আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।। প্রয়াত হলেন নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক গুন্টার গ্রাস। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ের জার্মান সাহিত্যকে এক অন্য মাত্রায় পৌছে দিয়েছিলেন তিনি।
কবিতা থেকে নাটক, ভাস্কর্য থেকে গ্রাফিক আর্ট, শিল্পের বিবিধ মাধ্যমে অবাধ বিচরণ ছিল তাঁর। ১৯৫৯ সালে সারা বিশ্বের কাছে তিনি পৌঁছে গিয়েছিলেন তাঁর প্রথম উপন্যাস দ্য টিন ড্রাম-এর মাধ্যমে। এর ঠিক ৪০ বছর পর নোবেল পুরস্কার পান তিনি।
সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি সারা জীবন গুন্টার গ্রাস শান্তি ও পরিবেশ রক্ষার পক্ষে সওয়াল করেছেন। পূর্ব ও পশ্চিম জার্মানির মিলনের ঘোর বিরোধী ছিলেন তিনি। তাঁর মতে এই ঘটনা হিটলারের অস্ট্রিয়া আত্মসাতের সমান।
১৯২৭ সালে জার্মানিতে জন্মগ্রহণ করেন এই বিশ্ববন্দিত সাহিত্যিক। ১৯৪৪ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়সে নাৎসিদের ওয়াফেন এস এস ট্যাঙ্ক গানারের কাজে ঢোকেন তিনি। ২০০৬ সালে প্রকাশিত আত্মজীবনীতে নাৎসিদের বিরুদ্ধে ভণ্ডামো,সুবিধাবাদ, বিশ্বঘাতকতার বহু অভিযোগ তোলেন গ্রাস। পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানোর মত সামনে চলে আসে একের পর এক ঘটনার সত্যতা।
তিনি লিখেছিলেন নাৎসি বাহিনীতে যোগদান খুব একটা তাঁর ইচ্ছাধীন ছিল না। আত্মজীবনীতে তিনি লিখেছেন ”আমি যদি আর ৩-৪ বছর পরে জন্মাতাম, তাহলে আমিও হয়ত যুদ্ধাপরাধী হতাম।”
দ্য টিন ড্রাম ছাড়াও, ক্যাট এন্ড মাউস, ডগ ইয়ারস, ফ্রম ডায়রি অফ এ স্নেইল, দ্য মিটিং অ্যাট টেলগেট সহ বহু বিখ্যাত উপন্যাস তাঁর কলম থেকে জন্ম নিয়েছে। প্রিয় শহর কলকাতাকে নিয়ে তিনি লিখে ছিলেন ‘শো ইওর টাং’ (জিভ কাটো লজ্জায়)
তাঁর মৃত্যু বিশ্বসাহিত্যে অপূরণীয় এক শূন্যতার সৃষ্টি করল। তবে নিজের সৃষ্টির মাধ্যমে পাঠকদের মনে চিরকাল অমর হয়ে থাকবেন গুন্টার গ্রাস।