বুধবার আপ-এর জনসভায় কৃষক গজেন্দ্রর মৃত্যুর জন্য AAP-কে দায়ী করল দিল্লি পুলিস

aapজাতীয় ডেস্ক ।। বুধবার আপ-এর জনসভা চলাকালীনই সবার সামনে গাছে উঠে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন কৃষক গজেন্দ্র সিং। মঞ্চে তখন বক্তব্য রাখছেন আপ নেতা কুমার বিশ্বাস। গজেন্দ্র যখন আত্মহত্যা করতে যাচ্ছেন আম আদমি পার্টির কোনও নেতা, কর্মী বা স্বেচ্ছাসেবীরা তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেননি। প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী, গজেন্দ্রের মৃত্যু নিয়ে এফআইআর- দিল্লি পুলিস এই কথা উল্লেখ করেছে।
এই ভয়াবহ ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর সভাস্থলে উপস্থিত কিছু অস্থায়ী শিক্ষকরা নামিয়ে আনেন গজেন্দ্রকে। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় রামমনোহর লোহিয়া হাসপাতালে। সেখানে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
কিন্তু অদ্ভুতভাবে, গজেন্দ্রকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরেও মিটিং যেমন চলছিল, তেমন চললো। কৃষক দুর্দশা নিয়ে ভারি ভারি শব্দক্ষেপণ চলতে লাগলেন আপ নেতারা। মঞ্চে বক্তৃতা দিলেন সঞ্জয় সিং, মনীশ শিশোদিয়া, কেজরিওয়াল। বক্তৃতায় উঠে এল ওই গজেন্দ্রর মৃত্যুর কথা। তাঁর মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হল পুলিসকে। সভাতেই পরা হয় ওনার সুইসাইড নোটও। আরো ৭৫ মিনিট ধরে চলা সভা চলে। এরপর সপারিষদ কেজরি হাসপাতালে অবশ্য গিয়েছিলেন। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ।
কেজরিওয়ালের আপ সরকার এই নিয়ে ম্যাজেস্ট্রেট স্তরে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু দিল্লি পুলিস সাফ জানিয়েছে এই নির্দেশ তারা মানবে না। পুলিসের দাবি এই ধরণের নির্দেশ দেওয়ার অধিকার দিল্লি সরকারের নেই।
এফআইআর-এ ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিস কর্মী জানিয়েছেন গজেন্দ্র সিংয়ের আত্মহত্যা আটকাতে যাওয়ার প্রতিটা পদে আপ কর্মীরা তাঁকে বাধা দিয়েছিলেন। গাছে ওঠা থেকে শুরু করে কাপড় বেঁধে ডালে ঝুলে পড়া পর্যন্ত, গজেন্দ্রের আশেপাশে তাঁকে যেতে দেওয়া হয়নি। এফআইআর-এর বয়ান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
”ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিস কর্মীরা কন্ট্রোলরুমে ফোন করে দ্রুত মই আনার অনুরোধ জানিয়ে ছিলেন, যাতে ওই কৃষককে নামিয়ে আনা যায়। ওই জনসভায় উপস্থিত অনেকে গজেন্দ্রকে লাগাতার প্ররোচনা দিয়ে যাচ্ছিল। দিল্লি পুলিস তাদের থামানোর যথাসাধ্য চেষ্টা করে। কিন্তু থামার বদলে গলা ফাটিয়ে, হাততালি দিয়ে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছিল রাজস্থানের ওই কৃষককে। আজ সংসদে জানান রাজনাথ সিং।
ওই পুলিসকর্মী তাঁর বয়ানে জানিয়েছেন ”১২টা ৫০ নাগাদ ওই ব্যক্তিকে গাছে চড়তে দেখে আমি কন্ট্রোল রুমে ফোন করি। হাতজোড় করে আপ কর্মীদের ওনাকে উৎসাহ যোগাতে বারণ করি। অনুরোধ করি ওনাকে নামিয়ে আনার। কিন্তু মঞ্চে উপস্থিত আপ নেতা বা আপ কর্মীরা, কেউই সাহায্য করতে এগিয়ে আসেননি।”
গতকাল, দিল্লিতে আপের জনসভায় আত্মহত্যা করলেন এক কৃষক। রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। কাল জমি বিলের বিরুদ্ধে যন্তর-মন্তরে আপের সভা চলছিল। তখনই গাছ থেকে ঝুলে পড়েন গজেন্দ্র নামে রাজস্থানের দৌসার ওই কৃষক। মৃত্যুর আগে লেখা চিঠিতে ফসলের ক্ষতির কথা জানিয়েছেন তিনি।
আপের এই মিছিলে ওড়িশা, পঞ্জাব, উত্তর প্রদেশ, গুজরাত, কর্ণাটক, অন্ধ্র প্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, হরিয়ানা এবং রাজস্থান থেকে কৃষকরা যোগ দিয়েছিলেন। সেই মিছিল নিয়ে সংসদ পর্যন্ত যাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল আপের পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে। তথ্য- জি নিউজ।

FacebookTwitterGoogle+Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*