সাগর দেব, তেলিয়ামুড়া, ১৪ জুন || কথায় আর কাজে একেবারে মিল রাখলেন তেলিয়ামুড়ার শিক্ষক রূপী দালাল ব্যবসায়ী জয়ন্ত বাবু। গত কিছুদিন আগে তেলিয়ামুড়ার সারদাময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক জয়ন্ত রায় সহ একাধিক শিক্ষক রূপী বিদ্যা ব্যবসার দালালদের নামে সচিত্র প্রতিবেদন পেশ হবার পর বহু জায়গায় হুংকার ছেড়ে জয়ন্ত বাবু দাবি করেছিলেন, “যে যাই লেখুক, যে যাই বলুক, যতই সরকারি নির্দেশিকা আসুক না কেন, কে আমার কি ছিঁড়তে পারে তা দেখা যাবে”। প্রায় প্রকাশ্যে একাধিক জায়গায় হুংকার ছেড়েছিলেন জয়ন্ত বাবু। অতীতেও কেউ বিদ্যা ব্যবসার দালালি বন্ধ করতে পারেনি, আর এখনো পারবে না।
অবশেষে মঙ্গলবার হাতেনাতে প্রমাণিত হলো একেবারে নিজের কথার মতো ক্ষমতা জাহির করে চলেছেন জয়ন্ত বাবু, আর অন্যদিকে শিক্ষা দপ্তর তথা প্রশাসন বসে বসে বুড়ো আঙ্গুল চুষছেন।
সুনির্দিষ্ট তত্ত্বের ভিত্তিতে মঙ্গলবার তেলিয়ামুড়ার শান্তিনগর এলাকার শিক্ষক জয়ন্ত রায়ের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় রীতিমতো দোকান খুলে ছাত্রছাত্রীদের পাঠ দান করে চলেছেন জয়ন্ত বাবু।
প্রথম অবস্থায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে চতুর শিক্ষক জয়ন্ত বাবু বলছিলেন, উনার বাড়িতে নাকি অন্য কেউ শিক্ষকতার কাজ করছেন, যদিও পরবর্তী সময়ে একের পর এক প্রশ্নবানে জর্জরিত হয়ে জয়ন্ত বাবু তার প্রদত্ত উত্তর থেকে ১৮০ ডিগ্রী ঘুরে যায়। এবার জয়ন্ত বাবু বলতে থাকেন, বিনামূল্যে ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা দান করে চলেছেন। তিনি এমন ভাবে বলছিলেন যেন সমাজসেবার ক্ষেত্রে মাদার টেরেসার দৃষ্টান্তকেও পেছনে ফেলে দেবে সদা হাস্যময় বিজ্ঞ জয়ন্ত বাবু।
যাক শিক্ষক জয়ন্ত বাবুর সামনেই উনার গুটিকয়েক ছাত্রছাত্রী ক্যামেরায় দাবি করছিলেন দিনের পর দিন প্রাইভেট শিক্ষা গ্রহণ করার জন্য তাদের ছুটে আসতে হয় এই জয়ন্ত স্যারের কাছে।
আরো যে বিষয়গুলো সামনে এসেছে সেই বিষয়গুলো অনেকটা এরকম, জয়ন্ত স্যার নাকি স্কুলের মধ্যে হুলিয়া জারি করে রাখেন উনার কাছে পড়াশোনা না করলে কিভাবে পাশ করে বা মাধ্যমিকে কিভাবে প্রজেক্টের নাম্বার পাবে তা উনি দেখে নেবেন। অর্থাৎ শিক্ষক জয়ন্ত বাবু বাহুবলী’র রূপ ধারণ করে নিরন্তর ভাবে বলতে চান যদি উনার কাছে প্রাইভেট না পড়ে তাহলে ছাত্রছাত্রীরা মাধ্যমিকে প্রজেক্টর নাম্বার থেকে বঞ্চিত হবে। এই হুলিয়ার জেরে একটা বিরাট অংশের ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবক জয়ন্ত স্যারের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হচ্ছেন, খবর এমনটাই।
গোটা বিষয় নিয়ে শিক্ষা দপ্তরের জনৈক কয়েকজন আধিকারিকের সাথে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদকের কথা হয়েছে এবং উনারাও দাবি করেছেন উনাদের কাছেও ব্যাপক তথ্য রয়েছে এবং অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রক্রিয়া চলছে বলে বিদ্যালয় পরিদর্শক সহ একাধিক শিক্ষা দপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্তা দাবি করেছেন।
এখন দেখার বিষয়, জয়ন্ত বাবুর মত বাহুবলী শিক্ষকরা বারবার হুলিয়া জারি করে বলছেন যে যতই হুংকার ছাড়ুক কেউ কিছুই করতে পারবেনা বিদ্যা ব্যবসা চলছে চলবেই, আর অন্যদিকে বিদ্যালয় পরিদর্শক সহ-প্রশাসকরা দাবি করছেন এই অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, এখন বাকিটা সময়ের অপেক্ষা।