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি।
এতে হয়তো ৯৮ রানে অপরাজিত থেকে যাওয়ার আফসোস ভুলে যাবেন জেমস টেইলর। কিন্তু শনিবার অস্ট্রেলিয়ার কাছে ১১১ রানে হেরে যাওয়া ম্যাচটার সমাপ্তি যে ভুলের মধ্য দিয়ে হয়েছে, তা কি করে ভুলবে ইংলিশরা। মাঠে থাকা অবস্থায় এই বিষয়টাই আম্পায়ারদের বলেছিলেন তিনি।
জেমস অ্যান্ডারসনকে রানআউট দেয়া বলটা নিয়ে ম্যাচের পর রিভিউ করতে বসেছিল আইসিসির প্লেয়িং কন্ট্রোল টিম (পিসিটি)। ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ডিআরএস)-এর আর্টিকেল ৩.৬-এর ৬ অনুচ্ছেদে বলা আছে, যখন জেমস টেইলরকে এলবিডব্লিউ আউট দেয়া হয় তখনই বলটি ডেড হবে।
এরপর আর কোন রান বা আউট সম্ভব নয়। পিসিটি পরে ইংল্যান্ড টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কথা বলেছে এবং স্বীকার করেছে ম্যাচটি ভুলভাবে শেষ হয়েছে ও একটা ভুল সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
তাদের ভুলের কারণেই ছয় নম্বরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ইংলিশ ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরি করার সুযোগ হাত ছাড়া হলো টেইলরের। যদিও গতকাল তিনি ৯৮ রানের ইংনিস খেলে ছাড়িয়ে যান কেভিন পিটারসেনকে। ২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সর্বোচ্চ ৯১ রানে ইংনিস খেলেছিলেন ইংল্যান্ডের ছয় নম্বর ব্যাটসম্যান পিটারসেন।
তবে টেইলর এ ম্যাচে জ্বলে উঠেছেন। তিনি সেঞ্চুরি না করলেও দলের পক্ষে একমাত্র হাফ সেঞ্চুরি ৯৮ রান করেন তিনি। তবে দল হেরে যায় ১১১ রানের বিশাল ব্যবধানে।
এ নিজেদের প্রথম ম্যাচ হিসাবে পরবর্তী ম্যাচগুলোতে চাপে থাকবে হবে ইংল্যান্ডকে। কেননা ইংল্যান্ড এর আগে প্রস্তুতি ম্যাচে পাকিস্তানের কাছেও হারের স্বাদ পায়।
অন্যদিকে জয়রথে আছে অস্ট্রেলিয়া। এর আগে অপরাজিত থেকে শিরোপা জয়ের রেকর্ড রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার। এবারও সবাই বিশেষ দৃষ্টি রাখবে অস্ট্রেলিয়ার দিকে।