আপডেট প্রতিনিধি, আগরতলা, ০৩ ফেব্রুয়ারী || ত্রিপুরার রেল যোগাযোগে যুক্ত হল আরও একটি অত্যাধুনিক পরিষেবা। দেশের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ত্রিপুরা সহ সমগ্র উত্তর পূর্বাঞ্চলে রেল পরিষেবায় প্রতিনিয়তই বাড়ছে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য। এরই অঙ্গ হিসাবে শনিবার (৩রা ফেব্রুয়ারী, ২০২৪) সন্ধ্যায় আগরতলা রেলস্টেশন থেকে আধুনিক এল এইচ বি রেক সহ আগরতলা-দেওঘর এক্সপ্রেস ট্রেনের সূচনা করা হয়। এদিন সবুজ পতাকা নেড়ে এই রেলের যাত্রা শুরুর সবুজ সংকেত দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা।
১৫৬২৬/১৫৬২৫ আগরতলা-দেওঘর-আগরতলা এক্সপ্রেস ট্রেনটি বর্তমানে আগরতলা এবং দেওঘরের মধ্যে পুরাতন ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি (আই সি এফ) কোচ নিয়ে যাতায়াত করছে। বর্তমানে এটিকে যাত্রী সুবিধাযুক্ত আধুনিক ‘লিংক হফম্যান বুশ’ (এল এইচ বি) কোচে রূপান্তরিত করা হচ্ছে। হাইব্রিড এল এইচ বি কোচ হল ভারতীয় রেলওয়ে দ্বারা ব্যবহৃত এক ধরণের উন্নত যাত্রীবাহী কোচ। যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের কথা বিবেচনা করে ভারতীয় রেল এই আধুনিক ‘লিংক হফম্যান বুশ’ (এল এইচ বি) কোচ সংযোজন করছে। এতে একদিকে যেমন রেল যাত্রীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে, তেমনি যাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি আরও অধিক সুরক্ষিত ও আরামদায়ক হবে। এই ‘লিংক হফম্যান বুশ’ (এল এইচ বি) কোচে অগ্নিপ্রতিরোধক ব্যবস্থা যেমন আধুনিক মানের রয়েছে, তেমনি আগের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি (আই সি এফ) কোচ থেকে যাত্রী পরিষেবা আরো উন্নততর রয়েছে। এই এল এইচ বি ডিজাইনের কোচগুলিতে পাওয়ার ভ্যান কাম গার্ড ভ্যান, প্যান্টিকার রয়েছে। এসি থ্রি-টায়ারসহ ও জেনারেল ক্লাসেও যাত্রী সংখ্যাও বৃদ্ধি পাবে।
বর্তমানে এই ট্রেনটি আগরতলা স্টেশন থেকে প্রতি শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় দেওঘরের উদ্দেশ্যে রওনা হবে। মোট ১৪৭২ কিমি দীর্ঘ পথ ৩৫ ঘন্টায় অতিক্রম করবে। আগরতলা থেকে রওনা হয়ে ট্রেনটি প্রথমে তেলিয়ামুড়া, আমবাসা, ধর্মনগর, বদরপুর জংশন, নিউ-হাফলং, লামডিং জংশন, চাপারমুখ, গুয়াহাটি, কামাখ্যা, রঙিয়া, নিউবঙ্গাইগাঁও জংশন, নিউকোচবিহার, নিউ জলপাইগুড়ি জংশন, কাটিহার, নৌগাছিয়া, মুঙ্গের, ভাগলপুর জংশন ও বাঙ্কা হয়ে দেওঘর জংশনে পৌঁছাবে।
ভারতীয় রেল রেলযাত্রীদের সুবিধা, নিরাপত্তা এবং ভ্রমণ পরিষেবাকে আরামদায়ক করতে নিরবচ্ছিন্ন প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে নতুন আধুনিক সুবিধাযুক্ত ‘লিংক হফম্যান বুশ’ (এলএইচবি) কোচের সংযোজন রেল পরিষেবার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ২০১৪ সালের ২৬শে মে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নরেন্দ্র মোদী দায়িত্বভার গ্রহণের পর ত্রিপুরা সহ সমগ্র উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার সার্বিক উন্নতিসাধিত হয়েছে। রাজ্যের উন্নয়নের ক্ষেত্রেও এক অভূতপূর্ব পরিবর্তন ঘটেছে। বিশেষ করে রেল, সড়ক ও বিমান পরিষেবা এই সময়কালের মধ্যে অতি দ্রুত সম্প্রসারিত হয়েছে। স্বাধীনতার দীর্ঘকাল পরেও তা সম্ভব হয়নি। এটা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজীর ‘লুক ইষ্ট’ নীতিরই একটি ধারাবাহিক সুফল।
উল্লেখ্য, বহিঃরাজ্যের সাথে বর্তমানে
রাজ্যের সংযোগকারী ট্রেনের সংখ্যা ১৩টি, মোট লোকাল ট্রেনের সংখ্যা ৫টি।
আগরতলা-আখাউড়া রেল সংযোগ প্রকল্পটির কাজ প্রায় শেষের পথে। ইতিমধ্যেই গত ১লা নভেম্বর, ২০২৩ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়াল মোডে পণ্যবাহী ট্রেনের ট্রায়াল রানের সূচনা করেন। ঐ দিন আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের গঙ্গাসাগর থেকে ভারতের নিশ্চিন্তপুর স্টেশন পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ে পণ্যবাহী/মালবাহী ট্রেনের ট্রায়াল রান সম্পন্ন হয়। ১১ই জানুয়ারি ২০২৪, রাজ্যের অভ্যন্তরে নিশ্চিন্তপুর স্টেশন থেকে আগরতলা স্টেশন পর্যন্ত এই পণ্যবাহী ট্রেনের ট্রায়াল সম্পন্ন হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, দুই দেশের মধ্যে সংযোগকারী এইরুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল ব্যবস্থা শীঘ্রই চালু করা সম্ভব হবে।