স্বাস্থ্য ও সচেতনতা ডেস্ক ।। আফ্রিকা মহাদেশের লাখো মানুষের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে বিজ্ঞানীরা এবার জিন প্রকৌশলের মাধ্যমে একটা বিশেষ জাতের কলা উৎপাদন করেছন। বিশেষজ্ঞদের মতে, পুষ্টিমানের বিচারে এই কলা হচ্ছে একেবারে ‘সুপার বানানা’।
অস্ট্রেলিয়ার গবেষকরা বলছেন, এই কলার আলফা ও বিটা ক্যারোটিন শরীরে যাওয়ার পর ভিটামিন ‘এ’-তে রূপান্তরিত হবে। সব ঠিক থাকলে ২০২০ সাল নাগাদ উগান্ডায় এই কলার উৎপাদন শুরু হবে পুরোদমে।
পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদিত যে ‘সুপার বানানা’ ইতোমধ্যে পাঠানো হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে মানুষের ওপর ছয় সপ্তাহের পরীক্ষায় বিজ্ঞানীরা দেখবেন, এই কলা আসলে কতটা কার্যকর।
এই গবেষণা প্রকল্পটি পরিচালনা করছে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির একদল গবেষক। আর তাঁদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন।
গবেষকরা আশা করছেন, চলতি বছরের শেষ নাগাদ তারা চূড়ান্ত ঘোষণা দেওয়ার মতো একটি অবস্থায় পৌঁছাতে পারবেন।
এ গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক জেমস ডেল বলেন, “উগান্ডার কলার মতো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাবারের পুষ্টিমানের উন্নয়ন ঘটিয়ে বিজ্ঞান বহু মানুষের জীবন বদলে দিতে পারে। আমাদের বিশ্বাস, আমাদের গবেষণায় কাজ হবে।”
তিনি জানান, পূর্ব আফ্রিকার অনেক দেশেই রান্নায় কাঁচা কলা ব্যবহার করা হয়। এটি ওই অঞ্চলের অন্যতম প্রধান খাদ্য হলেও স্থানীয় কলায় আয়রন ও ভিটামিন ‘এ’ থাকে অনেক কম। ভিটামিন ‘এ’-র স্বল্পতার কারণে প্রতি বছর সারা বিশ্বে সাড়ে ৬ থেকে ৭ লাখ শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। দৃষ্টিশক্তি হারাচ্ছে তিন লাখেরও বেশি শিশু।
এ কারণে জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে বিজ্ঞানীরা স্থানীয় কলার জাতকে রূপান্তরিত করছেন ‘সুপার বানানা’-য়। আর এ জন্য যে জিন প্রকৌশল প্রয়োজন তা ইতোমধ্যে শেষ করেছেন তারা।
বাইরে থেকে দেখলে সাধারণ কলার সাথে এর কোনো পার্থক্য চোখে পড়বে না। তবে খোলস ছাড়ানোর পর এর রঙে থাকবে অনেক বেশি কমলা আভা। এই রং স্থানীয়দের খুব একটা অপছন্দ হবে না বলেই মনে করেন অধ্যাপক ডেল।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, উগান্ডায় এই কলার বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হলে রুয়ান্ডা, কেনিয়া, তানজানিয়া আর কঙ্গোর মতো অন্যান্য দেশেও একই প্রযুক্তি ব্যবহার করা সম্ভব হবে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে।