চলে গেলেন ১১৭ বছরের বিশ্বের প্রবীনতম মানুষ মিসাও ওকাওয়া

moআন্তর্জাতিক ডেস্ক ।। মারা গেলেন এই মুহূর্তে বিশ্বের প্রবীনতম মানুষ মিসাও ওকাওয়া। ঠিক ২৭ দিন আগে ১১৭ বছরের জন্মদিন পালন করেছিলেন জাপানের এই প্রবীনা। জীবনের শেষ ১৮ বছর ওসাকা নার্সিংহোমই ছিল মিসাওয়ের বাসস্থান। সেখানেই আজ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তার। শেষ সময় পাশে ছিলেন তার নাতি। ওসাকা নার্সিংহোমের এক আধিকারিক তোমোহিরো ওকাদা জানান, “গত ১০ দিন ধরেই খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন মিসাও। অবশেষে আজ শান্তির ঘুম ঘুমিয়েছেন তিনি।”
জাপানের ওসাকায় ১৮৯৮ সালের ৫ মার্চ জন্ম মিসাও ওকাওয়ার। ২০১৩ সালে গিনিজ বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে বিশ্বের প্রবীনতম মানুষ হিসেবে স্থান পায় তার নাম। ১৯০০ শতাব্দীতে জন্মানো বিশ্বের ৫ দীর্ঘায়ু মহিলার মধ্যে মিসাও ছিলেন অন্যতম। দুই শতকের বহু ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী থেকেছেন মিসাও। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় মিসাও ছিলেন কিশোরী। মানুষ যখন প্রথম চাঁদে পদার্পণ করে মিসাওয়ের বয়স তখন ৭০। ১৯১৯ সালে ২১ বছর বসয়ে বিয়ে হয় মিসাওয়ের। তার আগে পর্যন্ত পারিবারিক কিমোনোর ব্যবসার দেখাশোনা করতেন মিসাও। বিয়ের পর স্বামী উকিওর ব্যবসায় যোগ দেন মিসাও। ৩ সন্তান, ৪ নাতি-নাতনি ও ৬ পুতি-পুতনির জন্ম দেখেছেন মিসাও। ১৯৩১ সালে স্বামীর মৃত্যুর পর কোবে শহর ছেড়ে চলে আসেন জন্মভূমি ওসাকায়।
প্রায় ৩ শতাব্দী পৃথিবীতে কাটানো মিসাওয়ের সুস্বাস্থ্যের চাবিকাঠি দিনে ৮ ঘণ্টা ঘুম আর প্রচুর সুশি। ভিনিগার স্টিমড রাইসের সঙ্গে ম্যাকারেল মাছ ছিল তার প্রিয় খাবার। জাপানের এক টেলিভিশন চ্যানেলে সম্প্রচার করা হয়েছিল তার ১১৭ বছরের জন্মদিন উদযাপনের অনুষ্ঠান। সেই অনুষ্ঠানেই তাকে জিজ্ঞাসা করা হয় জীবন দীর্ঘ মনে হয় নাকি ছোট? মিসাও জানিয়েছিলেন, ‘ছোট্ট।’ তবে শুধু মিসাও নন, দীর্ঘায়ুর জন্য বিখ্যাত দেশ জাপানে বাস করেন এই মুহূর্তে বিশ্বের সবথেকে প্রবীন পুরুষ সাকারি মোমোইও। ফেব্রুয়ারি মাসে ১১২ বছর পূর্ণ করেছেন তিনি।
মিসাওয়ের মৃত্যুর পর এখন বিশ্বের প্রবীনতম মানুষ গারট্রুড ওয়েভার। ১১৬ বছর বয়সী গারট্রুড মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। এখনও পর্যন্ত ইতিহাসের পাতায় বিশ্বের সবথেকে দীর্ঘায়ু মানুষ ফ্রান্সের জেনি ক্যালমেন্ট। ১৯৯৭ সালের অগাস্ট মাসে ১২২ বছর ১৬৪ দিন বয়সে মারা যান জেনি।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*