ছাত্র-শিক্ষকদের যুগলবন্দিতেই আপাতত নিহিত ‘নো টোবাকো’র সার্থকতার সম্ভাবনাঃ মন্ত্রী সুশান্ত চৌধূরী

আপডেট প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩১ মে || ৩১শে মে বিশ্ব তামাক বিরোধী দিবস। বিশ্বজুড়ে তামাক বিরোধী সচেতনতা গড়ে তুলতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ৩১মে দিনটি বিশ্ব তামাক বিরোধী দিবস হিসেবে পালন করে আসছে ১৯৮৭ সাল থেকে। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে, “আমাদের খাদ্য চাই, তামাক নয়”।
পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা ভিত্তিক “তামাক বিরোধী দিবস” উদযাপনের অঙ্গ হিসেবে বুধবার জিরানীয়ার অগ্নিবীণা হল ঘরে আয়োজিত হয় এক অনুষ্ঠান। এদিনের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধূরী, জিরানীয়া নগর পঞ্চায়েতের চেয়ারপার্সন রতন দাস, ভাইস চেয়ারপার্সন রিতা দাস, জিরানীয়া পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারপার্সন মঞ্জু দাস, ভাইস-চেয়ারপার্সন প্রীতম দেবনাথ, রাণীরবাজার পুরপরিষদের চেয়ারপার্সন অপর্ণা শুক্ল দাস,
ভাইস-চেয়ারপার্সন প্রবীর কুমার দাস, জিরানীয়া মহকুমার মহকুমা শাসক শান্তিরঞ্জন চাকমা, সমাজসেবী গৌরাঙ্গ ভৌমিক।
এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে পরিবহন মন্ত্রী বলেন, দিবসটি উদযাপনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তামাক ব্যবহারের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব এবং স্বাস্থ্যের উপর তামাকের নেতিবাচক প্রভাবের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা। ধূমপানকে বলা হয় মাদক সেবনের প্রবেশপথ। তামাক সেবনের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম মাদকের দিকে ধাবিত হয়ে পরিবার ও রাষ্ট্রের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের দেশে মানুষের মধ্যে হৃদরোগ সহ বড় চারটি অসংক্রমক রোগের মূল কারণ ধূমপান। ধূমপান ত্যাগ করানো গেলে এসব অসংক্রমক রোগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ ও রাজ্য গড়ে তুলতে আমাদের দরকার একটি সুস্থ-সবল জনগোষ্ঠী। এই লক্ষ্যে দেশব্যাপী তামাকের বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে ও রাজ্যে বিদ্যালয় স্তর থেকেই তামাক বিরোধী প্রচারকে জোরদার করে তুলতে রয়েছে আইন। রয়েছে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নানা ধরণের সতর্কতামূলক দেওয়াল লিখন। বিভিন্ন বিদ্যালয় পরিসরের বৃত্তের কাছাকাছি তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি কিংবা সেবন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। সেই আইন ভাঙার জন্য রয়েছে শাস্তির নিদানও। কিন্তু কার্যত দেখা যায় সেই আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বিদ্যালয় সংলগ্ন দোকানগুলিতে ধূমপায়ী কিংবা তামাকপ্রেমীদের রমরমা! এদিন তিনি আক্ষেপের সাথে বলেন, বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনের নাকের ডগাতেই দেখতে পাই সিগারেট ও অন্যান্য তামাকজাত পণ্যের দেদার বিকিকিনি! স্কুল গেটের বাইরে তামাক সেবন বন্ধ করা শুধুমাত্র শিক্ষকদের পক্ষে যেমন অসম্ভব, তেমনি কেবলমাত্র প্রশাসনের পক্ষেও সম্ভব নয়। তাই প্রয়োজন ছাত্র-ছাত্রীদের সংঘবদ্ধ প্রতিরোধ। তাহলেই সার্থক হবে উদ্দেশ্য। প্রশাসন ও ছাত্র-শিক্ষকদের যুগলবন্দিতেই আপাতত নিহিত ‘নো টোবাকো’র সার্থকতার সম্ভাবনা। তামাকের ব্যবহার কমাতে পারলে জনস্বাস্থ্য ও জাতীয় অর্থনীতির উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। জীবনযাত্রার মান বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের মানুষ ক্রমশ স্বাস্থ্য সচেতন হচ্ছেন। জনগণকে তামাকের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতন করে তুলতে পারলে এর ব্যবহার দ্রুত কমে আসবে বলে জানান তিনি।
এদিন এই গোটা অনুষ্ঠানটি সুচারুভাবে পরিচালনা করেন অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক পশ্চিম জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ দেবাশীষ দাস।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*